ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে ছিটকে পড়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মমিনুল হক। প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানেই সবক’টি উইকেট হারিয়ে ফেলেছে তারা।
জবাবে প্রথম দিন শেষে ভারত এক উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান সংগ্রহ করেছে। অর্থাৎ প্রথম দিনের খেলা শেষে ৯ উইকেট হাতে রেখে বাংলাদেশের চেয়ে মাত্র ৬৪ রানে পিছিয়ে রয়েছে ভারত। ফলে ধারণা করা হচ্ছে বিশ্বমানের লাইনআপ নিয়ে গড়া স্বাগতিক ভারতীয় দলকে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং করতে নাও নামতে হতে পারে।
যেখানে স্বাগতিক দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেছেন, প্রথম দিন বোলিং সহায়ক হলেও ইন্দোরের এ পিচ ঐতিহ্যগতভাবেই দ্বিতীয় দিন থেকে ব্যাটিং সহায়ক হয়ে পড়ে। ফলে বাজে সময় অপেক্ষা করছে সফরকারীদের জন্য।
এদিকে প্রথম দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশ দলে অধিনায়ক মমিনুল হক বলেন, বাস্তবিক অর্থে আমরা ভারতের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছি। প্রথম ইনিংস থেকে মাত্র ১৫০ রান সংগ্রহ করার পর ঘুরে দাঁড়ানো বেশ কঠিন হবে। আপনি যতই ইতিবাচক খেলা খেলুন না কেন, এ ঘাটতি পূরণ করা খুবই কঠিন হবে। ইতোমধ্যে তারা মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান সংগ্রহ করে ফেলেছে। এখন আমরা যদি ম্যাচের ভবিষ্যতের দিকে তাকাই তাহলে আমার মনে হয় আমরা অনেকটাই পিছিয়ে আছি।
মমিনুল বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং। আর ভারতের মাটিতে তাদের মোকাবেলা করাটা আরও কঠিন। আমার মনে হয় আমাদেরকে মানসিকভাবে দৃঢ় থাকতে হবে। আর সেটিই হবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের মোকাবেলা করার একমাত্র উপায়।
টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তকটিও ভুল ছিল বলেই মনে করছেন মমিনুল। জানতেন ইন্দোরের পিচের প্রথম দিনের সুবিধা ফাস্ট বোলাররা কাজে লাগাবে।
বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, আপনি যখন এমন ব্যাটিং বিপর্যায়ে পড়বেন তখন টসের বিষয়টি আসবেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এটিও ছিল আমার ভুল সিদ্ধান্ত। এটিকে আমার ভুলই মনে হয়েছে। যদিও শেষদিকে আমি ও মুশফিকুর রহিম উইকেট থেকে বেশ ভালো সহযোগিতাই পেয়েছি। লিটনও উইকেটে মানিয়ে নিয়েছিলেন। এখানেও আমার ভুল ছিল। ওই সময় যদি আমি আউট না হতাম, তাহলে হয়তো আমরা বড় একটি স্কোর গড়তে পারতাম।
মাত্র ৩১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর মমিনুল সতীর্থ মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ৬৮ রানের পার্টনারশীপ গড়ে তুলেছিলেন। টাইগার অধিনায়ক বলেন, এ সময় উইকেট খারাপ ছিল না। খেলার বেশ উপযোগী ছিল। আমরা যাদের মোকাবেলা করছি তারা বিশ্বের এক নম্বর দল। আপনি যখন তাদের বিপক্ষে খেলতে যাবেন, তখন মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে। অথচ আমরা এলবির ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরেছি। আমার মনে হয় নিজেদের মনোযোগেও যথেষ্ট ঘাটতি ছিল।
অনুশীলনের ঘাটতির কারণেই এমন ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটেছে কি না -সে বিষয়টি অবশ্য খুঁজে বের করতে পারেননি মমিনুল। তিনি বলেন, আমার মনে হয় পর্যাপ্ত অনুশীলন হয়েছে। কারণ এখানে আসার আগে আমরা এনসিএল খেলেছি। তবে হ্যাঁ, সেখানে এখানকার মত বোলারদের মোকাবেলা করতে হয়নি। কৌশলগতভাবে ফিট না থাকলে এমন বোলারদের আপনি যেভাবে ইচ্ছে খেলতে পারবেন না। আপনাকে মানসিভাবে সুদৃঢ় হতে হবে।
ম্যাচে ভারতীয় বোলাররা যখন পিচের সেরা সুবিধাগুলো আদায় করছিল, তখন বাংলাদেশের পেস বোলার আবু জায়েদ রাহিকে দেখা গেল খোলসবন্দি। তবে মমিনুল তাকে সমর্থন দিয়ে বলেন, ওই রকম অভিজ্ঞ হতে তাকে আরও শেখার সময় দিতে হবে। তারা মাত্র ৫/৬টি ম্যাচ খেলেছে। সুতরাং তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। মানিয়ে নেওয়ার জন্য তাদেরকে আরও সময় দিতে হবে।