ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে সেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার শান মাসুদ ও বাবর আজম। মাসুদ ও বাবরের জোড়া সেঞ্চুরিতে বড় লিডের পথে পাকিস্তান।
দ্বিতীয় দিন (শনিবার) শেষে ৩ উইকেটে ৩৪২ রান করেছে পাকিস্তান। ফলে ৭ উইকেট নিয়ে ১০৯ রানে এগিয়ে পাকিস্তান। মাসুদ ১০০ রানে থামলেও ১৪৩ রানে অপরাজিত আছেন বাবর। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম দিন অলআউট হয় সফরকারী বাংলাদেশ। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮২ দশমিক ৫ ওভার খেলে ২৩৩ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন। আলো স্বল্পতার কারণে দিনের শেষ ভাগে আর ব্যাট করতে নামেনি পাকিস্তান।
প্রথম দিন বাংলাদেশকে অলআউট করায় ব্যাট হাতে নামার সুযোগ ছিল পাকিস্তানের। কারণ দিনের ৭ ওভার খেলা বাকি ছিল কিন্তু আলো স্বল্পতার কারণে প্রথম দিন ব্যাট হাতে মাঠে নামতে পারেনি পাকিস্তান। দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে স্বাগতিকরা।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে ওপেনার আবিদ আলিকে হারায় পাকিস্তান। আবিদকে শূন্য রানে বিদায় দেন নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বল করা বাংলাদেশের পেসার আবু জায়েদ। উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দেন আবিদ।
দলীয় ২ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার শান মাসুদ ও অধিনায়ক আজহার আলি। দ্রুত উইকেটের সাথে মানিয়ে নিয়ে বাংলাদেশ বোলারদের বিপক্ষে রানের চাকা ঘুড়াতে থাকেন মাসুদ ও আজহার। বড় হতে থাকে পাকিস্তানের স্কোর। কিন্তু মধ্যাহ্ন-বিরতির আগে বিচ্ছিন্ন হন মাসুদ ও আজহার। এবারও বাংলাদেশ দলকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন আবু জায়েদ।
জায়েদের বলে স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ৩৪ রানে আউট হন আজহার। ৫৯ বলে ৪টি চার মারেন আজহার। দ্বিতীয় উইকেটে ৯১ রান যোগ করেন মাসুদ ও আজহার।
আজহারের আউটের পরই ২ উইকেটে ৯৫ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় পাকিস্তান। ততক্ষণে সপ্তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন মাসুদ। তার সঙ্গী ছিলেন বাবর আজম।
দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ বোলারদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেন মাসুদ ও বাবর। এতে দলের স্কোর দুইশ পেরিয়ে যায়। তবে ব্যক্তিগত ৮২ রানে জীবন পেয়ে যান মাসুদ। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেও তার বুঝতে পারেননি লিটন। ৫৩তম ওভারের পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মাসুদ।
১৫৬ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি। সেঞ্চুরি করার পরের ওভারেই আউট হন মাসুদ। চা-বিরতির আগে মাসুদকে বোল্ড করেন বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ১৬০ বলে ১১টি চারে ১০০ রান করেন মাসুদ।
মাসুদকে হারিয়ে ৩ উইকেটে ২০৬ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় পাকিস্তান। এরপর ব্যাট হাতে পাকিস্তানের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন বাবর। তার সঙ্গী ছিলেন আসাদ শফিক। তবে বাবর ২ রানেই থেমে যেতে পারতেন। মধ্যাহ্ন-বিরতির পর উইকেট ছেড়ে তাইজুল ইসলামকে লং অফ দিয়ে বল সীমানা ছাড়া করতে চেয়েছিলেন বাবর। কিন্তু ব্যাট-বলের যোগাযোগটা ভালো না হওয়ায় বল আকাশে উঠে যায়। লং-অফে ক্যাচটা নিতে পারেননি এবাদত হোসেন।
জীবন পেয়ে ১৩৪ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বাবর। সেঞ্চুরির পরও নিজের ইনিংস বড় করেছেন বাবর। তার সাথে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন আসাদ। দিনের শেষে ৮৩ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৭তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আসাদ। দিন শেষে নিজেদের ব্যাটিং নৈপুন্যে বজায় রেখে অবিচ্ছিন্ন থাকেন বাবর-আসাদ। ২০৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৩৭ রান যোগ করেন তারা।
১৯২ বলে ১৯টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ১৪৩ রান করেন বাবর। ১১১ বলে ৮টি চারে ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন আসাদ। বাংলাদেশের জায়েদ ৬৬ রানে ২ উইকেট নেন। তাইজুল ১১১ রানে নেন ১ উইকেট।