বাংলাদেশের বিপক্ষে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ঐতিহাসিক দিবা-রাত্রির টেস্টকে ঘিরে ভারতের আয়োজনের যেন হচ্ছে না। দুই দলেরই প্রথমবারের মতো দিবা-রাত্রির এ টেস্টের জন্য ৭২টি গোলাপী বলে অর্ডার দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ক্রিকেট সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসজি এসব বল সরবরাহ করবে।
২২ নভেম্বর কলকাতার ইডেন গার্ডেনে প্রথমবারের মত দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলতে নামে ভারত ও সফরকারী বাংলাদেশ। দিবা-রাত্রির এ আয়োজনে বিসিসিআই দেয়া প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দিয়েছে বিসিবি। এরপরই ঐতিহাসিক এ ম্যাচ আয়োজনে বিভিন্ন পরিকল্পনা শুরু করে ভারতীয় বোর্ড।
বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, দিবা-রাত্রির টেস্টে এসজি বলই ব্যবহার করা হবে। সৌরভ ও বোর্ডের ইচ্ছা যথা সম্ভব নিখুঁতভাবে টেস্ট ম্যাচটি হোক। রাতের ম্যাচের জন্য বল এবং পিচ দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোন রকম ঝুঁকি না নিয়ে বেশি বল আনিয়ে রাখা হচ্ছে।
তবে এসজি বল নিয়ে কিছুটা সংশয় আছে ক্রিকেট মহলে। কারণ, এর আগে এ সংস্থার বলে দিবা-রাত্রির ম্যাচ হয়নি। প্রতিযোগিতামূলক কোন ম্যাচে এসজির বল ব্যবহৃত না হওয়ায় কিছুটা হলে চিন্তায় থাকবে আয়োজকরা। এর আগে ভারতের ঘরোয়া দুলিপ ট্রফিতে তিন মৌসুম কোকাবুরার বল ব্যবহৃত হয়েছিল। সে পরীক্ষায় খুব একটা সাড়া মেলেনি। এ বছর থেকে দুলিপ ট্রফিতে ফের লাল বলের ব্যবহার শুরু হয়েছে।
এসজি কোম্পানির সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ডিরেক্টর পরশ আনন্দ জানিয়েছেন, ‘বিসিসিআই ছয় ডজন (৭২টি) বলের অর্ডার দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে আমাদের বলই ব্যবহার করা হয়েছিল। যদিও সেগুলো ছিল লাল বল। তবে বলের গুণগত মানের অনেক উন্নতি হয়েছে।’
এসজি বলে ভারতীয় ক্রিকেটাররা খুব বেশি সন্তষ্ট নয়। অধিনায়ক বিরাট কোহলি এ বলের সমালোচনা করে এক সময় বলেছিলেন, ‘এসজি বলের পলিম এবং কার্যকারিতা ডিউকস বা কোকাবুরা বলের চেয়ে খারাপ।’ ইংল্যান্ড- অস্ট্রেলিয়ায় কোকাবুরা বল ব্যবহার করা হয়। তবে এসজি বলের গুণগত মানের উন্নতি হয়ে স্বীকার করে কোহলি আরও বলেন, ‘টেস্টে অন্তত ৬০ ওভার পর্যন্ত বলগুলো টেকা দরকার।’
তবে ঐতিহাসিক দিবা-রাত্রির এ টেস্টের জন্য উপযুক্ত বল সরবরাহ করা হবে নিশ্চিত করে এসজি কোম্পানির এক শীর্ষ কর্তা বলেছেন, ‘গত সপ্তাহেই আমাদের বলা হয়েছে। আমরা প্রস্তুত। ২০১৬-১৭ মৌসুম থেকেই আমরা ভালো গোলাপি বল তৈরির চেষ্টা করছি।’
লাল বলের চেয়ে গোলাপী বলে ধুলো বেশি জড়ানোর সম্ভাবনা থাকায় দ্রুত এটা নোংড়া হয়ে যেতে পারে। তখন বলের রং কালচে হয়ে গিয়ে দেখতে অসুবিধা হতে পারে। তবে সে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে সংস্থার কর্তারা।
২২ নভেম্বর ইডেনে শুরু হওয়া এ ম্যাচে আরেকটা সমস্যা হতে পারে, তা হলো শিশির। তবে শিশির মোকাবেলায় বিশেষ স্প্রে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে সিএবির। শিশিরের পরিমাণ কমানোর জন্য যা যা করা দরকার সব করা হবে।
এছাড়া ঐতিহাসিক এ দিবা-রাত্রির টেস্টে হেলিকপ্টার থেকে আবির ছড়িয়ে শুরু করা হবে। সিরিজের ট্রফি নামানোও হতে পারে হেলিকপ্টার থেকে। ঐতিহাসিক ম্যাচটিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।