ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় আবারও দিনেই হারলো বাংলাদেশ। লক্ষ্য ছিল ৩৩৫। সিরিজে আগের তিন ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশ করেছিল ৩৩৬ রান। সেখানেই এ রান তাড়া করা সাকিবদের কাছে পাহাড় সমানই ছিল। সেখানে জ্যামাইকা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৬৬ রানে ব্যবধানে হারের স্বাদ নেয বাংলাদেশ।
অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছিল দুই দিন ও এক সেশনে। এবার জিতলো ১৬৬ রানে। এর ফলে দুই ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করলো ক্যারিবিয়ানরা। একই সঙ্গে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে তারা ওঠে গেল আটে এবং বাংলাদেশ নেমে গেল ৯ নম্বরে।
ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ব্যর্থতা ধারাবাহিক থেকে ৩৩৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৬৮ রানে। প্রায় ২০০ ওভারের বেশি সময় হাতে রেখে ব্যাট করতে নামা প্রথম ইনিংসে সংগ্রামী ইনিংসে ৪৭ রান করা তামিম এদিন ফেরেন খালি হাতেই। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়া হোল্ডার দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই কাঁপন ধরাতে থাকেন সফরকারীদের ব্যাটিংয়ে।
আগের তিন ইনিংসে ব্যর্থ মুমিনুল হক ও লিটন কুমার দাশ দেখান খানিক আশার আলো দেখিয়েছেন। উইকেটের চারপাশে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করতে থাকেন লিটন। কিন্তু অতিরিক্ত শট খেলার প্রবণতায় দলীয় ৪০ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
অভিষিক্ত কেমো পলের বোলিংয়ে গালি অঞ্চলে ক্যাচ দেয়ার আগে ৬ চারের মারে ৩৩ বলে ৩৩ রান করেন লিটন। এর খানিক পর ফিরে যান মুমিনুলও। তার ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। সিরিজের ৪ ইনিংসে তার সংগ্রহ সর্বসাকুল্যে ১৬ রান।
সিরিজ জুড়ে ব্যর্থতার টালিটা আরও লম্বা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আউট হয়ে যান মাত্র ৪ রান করে। পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন দেশ সেরা জুটি সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। দু’জন মিলে যোগ করেন ৫৪ রান।
কিন্তু দলীয় ১২১ রানের মাথায় আবারও অফস্টাম্পের বাইরের বল বুঝতে না পেরে লেগ বিফোরের ফাঁদে ধরা পড়েন ৩১ রান করা মুশফিক। পরের বলেই সাজঘরের পথ ধরেন নুরুল হাসান সোহান। দুই ইনিংসেই গোল্ডেন ডাকে আউট হয়ে গোল্ডেন পেয়ারের বিরল কীর্তি স্থাপন করেন তিনি।
ইনিংসের বাকি সময়টা মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামকে নিয়ে সংগ্রাম করেন সাকিব। মিরাজ আউট হন ১০ রান করে। সাকিব তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৩তম হাফসেঞ্চুরি। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে ৯ম বারের মত একই ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়লেন সাকিব।
দলীয় ১৬২ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৫৪ রানে ফিরে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক। তখনই মূলত শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। ১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম। বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৬৮ রানে। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়া হোল্ডার এই ইনিংসে নেন ৬ উইকেট।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া বাংলাদেশ এ সফরে খেলবে আরও ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। আগামী ২২ জুলাই মাঠে গড়াবে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস : ৩৫৪
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১৪৯
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস : ১২৯
বাংলাদেশ: (লক্ষ্য ৩৩৫) ৪২ ওভারে ১৬৮।
ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৬ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০তে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : জেসন হোল্ডার
ম্যান অব দ্য সিরিজ : জেসন হোল্ডার।