অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৯৬ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারী পাকিস্তানের। তবে শেষ উইকেটে দুই পেসার আমির জামাল ও মির হামজার ১৩৩ বলে ৮৬ রানের অবিশ্বাস্য জুটিতে সব উইকেট হারিয়ে ৩১৩ রানের সংগ্রহ পেয়েছে সফরকারীরা। জামালের ৮২ রানের পাশাপাশি মোহাম্মদ রিজওয়ান ৮৮ ও আঘা সালমান ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন। পাকিস্তানকে বিপক্ষে এ টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেছেন প্যাট কামিন্স।
পাকিস্তানকে গুটিয়ে দিয়ে প্রথম দিনেই ব্যাট করতে নেমে দিন শেষে বিনা উইকেটে ৬ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া। ফলে ১০ উইকেট হাতে নিয়ে ৩০৭ রানে পিছিয়ে অসিরা। এ ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ানোর টেস্টে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় পাকিস্তান। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে পাকিস্তানী ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে খালি হাতে বিদায় দেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্ক। অভিষেক হওয়া আরেক ওপেনার সাইম আইয়ুবকেও রানের খাতা খুলতে দেননি পেসার জশ হ্যাজেলউড। ফলে দলীয় ৪ রানে ২ ওপেনারের বিদায় ঘটে।
ওপেনিং জুটি হারানোর পর ব্যাট হাতে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক শান মাসুদ ও বাবর আজম। বড় জুটির আভাস দিয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি তারা। বাবরকে ২৬ রানে শিকার করে জুটি ভাঙেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। পাঁচ নম্বরে নামা সৌদ শাকিলকে ৫ রানে থামিয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেলেন কামিন্স। এতে ৪৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
দলের এ অবস্থায় পাকিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরাতে উইকেটরক্ষক রিজওয়ানকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন মাসুদ। সাবধানে খেলে দলের রান তিন অংকে নিয়ে যাওয়ার পথে ছিলেন তারা। তবে দলীয় ৯৬ রানে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে মাসুদকে আউট করে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল মার্শ। ৩টি চারে ৩৫ রান করেন সফরকারী অধিনায়ক। মাসুদের সাথে ৪৯ রানের জুটি গড়েন রিজওয়ান।
ষষ্ঠ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন রিজওয়ান ও সালমান। ওয়ানডে মেজাজে খেলে ১০১ বলে ৯৪ রানের জুটি গড়েন তারা। এ জুটি গড়তে গিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন নবম অর্ধশতকের স্বাদ নেওয়া রিজওয়ান। তবে কামিন্সের বলে হ্যাজেলউডকে ক্যাচ দিয়ে ৮৮ রানে আউট হলে রিজওয়ানের ১০৩ বল খেলে ১০টি চার ও ২টি ছক্কা হাকানো ইনিংসের মৃত্যু ঘটে।
দলীয় ১৯০ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে রিজওয়ান ফেরার পর বিরতি দিয়ে উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। এ সময় সালমান ৫৩, সাজিদ খান ১৫ ও হাসান শূন্যতে ফিরেন। ২২৭ রানে নবম উইকেট হারিয়ে দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে পাকিস্তান। তবে সেটি হতে দেননি জামাল। শেষ উইকেটে মির হামজাকে নিয়ে দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন তিনি। তাতেই এবারের সিরিজে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের দলীয় রান ৩শ স্পর্শ করতে পারে।
শেষ পর্যন্ত জামালকে শিকার করে ৩১৩ রানে পাকিস্তানের ইনিংস শেষ করেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার নাথান লিঁও। ৭১ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৮২ রানে থামেন জামাল। ৯৭ বল খেলে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন তিনি। ১টি চারে ৪৩ বলে ৭ রানে অপরাজিত থাকেন হামজা। শেষ উইকেটে ১৩৩ বলে ৮৬ রান যোগ করেন জামাল-হামজা জুটি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ উইকেটে পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে কামিন্স ৬১ রানে ৫ উইকেট নেন। এ নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১২তমবারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেটের পাশাপাশি টানা তিন ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারের নজিরও গড়েন তিনি।
পাকিস্তানের ইনিংস শেষে দিনের শেষভাগে ১ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পায় অস্ট্রেলিয়া। বিনা উইকেটে ৬ রান করেছে অসিরা। ১টি চারে ৬ বলে ৬ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন ওয়ার্নার। তবে কোন বল খেলার সুযোগ পাননি আরেক ওপেনার উসমান খাজা।