স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ইনিংস ও ১৩০ রানের ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এবার নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচেও ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা পড়েছে।
পাঁচদিনের টেস্ট ম্যাচে দ্বিতীয় দিন শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান সংগ্রহ করেছে। যেখানে ভারতের প্রথম ইনিংসের ৯ উইকেট হারিয়ে ইনিংস ঘোষণায় লিড নেওয়া ২৪১ রানের মধ্যে এখনো ৮৯ রান পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। হাতে রয়েছে মাত্র ৪টি উইকেট।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিবা-রাত্রির ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন অথিনায়ক মমিনুল হক। তবে ব্যাট হাতে চরম বিপর্যয়ে পড়ে গোলাপী বলে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা বাংলাদেশ। দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচ হলেও দিনের আলো থাকতেই মাত্র ১০৬ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়ে যায় মমিনুলের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ টেস্ট দল।
বাংলাদেশের দুই কান্ডারি মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তৃতীয় দিনে ম্যাচ নিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করেন। ফলে ৬ উইকেটে ১৫২ রান তুলে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। তবে ইনিংস হারের মুখেই রয়েছে টাইগাররা। ইনিংস হার এড়াতে বাকি ৪ উইকেটে আরও ৮৯ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় দিন শেষে মাহমুদউল্লাহ ৩৯ রানে আহত অবসর নিলেও ৫৯ রানে অপরাজিত আছেন মুশফিক।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ দল মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে প্রথম দিনই বড় লিডের আভাস দিয়েছিল ভারত। ৩ উইকেটে ১৭৪ রান তুলে ৬৮ রানে এগিয়ে ছিল টিম ইন্ডিয়া।
দ্বিতীয় দিনেও শুরু থেকে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২২তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন রাহানে। সেঞ্চুরির পথে হাটছিলেন কোহলি। তবে দলীয় ২৩৬ রানে সাজঘরে ফেরেন রাহানে।
সতীর্থকে হারানোর কিছুক্ষণ পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৭তম সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি। কোহলির সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ২৮৯ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় ভারত। এ অবস্থায় ভারতের লিড ছিল ১৮৩ রান।
বিরতি থেকে ফিরে দ্বিতীয় সেশনের দ্বিতীয় বলেই রবীন্দ্র জাদেজাকে বিদায় দেন আবু জায়েদ। তবে লিডকে দ্রুত বাড়িয়ে নিতে মারমুখী হয়ে উঠেন কোহলি। ৭১তম ওভারে বাংলাদেশের পেসার এবাদতকে প্রথম চার বলেই বাউন্ডারি মারেন কোহলি। ওই ওভার থেকে ১৯ রান তুলেন তিনি।
তবে কোহলিকে ১৩৬ রানে থামিয়ে দেন এবাদতই। অবশ্য কোহলিকে ফেরাতে বড় ভূমিকা রাখেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ‘কনকাশন সাব’ তাইজুল। ভারতের ইনিংসের ৮১তম ওভারে বাংলাদেশের পেসার এবাদতের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে তাইজুলের অবিশ্বাস্য ক্যাচে আউট হন কোহলি। আউট হওয়ার আগে ১৯৪ বলে ১৮টি চারে নিজের দুর্দান্ত ইনিংসটি সাজান কোহলি।
কোহলিকে তুলে নিয়ে ভারতের রানের লাগাম টেনে ধরার পথ পায় বাংলাদেশের বোলাররা। এরপরই ভারতের লোয়ার-অর্ডারে ধস নামান আল-আমিন ও আবু জায়েদ। রবীচন্দ্রন অশ্বিন ৯, উমেশ যাদব-ইশান্ত শর্মা শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরেন।
দলীয় ৩৩১ রানে নবম উইকেট পতনের পর উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহা ও মোহাম্মদ সামি ১৬ রান দেন দলকে। ৯০তম ওভারের চতুর্থ বলের পরই ৯ উইকেটে ৩৪৭ রান তুলে নিজেদের ইনিংস ঘোষণা করে দেয় ভারত। সাহা ১৭ ও সামি ৫ বলে অপরাজিত ১০ রান করেন। বাংলাদেশের আল-আমিন ও এবাদত ৩টি করে, আবু জায়েদ ২টি এবং তাইজুল ১টি উইকেট নেন।