দেশের হয়ে সর্বশেষ ২৬ ইনিংস আগে সেঞ্চুরি করেছিলেন টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মমিনুল হক। মাঝে তিন ইনিংসে করা ফিফটির দুটিতে সেঞ্চুরির কাছাকাছি গেলেও তিন অঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি তিনি। ব্যাট হাতে বাজে সময়ে ছাড়তে হয়েছিল নেতৃত্বও। দবে দীর্ঘ দিন পরে হলেও মমিনুলের ব্যাটে আবারও দেখা মিললো টেস্ট শতক।
মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে অপরাজিত ১২১ রানের ইনিংস খেলেছেন মমিনুল হক। তার এবং নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া সেঞ্চুরিতে সফরকারীদের বিপক্ষে ৬৬২ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ।
মমিনুলের মতো এক সময় কঠিন সময় পার করতে হয়েছে বর্তমান সময়ে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তকে। টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে সেই কঠিন সময়ের কিছুটা বর্ণনা দিয়েছেন এ টেস্টে শতক হাঁকানো মমিনুল।
লাল বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, “আমি নিজে এটা (বাজে ফর্ম) ফেস করছি। যার মধ্যে দিয়ে যায় সেই বোঝে, আমার সময় মনে হয়েছে পুরো পৃথিবী একদিকে, আর আমি আরেক দিকে।”
তিনি বলেন, “যার হয় সে ছাড়া কেউ বোঝে না, এর মধ্যে ঢুকতেও পারবেন না। ওই সময় শুধু প্রসেস ঠিক রাখতে পারেন, বাকিটা আল্লাহ যখন দেওয়ার তখন রান দিবে। শান্ত প্রসেস ঠিক রাখছে, জানি না কোন সাইকোলোজিলি করছে কি-না, তবে ও আত্মবিশ্বাসী ছিল।”
দীর্ঘ দিন পর ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি পাওয়ায় কতটা স্বস্তির বিষয় হবে জানতে চাইলে মমিনুল হক বলেন, “রান হচ্ছে না, আপনি যদি শেষ চার ইনিংস দেখেন, রান ওত খারাপ না, মানে আপনারা হয়তো প্রতি ম্যাচে ২০০ আশা করেন -এ জন্য আপনাদের কাছে মনে হয় রানে নেই! আপনারা যেভাবে চিন্তা করেন রানে নাই যে, তা না! হ্যাঁ, আক্ষেপ ছিল যখন লম্বা ইনিংস ব্যাটিং করতে পারিনি, যেটা আমার অভ্যাস। এক-দুই-তিন-চার সেশন ব্যাটিং করা, ওটা নিয়ে আক্ষেপ ছিল। আলহামদুলিল্লাহ করতে (সেঞ্চুরি) পারছি, দলের জন্য হেল্পফুল হইছে, আর কিছু না।”
টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ খুবই টেস্ট খেলে থাকে। ফলে শুধুমাত্র টেস্ট ফরম্যাটে খেলা মমিনুলকে থাকতে হয় দীর্ঘ অপেক্ষায়। তবে বিষয়টি বিসিবি কিংবা নিজের হাতে না থাকায় সেভাবেই মাইনসেট করে নিয়েছেন বলে জানান সাবেক এ অধিনায়ক।
মমিনুল বলেন, “এ জিনিসটা আমার কাছে মনে হয় আপনাদের (সাংবাদিক) বেশি কনসার্ন হওয়া উচিত। কারণ একটা খেলোয়াড় যখন রানে থাকে না আপনারা কিন্তু ওইভাবে বিচার করেন না। একটা খেলোয়াড় চার মাস পর টেস্ট খেলতেছে, ওকে একটু সুযোগ বা ওইভাবে বিবেচনা করি! কিন্তু ওই সুযোগটা কিন্তু আপনারা দেন না!”
তিনি আরও বলেন, “চার মাস পরে খেলুক বা এক বছর পরে খেলুক! একদিক দিয়ে এটা আমার জন্য পজিটিভ দিক, আমি প্রস্তুতি নিতে পারি লম্বা সময় থাকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। আমি নেগেটিভ ভাবে নেই না। আসলে আমি আমার মাইন্ডসেটআপটা ওভাবেই করে ফেলেছি, আগেও তো একবার দেখেছেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলছি এক বছর পর। তো মাইন্ডসেটআপ ওভাবে তৈরি করলে কোনো সমস্যা হবে না।”
এমন মাইনড সেটআপের বিষয়ের কারণ ব্যাখ্যা করেন মমিনুল বলেন, “আল্টিলেমটলি ওইটা আমার হাতেই নেই, এটার সঙ্গে যুদ্ধ করেও পারবেন না। আমার হাতে যেটুক আছে ওইভাবে মাইন্ডসেটআপ করে খেলাটা উচিত মনে হয়।”