চার ব্যাটার সাদমান ইসলাম, মমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের হাফ-সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন নিজেদের করে রাখলো সফরকারী বাংলাদেশ। দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩১৬ রান।
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। জবাবে তৃতীয় দিন শেষে ৯২ ওভারে ৫ উইকেটে ৩১৬ রান করেছে বাংলাদেশ। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে এখনও ১৩২ রানে পিছিয়ে টাইগাররা।
দ্বিতীয় দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে বিনা উইকেটে ২৭ রান করেছিল বাংলাদেশ। সাদমান ১২ ও জাকির হাসান ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন। তৃতীয় দিন বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনার সাদমান ৯৩ এবং মমিনুল ৫০ রানে আউট হলেও মুশফিকুর ৫৫ ও লিটন ৫২ রানে অপরাজিত আছেন।
দিনের পঞ্চম ওভারে পাকিস্তানী পেসার নাসিম শাহর বলে বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে জাকিরের দুর্দান্ত ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান। ১টি চারে ৫৮ বলে ১২ রান করেন জাকির। তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
পাকিস্তানের আরেক পেসার খুররাম শাহজাদের ডেলিভারি শান্তর ব্যাট ও প্যাডের মাঝ দিয়ে স্টাম্পে আঘাত হানে। ৪২ বলে ২টি চারে ১৬ রান করে আউট হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫৩ রানে ২ উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন সাদমান ও মমিনুল।
পাকিস্তান বোলারদের বিপক্ষে স্বাচ্ছেন্দ্যে খেলে দলের রান ১শ পার করেন তারা। প্রথম সেশনের শেষ বলে চার মেরে ১৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন সাদমান। এসময় বাংলাদেশের রান ছিলো ২ উইকেটে ১৩৪। সাদমান ৫৩ ও মমিনুল ৪৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বিরতির পর টেস্টে ১৯তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মমিনুল। তবে ৫০ রানেই শাহজাদের বলে বোল্ড হন মমিনুল। তার ৭৬ বলের ইনিংসে ৫টি চার ছিলো। তৃতীয় উইকেটে সাদমান-মমিনুল ৯৪ রান যোগ করেন।
দলীয় ১৪৭ রানে মোমিনুল ফেরার পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন সাদমান ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। তবে ব্যক্তিগত ৫৭ রানে জীবন পান সাদমান। ইনিংসের ৫৫তম ওভারে স্পিনার আগা সালমানের বলে লেগ বিফোর আউট হন সাদমান। এরপর রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি।
জীবন পেয়ে ইনিংস বড় করেছেন সাদমান। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে যান তিনি। কিন্তু পেসার মোহাম্মদ আলির বলে বিদায় নেন সাদমান। বোল্ড হবার আগে ১২টি চারে ১৮৩ বলে ৯৩ রান করেন সাদমান। প্রায় আড়াই বছর পর দলে ফিরে লড়াকু ইনিংস খেলেছেন তিনি। ২০২২ সালের মার্চে ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ খেলেছেন সাদমান।
সাদমান ফেরার পর ক্রিজে এসে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলেন সাকিব আল হাসান। ২টি চারে ১৫ বলে ১৫ রান তুলে খোশমেজাজেই ছিলেন তিনি। কিন্তু টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত বল করতে এসেই সাকিবের উইকেট তুলে নেন পাকিস্তানের সাইম আইয়ুব। ড্রাইভ শটে এক্সট্রা কাভারে পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদকে ক্যাচ দেন ১৫ রান করা সাকিব।
দলীয় ২১৮ রানে সাকিবের বিদায়ে ক্রিজে মুশফিকের সঙ্গী হন লিটন দাস। দারুন এক জুটিতে বাংলাদেশের রান ৩শ পার করেন দু’জনে। এরমধ্যে মুশফিক ২৮তম ও লিটন ১৭তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন। জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৯৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিনের খেলা শেষ করেন মুশফিক ও লিটন।
৭টি চারে মুশফিক ১২২ বলে ৫৫ এবং ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৮ বলে অনবদ্য ৫২ রান করেন লিটন। এই ইনিংস খেলার পথে তামিম ইকবালের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১৫ হাজার রানের মালিক হয়েছেন মুশফিক।
পাকিস্তানের শাহজাদ ২টি এবং নাসিম-আলি ও সাইম ১টি করে উইকেট নেন।