ঋসভ পান্থ ও শ্রেয়াস আইয়ারের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে এগিয়ে সফরকারী ভারত। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২২৭ রানের জবাবে সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাামের বোলিং নৈপুন্যে ৩১৪ রানে অলআউট হয় ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ ওভারে বিনা উইকেটে ৭ রান করেছে বাংলাদেশ। ফলে ১০ উইকেট হাতে নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষে ৮০ রানে পিছিয়ে রয়েছে টাইগাররা।
সাকিব এবং তাইজুল ৪টি করে উইকেট শিকার করেন। ২২৭ রানের জবাবে গুটিয়ে যাওয়ার আগে প্রথম ইনিংস থেকে ৮৭ রানের লিড পায় টিম ইন্ডিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে বিনা উইকেটে বাংলাদেশ করেছে ৭ রান। নাজমুল হোসেন শান্ত ৫ রানে এবং জাকির হাসান ২ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দিনই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। দিনের শেষ বেলায় ৮ ওভার ব্যাট করে বিনা উইকেটে ১৯ রান তুলতে পারে ভারত। অধিনায়ক লোকেশ রাহুল ৩ ও শুভমান গিল ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দিনের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে রাহুলকে লেগ বিফোর আউট করেন তাইজুল। রিভিউ নিয়ে ১০ রান করা রাহুলকে থামান তাইজুল।
এক ওভার পর ভারত শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন তাইজুল। আরেক ওপেনার গিলকেও লেগ বিফোর আউট করেন তিনি। ২০ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেন গিল।
৩৮ রানের দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। দলকে চাপমুক্ত করতে তৃতীয় উইকেট জুটিতে চেষ্টা করেন চেতেশ্বর পূজারা- বিরাট কোহলি। কিন্তু তাইজুলের শিকার হয়ে পূজারা বিদায় নিলে ভাঙে কোহলির সাথে ৯৩ বলে ৩৪ রানের জুটি। ২৪ রান করেন পূজারা।
উইকেট সেট হওয়া কোহলিকে বেশি দূর যেতে দেননি পেসার তাসকিন আহমেদ। অফ-স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন কোহলি, করেন ২৪ রান। ৯৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে ভারত।
এ অবস্থায় কাউন্টার অ্যাটাক করেন পান্থ ও আইয়ার। বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে অনায়াসে রান তুলেছেন তারা। দ্বিতীয় সেশনে জোড়া হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ পান পান্থ ও আইয়ার। এতে লিডের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় সেশন শেষ করেন এ দুই ব্যাটার। তখন ভারতের রান ছিল ৪ উইকেটে ২২৬ রান। ৬ উইকেট হাতে নিয়ে মাত্র ১ রানে পিছিয়ে ছিল ভারত।
এই সেশনে পান্থ ও আইয়ারকে জীবন দেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ব্যক্তিগত ১৯ ও ২১ রানে আইয়ারের সহজ ক্যাচ ফেলেন মিরাজ ও উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান। ৫৯ ও ১১ রানে লিটন ও মুশফিক ক্যাচ মিস করলে বেঁচে যান পান্থ।
বিরতির পর পান্থকে নার্ভাস-নাইন্টিতে থামান মিরাজ। অফ-স্টাম্পের বল ঠিক মত খেলতে না পেরে নুরুলকে ক্যাচ দেন পান্থ। ১০৪ বল খেলে ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৯৩ রান করেন তিনি । এই নিয়ে ষষ্ঠবার নার্ভাস-নাইন্টিতে ফিরলেন পান্থ।
পঞ্চম উইকেটে আইয়ারের সাথে ১৮২ বলে ১৫৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন পান্থ। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি। পান্থ ফেরার পর উইকেটে আসেন অক্ষর প্যাটেল। তাকে ৪ রানে থামিয়ে দিয়ে ইনিংসে প্রথম উইকেটের দেখা পান অধিনায়ক সাকিব।
পরের ওভারে সেট ব্যাটার আইয়ারকে লেগ বিফোর আউট করে বাংলাদেশের পথের কাটা সড়ান সাকিব। ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০৫ বলে ৮৭ রান করেন আইয়ার। দলীয় ২৭১ রানের মধ্যে পান্থ-আইয়ারের বিদায়ের পর ভারতের গুটিয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার ছিল। তবে টেল-এন্ডাররা ছোট-ছোট ইনিংস খেলে ভারতের রান ৩শ পার করেন।
অশ্বিনকে ১২ রানে সাকিব ও ১৪ রান করা উমেশকে আউট করেন তাইজুল। শেষ ব্যাটার সিরাজকে শিকার করে ভারতকে ৩১৪ রানে গুটিয়ে দেন সাকিব। সিরাজ করেন ৭ রান। ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন উনাদকত। বল হাতে বাংলাদেশের সাকিব ৭৯ রানে ও তাইজুল ৭৪ রানে ৪টি করে উইকেট নেন।
ভারত গুটিয়ে যাওয়ার পর দিনের শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ৬ ওভার ব্যাট করে দিন শেষে অবিচ্ছিন্নই ছিলেন দুই ওপেনার শান্ত(৫) ও জাকির (২)।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস