উসমান খাজার বিশাল সেঞ্চুরিতে অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টেও তৃতীয় দিন শেষে সিডনিতে ১৩৩ রানের লিড নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
১৭১ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে খাজা ছিলেন দিনের সর্বোচ্চ স্কোরার। এছাড়া আগের দিন ৪৪ রানে অপরাজিত থাকা অসি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ থেমেছেন ৮৩ রানে। শন মার্শ ক্রিজে রয়েছেন ৯৮ রান নিয়ে। ব্যাটসম্যানদের এমন পারফরমেন্সে চতুর্থ দিনেও সিডনির ৪০ ডিগ্রীর সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রচন্ড গরমে অস্ট্রেলিয়া ব্যাট হাতে কোথায় গিয়ে থামে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ইতোমধ্যেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে অ্যাশেজ সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। গত সপ্তাহে মেলবোর্ন টেস্ট ড্র হওয়ায় সিডনিতে এ পর্যন্ত পারফরমেন্সে জয়ের আশা করতেই পারে স্বাগতিকরা। তৃতীয় দিন শেষে দুই ভাই শন মার্শ ও মিশেল মার্শের অপরাজিত ১০৪ রানের পার্টনারশীপে অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেটে ৪৭৯ রান সংগ্রহ করেছে। মিশেল মার্শ মঈন আলী তিন বলে দুটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৮৭ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত আছেন। শেষ ওভারে অবশ্য তিনি এলবিডব্লিউর আবেদন থেকে বেঁচে যান।
অ্যাশেজ সিরিজে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিসহ ১৭১ রানের ইনিংসে খাজা ৫১৫ মিনিটে ৩৮১টি বল খেলেছেন। এর মধ্যে ছিল ১৮টি বাউন্ডারি ও ৬টি ওভার বাউন্ডারি। তবে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত খাজার এটি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ও সিডনিতে প্রথম সেঞ্চুরি। এ সিরিজে আগের ম্যাচগুলোতে মাত্র দুটি হাফ-সেঞ্চুরি পাবার পরে সাবেক অনেক খেলোয়াড়ই খাজাকে বাদ দেবার ব্যপারে মত দিয়েছিল। এর আগে ২০১৫ সালে ব্রিসবেনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ১৭৪ রানের টেস্ট ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন খাজা।
অভিষিক্ত ম্যানস ক্রেনের বলে খাজার দুর্দান্ত ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। জনি বেয়ারস্টোর স্টাপ্রিয়ের সহায়তায় ক্রেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট উইকেট তুলে নেন। এর আগে দিনের শুরুতে খাজা যখন ১৩২ রানে ক্রিজে ছিলেন তখন হ্যাম্পশায়ারের এই লেগ স্পিনারের বলে স্পষ্ট এলবিডব্লিউ হলেও নো বলের কারণে তা বাতিল হয়ে যায়।
৯০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে ক্রেন (২০) ইংল্যান্ড টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছেন। চ্যালেঞ্জিং দিনটি ক্রেন ৩৯ ওভারে ১৩৫ রানের বিনিময়ে ১ উইকেট নিয়ে শেষ করেছেন।
সিরিজের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন শন মার্শ। জো রুটের বলে তিনি ২২ রানে রিভিউর সহায়তা জীবন ফিরে পান। এর আগে মধ্যাহ্ন বিরতির আগে স্মিথের উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ড দিনের একমাত্র সফলতা দেখিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান এই অধিনায়ককে আলী নিজের বলে নিজেই ক্যাচে পরিণত করেছেন। সকালের পুরো সেশনটাই বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেছেন স্মিথ। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে তিনি ২৫৩ মিনিট ক্রিজে থেকে ১৫৮ বল মোকাবেলা করেছেন।
স্মিথ ও খাজা মিলে ১৮৮ রানের পার্টনারশীপ গড়ে তুলেন। এই রানেই মূলত অস্ট্রেলিয়ার বড় স্কোরের ভিত রচিত হয়। পুরো সিরিজেই স্মিথ সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মূলত তার ব্যাটিংই দুই দলের মধ্যে পার্থ্যক্য গড়ে দিয়েছে। চার ম্যাচে ৬৮৭ ১৩৭.৪০ গড়ে ৬৮৭ রান সংগ্রহ করেছেন স্মিথ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ রান ছিল ২৩৯ যা তার ক্যারিয়ার সেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : প্রথম ইনিংস ৩৪৬ (রুট ৮৩, মালান ৬২: কামিন্স ৪-৮০)
অস্ট্রেলিয়া : প্রথম ইনিংস (আগেরদিন ১৯৩-২) ৪ উইকটে ৪৭৯ (খাজা ১৭১, শন মার্শ ৯৮*, মিশেল মার্শ ৬৩*. স্মিথ ৮৩ : এন্ডারসন ১-৫২, ব্রড ১-৭০, আলী ১-১২৫ ক্রেন ১-১৩৫)।