চার বছর পর টেস্ট একাদশে ফেরা বাঁ-হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক ও তাইজুলের ঘুর্ণিতে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনেই সফররত শ্রীলঙ্কাকে ২২২ রানেই গুড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। দু’জনই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চারটি করে উইকেট শিকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্বান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। দু’টি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে তারা। দু’টি পরিবর্তন ছিল বাংলাদেশেরও।
চট্টগ্রাম টেস্টের একাদশ থেকে বাদ পড়েন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও সানজামুল ইসলাম। তাদের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পান সাব্বির রহমান ও অভিজ্ঞ আব্দুর রাজ্জাক। চার বছর পর আবারও দেশের জাতীয় দলের হয়ে সাদা পোশাকে টেস্ট খেলতে নামেন রাজ্জাক।
দীর্ঘদিন পর সুযোগ পেয়েই দ্বিতীয় বোলার হিসেবে আক্রমণে নামেন রাজ্জাক। ইনিংসের শুরুটা করেছিলেন অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। প্রথম ৩ ওভারে ৯ রান দেন তিনি। আর নিজের প্রথম ২ ওভারে ৫ রান দেন রাজ্জাক। তবে দীর্ঘদিন পর ফিরে আসাটাকে বড়সড়ভাবে উদযাপন করতে সময়ক্ষেপণ করেননি রাজ্জাক।
নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম ডেলিভারিতেই উইকেট পেয়ে যান রাজ্জাক। শ্রীলঙ্কার ওপেনার দিমুথ করুনারত্নকে ঘুর্ণির ফাঁদে ফেলে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান রাজ্জাক। উইকেটের পেছনে স্ট্যাম্প হবার আগে ৩ রান করেন করুনারত্নে।
দ্রুতই শ্রীলঙ্কার প্রথম উইকেট তুলে নেয়া বাংলাদেশকে পরবর্তীতে ঝেঁকে বসতে দেননি সফরকারীদের দুই ব্যাটসম্যান ওপেনার কুশল মেন্ডিস ও ধনানঞ্জয়া ডি সিলভা। পাল্টা আক্রমণ করে বসেন মেন্ডিস-ডি সিলভা। তবে দলের স্কোর ৫০ পার করার পর গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু এনে দেন তাইজুল।
২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩০ বলে ১৯ রান করা ডি সিলভাকে থামান তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৮ বলে ৪৭ রান করেন মেন্ডিস-ডি সিলভা জুটি।
৬১ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর আবারও বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করে শ্রীলঙ্কা। তবে মেন্ডিসকে সঙ্গী করে দানুস্কা গুনাথিলাকা বেশি দূর যেতে পারেননি। তাদের জুটি ভাঙেন সেই রাজ্জাক। ওভারের দ্বিতীয় আঘাতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান মেন্ডিস-গুনাথিলাকা। ১৩ রান করে ফিরে যেতে গুনাথিলাকাকে।
এরপর ক্রিজে আসা শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমালকে প্রথম ডেলিভারিতেই বোকা বানিয়ে দেন রাজ্জাক। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে চান্ডিমালের উইকেট উপড়ে ফেলেন রাজ্জাক। ফলে ১ বল মোকাবেলা করে শূন্য হাতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন লঙ্কান দলপতি।
হ্যাট্টিকের সম্ভাবনা জাগে রাজ্জাকের। তবে হ্যাট্টিকের স্বাদ নিতে পারেননি। তাতে কী? তৃতীয় উইকেট শিকারের কিছুক্ষণ পর শ্রীলঙ্কার শিবিরে আবারও আঘাত হানেন রাজ্জাক। উইকেটে সেট হয়ে স্বাচ্ছেন্দ্যে ব্যাট করা ওপেনার মেন্ডিসকে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে থামিয়ে দেন বাংলাদেশের এ অভিজ্ঞ স্পিনার।
চান্ডিমালের মত মেন্ডিসকেও বোল্ড করেন রাজ্জাক। টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ফিরেন তিনি। ১০টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯৮ বলে ৬৮ রান করেন মেন্ডিস। দীর্ঘ চার বছর পর একাদশে ফিরে নিজের জানানটা ভালোই দিনে আব্দুর রাজ্জাক।
রাজ্জাকের সাথে তাল মিলিয়ে অপর প্রান্ত দিয়ে পরের ওভারেই শ্রীলঙ্কার আরও একটি উইকেট তুলে নেন তাইজুল। ১ রান করা শ্রীলঙ্কার উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকবেলাকে বোল্ড করেন তাইজুলও। সেও তুলে নেন শ্রীলঙ্কার ৪টি উইকেট। বাকি দুটি উইকেটে ভাগ বসান কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ।