সিলেট টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েই খেলছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অপরাজিত সেঞ্চুরিতে তৃতীয় দিন শেষে ২০৫ রানের লিড নিয়েছে টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডকে গুটিয়ে দিয়ে ৬৮ ওভার ব্যাট করে ৩ উইকেটে ২১২ রান করেছে বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিন শেষে নাজমুল হোসেন শান্ত ১০৪ এবং মুশফিকুর রহিম ৪৩ রানে অপরাজিত রয়েছেন। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ২০৫ রানে এগিয়ে টাইগাররা। ১০৪ রানে অপরাজিত আছেন শান্ত। বাংলাদেশ প্রথম অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করলেন শান্ত। এর আগে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩১০ রানের জবাবে ৩১৭ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংস থেকে ৭ রানের লিড পায় কিউইরা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৮ উইকেটে ২৬৬ রান। ২ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৪ রানে পিছিয়ে ছিলো কিউইরা। কাইল জেমিসন ৭ ও অধিনায়ক টিম সাউদি ১ রানে অপরাজিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) নবম উইকেটে ১১০ বলে ৫২ রান তুলে নিউজিল্যান্ডকে লিড এনে দেন জেমিসন ও সাউদি।
১০২তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৩১৬ রানে জেমিসন-সাউদির জুটি ভাঙেন স্পিনার মমিনুল হক। ২৩ রান করা জেমিসনকে লেগ বিফোর আউট করেন তিনি। একই ওভারের পঞ্চম বলে সাউদিকে বোল্ড করে নিউজিল্যান্ডকে ৩১৭ রানে গুটিয়ে দেন মমিনুল। ৩৫ রান করেন সাউদি। ১ রানে অপরাজিত থাকেন শেষ ব্যাটার আজাজ প্যাটেল।
বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম ১০৯ রানে ৪টি এবং মোমিনুল ৩ দশমিক ৫ ওভার বল করে ক্যারিয়ার সেরা ৪ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া ১টি করে শিকার করেন শরিফুল ইসলাম-মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাইম হাসান।
প্রথম ইনিংসে ৭ রানে পিছিয়ে থেকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। টেস্ট মেজাজে খেলে ১২ ওভারে ২৩ রান তুলেন তারা। ১৩তম ওভারের প্রথম বলে জাকিরকে ১৭ রানে লেগ বিফোর আউট করেন নিউজিল্যান্ড স্পিনার প্যাটেল। রিভিউ না নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন জাকির।
পরের ওভারে দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের শিকার হন ইনিংসে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৬ রান করা জয়। শান্ত স্ট্রেইট ড্রাইভে হাত দিয়ে বল স্পর্শ করেন বোলার সাউদি। বল গিয়ে আঘাত করে নন স্ট্রাইক স্টাম্পে। তখন ক্রিজের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন জয়। থার্ড আম্পায়ারের সহায়তায় টিভি রিপ্লেতে রান আউট হন ৮ রান করা জয়।
২৬ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন শান্ত ও মোমিনুল। ৩২তম ওভারে বাংলাদেশের রান ১শতে নেন তারা। দু’জনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ২ উইকেটে ১১১ রান তুলে চা-বিরতিতে যায় টাইগাররা। তখন ১০৪ রানে এগিয়ে ছিলো বাংলাদেশ।
বিরতি থেকে ফেরার পরই ৯৫তম বলে চতুর্থ টেস্ট হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন শান্ত। বাংলাদেশের পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে অধিনায়কত্বের প্রথম টেস্টে হাফ-সেঞ্চুরি করলেন তিনি। এর আগে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও লিটন দাস অধিনায়ক হিসেবে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অর্ধশতক করেছিলেন।
শান্তর সাথে দারুণ খেলতে থাকা মমিনুলও বড় ইনিংসের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। কিন্তু শান্তর সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন মোমিনুল। ৪টি চারে ৬৮ বলে ৪০ রান করেন তিনি। শান্ত-মমিনুল জুটি ১৬১ বলে ৯০ রান যোগ করেন।
মমিনুলের বিদায়ে ক্রিজে শান্তর সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম। বড় জুটির লক্ষ্যে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন তারা। ৫৮তম ওভারে জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শান্ত ও মুশফিক। এরপর সেঞ্চুরি পেতে ধীরে- সুস্থে এগোতে থাকেন শান্ত। অবশেষে ৬৮তম ওভারে প্যাটেলের প্রথম বলে এক্সট্রা কভারে ঠেলে ১ রান নিয়ে ২৪তম টেস্টে পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত।
শান্তর সেঞ্চুরির পর ওভার শেষে দিনের খেলা সমাপ্তি ঘটে। বাউন্ডারি মেরে দিনের খেলা শেষ করেন শান্ত। ১০টি চারে ১৯৩ বলে অপরাজিত ১০৪ রান করেন টাইগার দলপতি। ৫টি চারে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। নিউজিল্যান্ডের প্যাটেল ৯৪ রানে ১ উইকেট নেন।