সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের সামনে বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ার পথেই হাঁটছে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৯ রানে লঙ্কানদের পাঁচ উইকেট তুলে নিলেও দ্বিতীয় দিন শেষে লিড দাঁড়িয়েছে ২১১ রান। ব্যাট হাতে অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ২৩ এবং বিশ্ব ফার্নান্দো ২ রানে অপরাজিত রয়েছে।
প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার করা ২৮০ রানের জবাবে বাংলাদেশ ১৮৮ রানে গুটিয়ে গেলে ৯২ রানের লিড পেয়েছিল সফরকারী শ্রীলঙ্কা টেস্ট দল। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার (২২ মার্চ) শুরু হওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনই শ্রীলঙ্কাকে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। জবাবে দিন শেষে ৩ উইকেটে ৩২ রান করেছিল টাইগাররা। মাহমুদুল হাসান জয় ৯ ও নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম শূণ্য হাতে অপরাজিত ছিলেন।
শনিবার (২৩ মার্চ) দ্বিতীয় দিন প্রথম ব্যাটার হিসেবে আউট হন জয়। শ্রীলঙ্কার পেসার লাহিরু কুমারার বলে তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ১২ রানে আউট হন জয়। ৩টি চারে ইনিংস শুরু করেও বেশি দূর যেতে পারেননি শাহাদাত হোসেন। কুমারার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ১৮ রানে থামেন শাহাদাত।
শাহাদাতের বিদায়ে ক্রিজে এসে ৪টি চারে বড় ইনিংসের আভাস দিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। তবে কুমারার হালকা ইন-সুইংয়ের ডেলিভারি সামলাতে না পেরে বোল্ড হন ২৫ রান করা লিটন।
দলীয় ১২৪ রানে লিটন ফিরলেও টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির পথে ছিলেন তাইজুল। তবে ৩ রান দূরে থাকতে কাসুন রাজিথার শিকার হন তিনি। ৮০ বল খেলে ৬টি চারে ক্যারিয়ার সেরা ৪৭ রান করেন তাইজুল।
তাইজুলের পর মেহেদি হাসান মিরাজকেও ১১ রানে থামিয়ে দেন রাজিথা। মিরাজের আউটে হলেও দেড়শর নীচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। তবে নবম উইকেটে শ্রীলঙ্কার বোলারদের উপর চড়াও হন দুই টেল-এন্ডার শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ। স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়ার করা ৪৭তম ওভারে শরিফুল ২টি ও খালেদ ১টি ছক্কায় ১৯ রান তুলেন। শরিফুল-খালেদের জমে যাওয়া জুটিতে ২শর পথে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ।
তবে শ্রীলঙ্কার মাথা ব্যাথার কারন হয়ে উঠা শরিফুল ও খালেদকে আউট করে ১৮৮ রানেই বাংলাদেশ ইনিংসের সমাপ্তি টানেন আগের দিন ২ উইকেট নেওয়া বিশ্ব ফার্নান্দো। শরিফুল ১৫ ও খালেদ ২২ রান করেন। শ্রীলঙ্কার তিন পেসার ফার্নান্দো ৪টি, কুমারা-রাজিথা ৩টি করে উইকেট নেন।
৯২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রথম বলেই উইকেট হারাতে পারতো শ্রীলঙ্কা। তবে রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ২১ বলের মধ্যে দুই রিভিউ শেষ করে ফেললেও ষষ্ঠ ওভারে প্রথম উইকেটের দেখা পায় টাইগাররা।
অভিষিক্ত পেসার নাহিদ রানার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ১০ রান করা নিশান মাদুশকা। তিন নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিসকে (৩) বাউন্সারে কুপোকাত করে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান রানা।
৩২ রানে ২ উইকেট পতনের পর আরেক ওপেনার দিমুথ করুনারত্নকে নিয়ে দলের রান ৫০ পার করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ১৮তম ওভারে প্রথম আক্রমণে এসে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার তাইজুল। কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন ২২ রান করা ম্যাথুউজ।
২০তম ওভারে প্রথম বোলিংয়ে এসে প্রথম ডেলিভারিতে চান্ডিমালের বিপক্ষে মিরাজ লেগ বিফোর আবেদন করলেও তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে চান্ডিমালকে খালি হাতে বিদায় করে বাংলাদেশ। ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা।
দলের এ অবস্থায় ৪৮ রানের জুটি গড়ে দলকে চাপমুক্ত করেন করুনারত্নে ও অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। এ জুটিতে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের ৩৬তম অর্ধশতক পূর্ণ করেন করুনারত্নে। হাফ-সেঞ্চুরির দু’বল পরই শরিফুলের বাউন্সারে পুল করে ডিপ ফাইন লেগে রানাকে ক্যাচ দেন ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০১ বলে ৫২ রান করা করুনারত্কনে।
রুনারত্নে ফেরার পর নাইটওয়াচম্যান ফার্নান্দোকে নিয়ে দিনের খেলার শেষ করেন ধনাঞ্জয়া। ফার্নান্দো ২ ও ধনাঞ্জয়া ২৩ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের রানা ২টি, শরিফুল-তাইজুল ও মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।