দুই ব্যাটার আব্দুল্লাহ শফিক, আগা সালমান এবং বাঁ-হাতি স্পিনার নোমান আলির বোলিং নৈপূণ্যে ২৯ বছর পর টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করলো পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের চতুর্থ দিন শ্রীলঙ্কাকে ইনিংস ও ২২২ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান।
লঙ্গার ভার্সন ক্রিকেটে লঙ্কানদের বিপক্ষে এটিই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় পাকিস্তানর। অন্যদিকে, ঘরের মাঠে এটি সবচেয়ে বড় লজ্জাজনক হার শ্রীলঙ্কার। সিরিজের প্রথম টেস্ট ৪ উইকেটে জিতেছিল পাকিস্তান। এতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতলো বাবরের দল। এর আগে ১৯৯৪ সালে সর্বশেষ শ্রীলঙ্কাকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল পাকিস্তান।
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ১৬৬ রানের জবাবে শফিকের ২০১, সালমানের অপরাজিত ১৩২ রানের সুবাদে তৃতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে ৫৬৩ রান করেছিল পাকিস্তান। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৯৭ রানে এগিয়ে ছিল পাকিস্তান। সালমানের সাথে ৩৭ রানে অপরাজিত ছিলেন কনকাশন সাব উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান।
চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবার সকালে মাত্র ২ ওভার খেলে ১৩ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। ৫ উইকেটে ৫৭৬ রানের পাহাড় গড়ে ৪১০ রানের লিড পায় সফরকারীরা। টেস্টে নবম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন রিজওয়ান। তার ৬৭ বলের ইনিংসে ৪টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল।
১৪৮ বল খেলে ১৫টি চার ও ১টি ছক্কায় অপরাজিত ১৩২ রান করেন সালমান। শ্রীলঙ্কার আসিথা ফার্নান্দো ৩টি ও প্রবাথ জয়সুরিয়ার ২টি উইকেট নেন।
৪১০ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ৬৯ রানের সূচান করে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার নিশান মদুশকা ও অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। ১৯তম ওভারে শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী জুটি ভাঙে নোমান। ৩৩ রান করা মদুশকাকে বোল্ড করেন নোমান।
শ্রীলঙ্কার রান তিন অংকে পা দেয়ার আগের আরও দুই উইকেট তুলে নেন নোমান। করুনারত্মকে ৪১ ও কুশল মেন্ডিসকে ১৪ রানে বিদায় করেন তিনি। এতে ৯৯ রানে ৩ উইকেট হারায় লঙ্কানরা।
এরপর শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডারে ধস নামা নোমান। ১৭৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ইনিংস হারের মুখে পড়ে লঙ্কানরা। দিনেশ চান্ডিমালকে ১, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ১০, সাদিরা সামাবিক্রমাকে ৫ ও রমেশ মেন্ডিসকে ১৬ রানে আউট করেন নোমান।
শ্রীলঙ্কার পতন হওয়া প্রথম ৭ উইকেটই শিকার করায় রেকর্ড বইয়ের নাম তোলার পথ তৈরি করেছিলেন নোমান। ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি। কিন্তু নোমানের স্বপ্ন চুরমান করে দেন পাকিস্তানের পেসার নাসিম শাহ।
শ্রীলঙ্কার শেষ ৩ উইকেট শিকার করেন নাসিম। এতে ১৮৮ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৭০ রানে ক্যারিয়ার সেরা ৭ উইকেট নেন নোমান। ১৫ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মত ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নেন নোমান। ৪৪ রানে ৩ উইকেট নেন নাসিম। ম্যাচ সেরা হন পাকিস্তানের শফিক ও সিরিজ সেরা হন সালমান।