২২ নভেম্বর (শুক্রবার) থেকে ইডেন গার্ডেন্সে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। টেস্ট ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিতে যাচ্ছে এ ম্যাচটি। কারণ, প্রথমবারের মত দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলতে যাচ্ছে দু’দল।
দিবা-রাত্রির এ টেস্টকে সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মঞ্চ বলে জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি। কলকাতা টেস্টের পিচ পরিদর্শন শেষে গোলাপি বলের টেস্ট নিয়ে গাঙ্গুলি বলেন, ‘এবারের ইডেন টেস্ট একটা বড় পরীক্ষা। কারণ, এটা উপমহাদেশের প্রথম দিন-রাত্রির টেস্ট।’
২০১৫ সালে প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়। অথচ এখন পর্যন্ত দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলেনি ভারত। দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশেরও। তাই বিসিসিআই’র সভাপতির দায়িত্ব নিয়েই ক্রিকেটের প্রতি নিজের ভালোবাসা-আগ্রহ উজার করে দিচ্ছেন গাঙ্গুলি।
কলকাতায় বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট হওয়ায়, সেখান থেকে বড় ফরম্যাটে নতুনভাবে ভারতের পথচলা শুরুর উদ্যেগ নেন গাঙ্গুলি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাথে আলাপ-আলোচনা করে কলকাতার টেস্টকে দিবা-রাত্রিতে আয়োজনের সিদ্বান্ত নেন তিনি।
গাঙ্গুলি বলেন, কোনও একটা জায়গা থেকে তো শুরু করতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটকে পুনরুজ্জীবিত করতে এ পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল। পুরো বিশ্বেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভারতে ক্রিকেট নিয়ে উন্মাদনা সব চেয়ে বেশি। ফলে এ পরিবর্তন প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল।
দিবা-রাত্রির টেস্টকে নিয়ে ব্যাপক আয়োজন করছে গাঙ্গুলির নেতৃত্বাধীন বিসিসিআই ও দ্য ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি)। দিবা-রাত্রির টেস্ট দেখতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ আরও অনেককে।
ইডেনের বেল বাজিয়ে টেস্টের উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের সকল খেলোয়াড়দেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেখানে খেলোয়াড়দের সংবর্ধিত করবে সিএবি।
কলকাতা টেস্টটি ভারত ও বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক হতে যাচ্ছে এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই টেস্টের সবকিছুতেই দেখভাল করছেন গাঙ্গুলি। কোন ধরনের পিচে খেলা হচ্ছে, সেটিও নিজে পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি।
পিচ পর্যবেক্ষণ করে গাঙ্গুলি বলেন, সব কিছু ঠিকঠাকই এগোচ্ছে। সারা জীবন যে কাজই করেছি, সেখানে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
এদিকে, কলকাতা টেস্ট নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমিদের আগ্রহের শেষ নেই। ইতোমধ্যে অনলাইনে প্রথম তিন দিনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। আর রোববার থেকে গাঙ্গুলির হাত ধরে গোলাপি বলে ঐতিহাসিক টেস্টের টিকিট বন্টন শুরু হয়েছে। সিএবি-তে হাজির হওয়া ১২ জন খুদে ক্রিকেটপ্রেমীর হাতে এ ম্যাচের টিকিট তুলে দেন সৌরভ গাঙ্গুলি।
সিএবি জানিয়েছে, স্টেডিয়ামের কাউন্টারে টিকিটের সন্ধানে এসে বিক্ষোভ করেছে ক্রিকেটপ্রেমিরা। এ ব্যাপারে গাঙ্গুলিকে জানানো হলে তিনি বলেন, ক্রিকেটপ্রেমীদের কথা ভেবে খারাপ লাগছে। কিন্তু টিকিট যদি বিক্রি হয়ে যায়, তা হলে তো আসন সংখ্যা বাড়ানো যাবে না! তবে টেস্ট শুরুর আগেই প্রথম তিন দিনের টিকিট সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে। শুনে খুবই ভালোই লাগছে।