ভারতের ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ডাবল-সেঞ্চুরিতে ভর করে দ্বিতীয় দিনেই ৩৪৩ রানের লিড নেয় ভারত। দেখার বিষয় ছিল কোথায় গিয়ে থামে স্বাগতিকরা। তবে তৃতীয় আর ব্যাট হাতে নামেনি ভারত। ৩৪৩ লিডেই ইনিংস ঘোষণা করেছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ডাবল-সেঞ্চুরিতে ইন্দোরে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই ব্যাকফুটে চলে গেছে সফরকারী বাংলাদেশ। আগাওয়ালের ২৪৩ রানের সুবাদে দ্বিতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ৪৯৩ রান করে ভারত। ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৪৩ রানে এগিয়ে থাকা ভারত তৃতীয় দিন ইনিংস ঘোষণা করলো।
ভারত ইনিংস ঘোষণা করার ব্যাট হাতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। টাইগার দলের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিক ও ইমরুল কায়েস।ইন্দোরের হলকার স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে প্রথম দিনেই ১৫০ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশকে অলআউট করে নিজেদের ইনিংস শুরু করে প্রথম দিন শেষে ১ উইকেটে ৮৬ রান করে টিম ইন্ডিয়া। দ্বিতীয় দিনের দশম ও ১১তম বলে বাংলাদেশের পেসার আবু জায়েদের বলে পরপর দু’টি বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৩তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন পূজারা। হাফ-সেঞ্চুরির পর পূজারাকে থামিয়ে দেন জায়েদ। ৯টি চারে ৭২ বলে ৫৪ রান করেন পূজারা। আগারওয়ালের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ৯১ রান যোগ করেছিলেন পূজারা।
পূজারাকে ফেরানোর পরের ওভারে কোহলির বিপক্ষে বল করার সুযোগ পান জায়েদ। নিজের প্রথম ডেলিভারিতেই কোহলিকে পরাস্ত করেন জায়েদ। ২ বলে শূন্য হাতে সাজঘরে ফিরেন কোহলি।
১১৯ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে কোহলির বিদায়ে কিছুটা চাপ অনুভব করে ভারত। কিন্তু ভারতকে সেই চাপ থেকে মুক্ত করেন আগারওয়াল ও আজিঙ্কা রাহানে। প্রথম সেশনে আর কোন উইকেট না রাহিয়ে লিড নিয়ে ৩ উইকেটে ১৮৮ রান তুলে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় ভারত।
বিরতি থেকে ফিরে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ নেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। ১৮৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ভারতের এ ডান-হাতি ওপেনার। দ্বিতীয় সেশনেও কোন উইকেট হারায়নি ভারত। ফলে ৩ উইকেটে ৩০৩ রান তুলে চা-বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
আবারও বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হন জায়েদ। সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকা রাহানেকে নিজের চতুর্থ শিকার বানান জায়েদ। রাহানে ফিরে যাওয়ার পর আগারওয়ালকে দারুণ সঙ্গ দেন রবীন্দ্র জাদেজা। শেষ পর্যন্ত ৯৯তম ওভারে বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে ছক্কা মেরে ডাবল-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আগারওয়াল।
৩০৩ বলে ডাবল-সেঞ্চুরিতে পা দিয়ে নিজের ইনিংস বড় করতে থাকেন আগারওয়াল। প্রথমবারের মত আড়াইশ রানের দিকে ছুটছিলেন তিনি। তবে তার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান মিরাজ। সুইপ করে মিড উইকেটে বাংলাদেশের সফল বোলার জায়েদকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আগারওয়াল।
২৮টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৩৩০ বলে ২৪৩ রান করেন আগারওয়াল। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটিই তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। জাদেজার সাথেও পঞ্চম উইকেটে শতরানের জুটি গড়েন আগারওয়াল, ১২৩ রানের জুটি।
দলীয় ৪৫৪ রানে আগারওয়াল ফিরে যাওয়ার পর দিনের বাকি সময়ে ভারতের হাল ধরেন জাদেজা ও উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহা। তবে দিনের খেলা শেষ হওয়ার ১৯ বল আগে সাহাকে বিদায় দেন বাংলাদেশের আরেক পেসার এবাদত হোসেন।
ক্রিজে যান উমেশ যাদব। ব্যাট হাতে স্ট্রাইকে গিয়ে ভয়ঙ্কর রূপ দেখান বোলার উমেশ। বাংলাদেশের দুই পেসার জায়েদ ও এবাদতকে তিনটি ছক্কা মারেন উমেশ। এছাড়াও ১টি চার ছিল তার উইলোতে। জায়েদকে ১টি করে চার-ছক্কা ও এবাদতকে ২টি ছক্কা মারেন উমেশ। শেষ পর্যন্ত জাদেজা-উমেশ অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেন।
জাদেজা ১৪তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৬০ রানে ও উমেশ ১০ বলে ২৫ রানে অপরাজিত আছেন। জাদেজা ৭৬ বলের ইনিংসে ৬টি চার ও ২টি ছক্কা হাকান। বাংলাদেশের জায়েদ ১০৮ রানে ৪, এবাদত-মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস) : ১৫০/১০, ৫৮.৩ ওভার (মুশফিক ৪৩, মমিনুল ৩৭, লিটন ২১, মিঠুন ১৩, মাহমুদুউল্লাহ ১০; সামি ৩/২৭, ইশান্ত ২/২০, অশ্বিন ২/৪৩, উমেশ ২/৪৭)
ভারত (প্রথম ইনিংস) : ৪৯৩/৬ ডি, ১১৪ ওভার (আগারওয়াল ২৪৩, রাহানে ৮৬, জাদেজা ৬০*, পূজারা ৫৪, আবু জায়েদ ৪/১০৮)।