২০১৮ সাল টেস্ট রেকর্ডে বাংলাদেশের ছিল চমৎকার একটি বছর। গেল বছরে টেস্টে টাইগারদের হার জিত ছিল সমানে সমান।
২০১৮ তে আট ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশের তিনটিতে জয় এবং একটি ড্র। আর চার ম্যাচে হার। তবে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে পদার্পণের ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় জয়টা এ বছরই পেয়েছে টাইগাররা। টেস্টে এই বছরে চার সিরিজে অংশ নিয়ে জয় মাত্র একটিতে। এ ছাড়া একটি সিরিজ ড্র। বাকি দুই সিরিজেই হার।
সাদা পোশাকে বছরের শুরুর দিকে ভালো না কাটলেও শেষটা দুর্দান্ত করেছে বাংলাদেশ। শেষ তিন ম্যাচেই জয়। শেষ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে টেস্টে উজ্জীবিত টাইগাররা। আর শেষ জয়টাও এসেছে ইনিংস ব্যবধানে (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ইনিংস ও ১৮৪ রানে জয়)। টেস্টের ইতিহাসে এটিই বাংলাদেশের সেরা জয়।
অপরদিকে, টেস্টে সবচেয়ে বড় লজ্জাও এ বছরই পেয়েছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টাইগাররা মাত্র ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ নিম্ন রানের নতুন লজ্জা। তা ছাড়া ২০১৮ সালেও টেস্টে সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর এটি। তিন ফরম্যাট টেস্ট, ওয়ানডে, টি-২০ মিলেই বাংলাদেশের দলীয় সর্বনিম্ন স্কোর এই ৪৩!
এ ছাড়া এই বছরে আরেকটি লজ্জা আছে টাইগারদের, ঘরের মাঠ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অভিষেক টেস্টে জিম্বাবুয়ের মতো দলের কাছে হেরেছে স্বাগতিকরা।
এবছর দলীয়ের চেয়ে ব্যাক্তিগত ভাবে টাইগাররা পারর্ফম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। বছরের প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে মমিনুল দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন। প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে করেছিলেন ১০৫ রান। এ ছাড়া এ বছর আরও দুটি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। এটি জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ঢাকা টেস্টে ১৬১, আরেকটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ১২০। সব মিলে ২০১৮ সালে আট ম্যাচে ৪৪.৮৬ গড়ে ৬৭৩ রান করেছেন মুমিনুল। চারটি সেঞ্চুরি। এ বছর বাংলাদেশি এই তারকা ব্যাটসম্যানের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে কেবল ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলির (৫টি)। তবে কোহলি যেখানে ২৪ ইনিংস ব্যাটিং করেছেন সেখানে মুমিনুল খেলার সুযোগ পেয়েছেন ১৫ ইনিংস। এই বছরে বিশ্বে সেরা ১০ রান সংগ্রাহক ব্যাটসম্যানের তালিকায় বাংলাদেশের এই লিটল মাস্টারের অবস্থান আট নম্বরে।
টেস্টে টাইগার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মুশফিকুর রহিম। দুর্দান্ত একটি ডাবল সেঞ্চুরিও আছে মিস্টার ডিপেন্ডেবলের। তার অপরাজিত ২১৯ রানের ইনিংস চলতি বছরে টেস্টের (সব দেশ মিলে) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। সপ্তাহ দুয়েক আগে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান টপ লাথাম ২৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে সর্বোচ্চ স্কোরের মালিক হয়েছেন। তা না হলে মুশফিকের ইনিংসটিই সেরা হয়ে থাকত। তবে এ বছরে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরিই হয়েছে মাত্র দুটি। আট ম্যাচে মুশফিকের মোট রান ৪৯০। গড় ৩৫। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৩৯.৬৬ গড়ে করেছেন ৪৭৬ রান। দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে একটি হাফ সেঞ্চুরি। মিডল অর্ডারে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন টাইগার-ক্রিকেটের এই ‘বিপদের বন্ধু’!
চলতি বছরে বিশ্ব ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি সেরা ১০ বোলারের তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম (সপ্তম) ও মেহেদী হাসান মিরাজ (নবম)। টাইগার বোলারদের মধ্যেও তো তারাই সেরা। তাইজুল ৭ ম্যাচে নিয়েছেন ৪৩ উইকেট ও মিরাজ ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ৪১ উইকেট। এ বছরই এক ম্যাচে ১২ উইকেট শিকারের অনন্য কৃতিত্ব অর্জন করেছেন মিরাজ। এর আগে এমন রেকর্ড আছে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তাইজুল ও এনামুল হক জুনিয়রের।
ভিডিও: