প্রথম ইনিংসে আফগানিস্তানের করা ৩৪২ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ১৪৮ রান পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
১৩০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফলোঅনের শঙ্কায় পড়েছিল টাইগাররা। সেটি অবশ্য হয়নি। তবে দ্বিতীয় দিন শেষে হাতে মাত্র ২ উইকেট নিয়ে ১৪৮ রান পিছিয়ে রয়েছে সাকিবরা। ব্যাট হাতে মোসাদ্দেক হোসেন ৩৭ এবং তাইজুল ইসলাম ১০ রানে অপরাজিত আছেন।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ওপেনার রহমত শাহ’র ১০২ ও আসগর আফগানের অপরাজিত ৮৮ রানের সুবাদে প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে ২৭১ রান করেছিল আফগানিস্তান। দ্বিতীয় দিন রশিদের নৈপুন্যে ৩৪২ রানের ভালো সংগ্রহ পায় তারা। বাংলাদেশের পক্ষে তাইজুল ইসলাম ৪টি, সাকিব আল হাসান-নাইম হাসান ২টি করে এবং মেহেদী হাসান মিরাজ-মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১টি করে উইকেট নেন।
নিজেদের ইনিংসের শুরুতেই উইকেট হারায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ বলে উইকেট পতনের তালিকায় নাম লেখান ওপেনার সাদমান ইসলাম। ৪ বলে শূন্য রানে ফিরেন সাদমান ইসলাম।
সাদমানের আউটের পর ক্রিজে আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারের সঙ্গী হন লিটন দাস। পরবর্তীতে সর্তকতার সাথে খেলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান সৌম্য-লিটন। এ সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪ ওভারে ১ উইকেটে ১ রান। সৌম্য শূন্য ও লিটন ১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
মধ্যাহ্ন-বিরতি শেষে ব্যাট হাতে ভালোই খেলছিলেন সৌম্য-লিটন। রানের চাকা সচল করেছিলেন তারা। বড় হচ্ছিল বাংলাদেশের স্কোর। এমন সময় বাংলাদেশ শিবিরে আঘাত হানেন আফগানিস্তানের স্পিনার মোহাম্মদ নবী। ১৭ রান করা সৌম্যকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন।
সৌম্যর সঙ্গী লিটন নিজের ইনিংসটা বড় করছিলেন। কিন্তু লিটনকে বেশি দূর যেতে দিলেন না রশিদ খান। ৩৩ রানে থাকা লিটনের উইকেট উপড়ে ফেলেন রশিদ।
দলীয় ৫৪ রানে লিটনের বিদায়ের পর সাকিবকে নিয়ে দলের হাল ধরেন চার নম্বরে খেলতে নামা মোমিনুল হক। আফগানিস্তানের বোলারদের সামলে রয়েসয়ে এগোচ্ছিলেন তারা। এতে এ জুটিতে শতরানে পৌঁছানোর পথে হাটতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু আবারও বড় জুটি গড়ার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান আফগান অধিনায়ক রশিদ।
সাকিবকে শিকার করে মোমিনুলের সাথে ৩৪ রানের জুটি ভাঙেন রশিদ। ১১ রান করে লেগ বিফোর হন সাকিব। দলীয় ৮৮ রানে সাকিবের আউটের পর ১০৪ রানের মধ্যে আরও দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
দু’টিই ছিল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মিডল-অর্ডারের প্রধান দুই ভরসা মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাকিবের মত মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকেও শিকার করেন রশিদ। মুশফিক রানের খাতা খুলতেই পারেননি। আর মাহমুদউল্লাহ করেন ৭ রান। তাই ১০৪ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারাতে হয় বাংলাদেশ। এ অবস্থায় পুরো ব্যাকফুটে চলে যায় টাইগাররা।
তারপরও আশার আলো জ্বলে ছিল মোমিনুল ক্রিজে থাকায়। কিন্তু হাফ-সেঞ্চুরির পর এলোমেলো হয়ে গেলেন মোমিনুল। নামের পাশে ৫২ রান রেখে নবীর বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলেন তিনি। তার ৭১ বলের ইনিংসে ৮টি চারের মার ছিল।
মোমিনুলের পর বিদায় নেন টেল-এন্ডার পজিশনে ভালো ব্যাট করতে পারা মিরাজ। তবে প্রয়োজনীয় সময় ১১ রানেই থেমে যান মিরাজ। ফলে ১৪৬ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ইনিংস গুটিয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশের সামনে।
তবে ওপরের সারির ব্যাটসম্যানরা যা পারেননি, তা শেষ বিকেলে করে দেখান মোসাদ্দেক হোসেন ও তাইজুল ইসলাম। আফগানিস্তানের স্পিনারদের সামাল দিয়ে উইকেটের সাথে সন্ধি করে তারা। ফলে দিন শেষে অবিচ্ছিন্ন থেকে যান।
নবম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৪৮ রান তুলে দিন শেষ করেন তারা। মোসাদ্দেক ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৪ বলে ৪৪ ও তাইজুল ২টি চারে ৫৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত আছেন। আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ ৪৭ রানে ৪ উইকেট। নবী ৫৩ বলে ২ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান : ৩৪২/১০, ১১৭ ওভার (রহমত ১০২, আসগর ৯২, তাইজুল ৪/১১৬)
বাংলাদেশ : ১৯৪/৮, ৬৭ ওভার (মোমিনুল ৫২, মোসাদ্দেক ৪৪*, রশিদ ৪/৪৭)।