ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৭২ রানের জুটি গড়ে চতুর্থ টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতকে ৫ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন শুভমান গিল ও উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেল। এর আগে ১৯২ রানের টার্গেটে ৮৪ রানের সূচনার পর ৩৬ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের মধ্যে ছিটকে পড়েছিল স্বাগতিকরা।
ইংলিশদের বিপক্ষে এ জয়ে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে এক টেস্ট বাকি থাকতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো ভারত। একই সাথে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যাটট্টিক সিরিজ এবং টানা ১৭টি টেস্ট সিরিজ জয়ের নজির গড়লো ভারত।
ইংল্যান্ডের কাছে ২০১২ সালে ঘরের মাঠে ভারত সর্বশেষ সিরিজটি হেরেছিল। কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও অধিনায়ক বেন স্টোকস জুটি বাঁধার পর এই প্রথম সিরিজ এবং টানা তিন টেস্ট হারলো ইংল্যান্ড।
টেস্টের তৃতীয় দিন (রোববার) ভারতকে ১৯২ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দেয় ইংল্যান্ড। দিন শেষে বিনা উইকেটে ৪০ রান তুলে টিম ইন্ডিয়া। টেস্ট জিততে ১০ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ১৫২ রান করতে হতো ভারতকে।
চতুর্থ দিনের (সোমবার) শুরু থেকেই ইংল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন আগের দিন অপরাজিত থাকা দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও যশ^সী জয়সওয়াল। জুটিতে আরও ৪৪ রান যোগ হবার পর বিচ্ছিন্ন হন তারা।
দলীয় ৮৪ রানে ইংল্যান্ডের স্পিনার জো রুটের বলে কভার দিয়ে মারতে গিয়ে ব্যাক-ওয়ার্ড পয়েন্টে জেমস এন্ডারসনের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নেন ৫টি চারে ৩৭ রান করা জয়সওয়াল।
জয়সওয়াল ফেরার পর টেস্টে ১৭তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর ইনিংস বড় করতে পারেননি রোহিত। স্পিনার টম হার্টলির বলে উইকেট ছেড়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড আউট হন ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৮১ বলে ৫৫ রান করা রোহিত।
দলীয় ৯৯ রানে অধিনায়ককে হারানোর পর আবারও স্পিনার শোয়েব বশিরের ঘূর্ণিতে পড়ে ভারত। রজত পাতিদার-সরফরাজ খান শূণ্য এবং রবীন্দ্র জাদেজাকে ৪ রানে আউট করেন প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া বশির। তার বোলিং নৈপুন্যে ৫ উইকেটে ১২০ রানে পরিণত হয় ভারত।
এ অবস্থায় দলের হাল ধরেন গিল ও জুরেল। সতর্কতার সঙ্গে তারা ইংল্যান্ড বোলারদের সামলাতে শুরু করেন তারা। বড় শটের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে স্ট্রাইক বদলিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন গিল ও জুরেল। ১২২ বলে জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দু’জনে। ততক্ষণে ম্যাচ হাতের মুঠোয় চলে আসে ভারতের।
বশিরের করা ইনিংসের ৬০তম ওভারে দুই ছক্কা মেরে টেস্টে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান গিল। পরের ওভারে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন জুরেল। ২০১৩ সালের পর টেস্টে ১৫০ রানের বেশি টার্গেট তাড়া করে জয়ের দেখা পেল ভারত।
২টি ছক্কায় ১২৪ বলে গিল ৫২ এবং ২টি চারে ৭৭ বলে অনবদ্য ৩৯ রান করেন জুরেল। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানের লড়াকু ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন জুরেল। ইংল্যান্ডের বশির ৩ উইকেট নেন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই জয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয়স্থান মজবুত করলো ভারত। ৮ ম্যাচে ৫ জয় ও ২ হারে ৬৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ পয়েন্ট আছে টিম ইন্ডিয়ার।
৪ ম্যাচে ৭৫ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নিউজিল্যান্ড। ৯ ম্যাচে ১৯.৪৪ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে ৯ দলের টেবিলে অষ্টম স্থানে আছে ইংল্যান্ড। ২ ম্যাচে ৫০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে থাকলো বাংলাদেশ।