ক্রাইস্টচার্চে মাত্র আড়াই দিনেই টেস্ট হারল ভারত । এর আগে ১ম টেস্টে ১০ উইকেটে হারে কোহলিরা । ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে হারার মাধ্যমে ১৮ বছর পর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো ভারত । টি- টুয়েন্টি সিরিজে কিউইদের ধবল ধোলাই করার পর ওয়ানডে সিরিজ হারে ভারত ।
টানা দুই সিরিজ হারার পর স্বস্তিতে নেই কোহলিরা। হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পরও ভালোভাবেই সংবাদ সম্মেলন সামলাচ্ছিলেন কোহলি।ম্যাচ শেষে কিউইদের কাছে হারার ব্যাপারটা সহজেই মেনে নিয়েছেন কোহলি। কিন্তু যখনই এক সাংবাদিক মাঠে বাজে ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন করেন, তখনি ক্ষেপে গেলেন কোহলি।
ঘটনাটা ঘটে কিউইদের প্রথম ইনিংসে। কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন আউট হওয়ার পর তাকে দৃষ্টিকটুভাবে বিদায়ের ইঙ্গিত দেন কোহলি এবং পরে কিউই সমর্থকদের একটি গ্রুপকে উদ্দেশ করে অশ্লীল বাক্যও ছুঁড়ে দেন। ঐ মুহূর্তের ভিডিও এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। ভিডিওতে স্বাগতিক দর্শকদের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ থাকার ইঙ্গিত দেওয়ার পাশাপাশি তাকে গালি দিতে দেখা যায়।
কোহলির ওই আচরণের ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ তোলেনি আম্পায়ার কিংবা নিউজিল্যান্ডের কোন ক্রিকেটার। তবে সংবাদ সম্মেলনে ঠিকই বিষয়টা তুলে ধরেন এক সাংবাদিক। কিন্তু প্রশ্ন শুনে কোহলি রেগে গিয়ে ওই সাংবাদিককে বলেন ‘না জেনে’ এ ধরনের প্রশ্ন করবেন না। কথোপথনটি নিচে তুলে ধরা হলো-
জনৈক সাংবাদিক: বিরাট, মাঠে আপনার ব্যবহার যেমন উইলিয়ামসন (কিউই অধিনায়ক) যখন আউট হলেন এবং দর্শকদের উদ্দেশে অশালীন ও ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ করা, এসব নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কি?
কোহলি: আপনার কি মনে হয়?
সাংবাদিক: প্রশ্নটা আমি আপনাকে করেছি?
কোহলি: উত্তরটা আপনার কাছ থেকে জানতে চাচ্ছি।
সাংবাদিক: আপনার আরও ভালো উদাহরণ স্থাপন করা উচিৎ।
কোহলি: আপনাকে যা হয়েছে সেটা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে এবং এরপর আরও ভালো প্রশ্ন নিয়ে আসতে হবে। আপনি এখানে অর্ধেক প্রশ্ন আর অর্ধেক যা হয়েছে তার বর্ণনা নিয়ে আসতে পারেন না এবং আপনি যদি বিতর্ক সৃষ্টি করতে চান তাহলে এটা সঠিক জায়গা নয়। আমি ম্যাচ রেফারির সঙ্গে কথা বলেছি। যা হয়েছে সেটাকে তিনি কোনো ইস্যু হিসেবে ধরছেন না। ধন্যবাদ।’
ভারত হেরে গেলে সংবাদ সম্মেলনে কোহলির মেজাজ হারানোর ইতিহাস অবশ্য নতুন কিছু নয়। সর্বশেষ এমন ঘটনা ঘটেছিল ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারার পর।
সেবার এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, ‘গত ১৫ বছরের মধ্যে সেরা ভারত দল? এই উপাধিগুলো কি আপনাদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে? আপনি কি সত্যিই বিশ্বাস করেন যে আপনার দল ১৫ বছরের মধ্যে সেরা ভারতীয় দল?’
জবাবে রেগে গিয়ে কোহলি বলেন, ‘আমরা সেরা দল এটা আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। কেন নয়?’
ওই সাংবাদিক আবার প্রশ্ন করেন, ’১৫ বছরের মধ্যে সেরা?’
জবাবে প্রশ্নটি উল্টো সাংবাদিকের উদ্দেশেই করেন কোহলি এবং ওই সাংবাদিক বলেন, ‘আমি নিশ্চিত নই।’
এরপর কোহলি বলেন, ‘আপনি নিশ্চিত নন? এটা আপনার মতামত। ধন্যবাদ।’ এর মাধ্যমে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের সমাপ্তি ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে কোহলির মেজাজ হারানোর ঘটনা আরও আছে। তবে মাঠে তার বাজে আচরণের অসংখ্য উদাহরণ আছে । অথচ তিনিই আবার আইসিসি’র ‘স্পিরিট অব ক্রিকেট’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আর এজন্যই তাকে নিয়ে অনেকে সমালোচনায় করছেন।