সিলেটের অভিষেক টেস্টে আইসিসি টেস্ট র্যাংকিংয়ের সর্বশেষ দল জিম্বাবুয়ের কাছে হারের লজ্জা পেয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফলে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে ২ রেটিং সংগ্রহে থাকা জিম্বাবুয়ে।
সিরিজ হার এড়াতে ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টে জয় ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই ৬৭ রেটিং নিয়ে টেস্ট র্যাংকিংয়ে নবম স্থানে থাকা বাংলাদেশের। ফলে যে কোনভাবেই ঢাকা টেস্টে জিততে চান বাংলাদেশের ব্যাটিং অলরাউন্ডার আরিফুল হক।
শুক্রবার ঢাকা টেস্ট নিয়ে সাংবাদিকদের আরিফুল বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য বাঁচা-মরার ম্যাচ। যেভাবেই হোক দ্বিতীয় টেস্টে আমাদের জিততেই হবে।’
সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে লড়াইয়ে ছিটেফটাও দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। সাড়ে তিন দিনেই শেষ হয়ে যাওয়া ম্যাচে ১৫১ রানে জয় পায় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ও নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ বড় জয় জিম্বাবুয়ের।
বাজেভাবে টেস্ট হারলেও দলের সবাই ইতিবাচক আছে বলে মনে করেন আরিফুল। বলেন, ‘কোনো চাপ নেই আমাদের। আমাদের আসল বোলার মোস্তাফিজুর প্রথম টেস্টে খেলেনি। সে ফিরলে আমরা জিততে পারব। ইতিবাচক আছি আমরা।’
সিলেট টেস্টের স্মৃতি ভুলে ঢাকার ম্যাচ নিয়েই বেশি ভাবতে চান আরিফুল। দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে জয় পাওয়া অসম্ভব কিছু নয় বলেও মনে করেন আরিফুল। বলেন, ‘আমরা শেষ ম্যাচটা নিয়ে যদি চিন্তা করি তবে মানসিকভাবে দুর্বল থাকব। আমরা ঐ ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করব না। ম্যাচ, বল-টু-বল নিয়ে ফোকাস করব। দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী সবাই খেলতে পারলে এবং ইতিবাচকভাবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে পারলে ম্যাচ জেতা কঠিন হবে না।’
সিলেটের ম্যাচ দিয়ে টেস্ট অভিষেক হয়েছে আরিফুলের। দলের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় টেস্টটি হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তবে এই ব্যর্থতার মাঝে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন আরিফুল। দুই ইনিংসে অপরাজিত ৪১ ও ৩৮ রান করেন তিনি। প্রথম ইনিংসের দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ও পরের ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন আরিফুল।
অভিষেক টেস্টে দল হারলেও নিজেদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে বলে জানান আরিফুল, ‘প্রথম টেস্ট ভালোই গিয়েছে আসলে। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বোলাররা বাজে বল দেবে না, আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। খেললে যে চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন আসে, সেটা আমার হয়েছে। আমার চিন্তা-ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে।’
দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলের সাথে আছেন আরিফুল। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে ১টি করে টেস্ট ও ওয়ানডে এবং ৬টি টি-টোয়েন্টি। না খেললেও দলের সাথে থাকলে অভিজ্ঞতা বাড়ে বলে জানান আরিফুল।
বলেন, ‘এটা সত্যি, যদি নাও খেলেন তবে জাতীয় দলে থাকলে অভিজ্ঞতা অর্জন হয়। বড় দলের সাথে খেলা বা বড় বড় খেলোয়াড়দের সাথে ড্রেসিংরুম শেয়ার করা এটাতে বুঝতে অনেক সুবিধা হয়। বড় ভাইরা যখন কিছু বলেন সেটা কাজে দেয়। ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ কেমন বা কী রকম।’
টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার আগে জাতীয় ক্রিকেট লিগে ২শ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন আরিফুল। ঐ ইনিংসটি ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে অনেক বেশি কাজে দিয়েছে বলে মনে করেন আরিফুল, ‘অবশ্যই কাজে দিয়েছে। এনসিএলে দু’শ মারার পর আসলে আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। তাই প্রথম টেস্টটাতে হয়তো ব্যাটিং ভালো করেছি। এখন আত্মবিশ্বাস ভালো আছে।’
টেস্ট অভিষেক হওয়াতে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে আরিফুলের। তবে তিন ফরম্যাটেই দলের হয়ে মাঠে নামতে চান তিনি, ‘আমার স্বপ্ন ছিল টেস্ট খেলার। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি চাই দীর্ঘদিন টেস্ট খেলতে বা জাতীয় দলে থাকতে। সব ফরম্যাটেই খেলার ইচ্ছা আছে। আমার চাওয়া হলো, যে ফরম্যাটে যেভাবে দরকার, সেভাবেই খেলব।’
আগামী ১১ নভেম্বর থেকে ঢাকায় শুরু হবে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।