কোচ ও অধিনায়ক হিসেবে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও বেন স্টোকস দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা চার ম্যাচে জিতেছিল ইংল্যান্ড। শুধু জিতেছিল বললে ভুল হবে, প্রতিপক্ষককে স্রেফ উড়িয়ে দিয়ে জিতেছিল। এমনকি টেস্ট ক্রিকেটকে নতুন জীবন দেওয়ার কথাও বলেছিলেন স্টোকস। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা এবার তাদের মূদ্রার অন্য পিঠও দেখিয়ে দিলো।
ম্যাচের দুই ইনিংসেই আফ্রিকান পেসারদের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়লো ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ। কোনো ইনিংসেই যেন আফ্রিকান গোলার সামনে অসহায় আত্মসমর্পন করা ছাড়া ইংলিশদের ব্যাটারদের আর কোনো উপায় ছিল না। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৪৬ রানে অল আউট হয়েছে ইংল্যান্ড, আর এতে একটা গোটা ইনিংস ও ১২ রানে ম্যাচ জয় নিশ্চিত হয়েছে আফ্রিকার।
ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে অন্তত ১৬১ রান করতে হতো ইংল্যান্ডকে। কিন্তু তার থেকে ১২ রান দূরে থাকতেই থেমে যায় ইংলিশদের ইনিংস। পেসারদের দাপটে প্রথম ইনিংসে বল হাতে পাননি, সেই স্পিনার কেশব মহারাজকে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুর দিকেই বোলিংয়ে আনেন আফ্রিকান অধিনায়ক ডিন এলগার।
অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে একটুও ভুল করেননি কেশব। তার হাত ধরেই ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপে ধ্বস নামানো শুরু করে আফ্রিকা। দলীয় ২০ রানে জ্যাক ক্রাউলিকে ফিরিএ শুরু করেন কেশব।
পজিশন ভিত্তিক ব্যাটার তৈরিতে এক বছর সময় চেয়েছেন সিডন্স
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ট্রাজেডি হিরো ও আফ্রিকার গলার কাটা অলি পোপকে এবার দ্রুত ফিরিয়তে দেন কেশব। চার নম্বরে নামা জো রুটও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দলীয় ৫৩ রানে আফ্রিকান পেসার লুঙ্গি এনগিডির শিকার হয়ে ফেরেন তিনি।
ইংল্যান্ডের নব্য ‘বাজবল’ তত্ত্বের অন্যতম নায়ক জনি বেয়ারস্টো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ। দলীয় ৮১ রানে তাকে ফিরিয়ে দেন আফ্রিকান পেসার নরকিয়া। একপ্রান্তে আগলে রেখে লড়তে থাকা ইংলিশ ওপেনার অ্যালেক্স লিসকে ব্যক্তিগত ৩৫ ফিরিয়ে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় শিকার করেন নরকিয়া। মাত্র এক বলের ব্যবধানে শূন্য রানে ফিরিয়ে ইংলিশ উইকেটরক্ষক ব্যাটার বেন ফোকসকেও!
শেষদিকে ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে পারেনি। দলীয় ১৪১ রানে ব্যক্তিগত ২৯ বলে ৩৫ রান করে ইনিংসে রাবাদার প্রথম শিকারে পরিণত হন তিনি।
ব্রড ফেরার পর মাত্র আট রানে শেষ তিন উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এক প্রান্ত আগলে রাখার চেষ্টা করা ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকসকেও এর মধ্যে ফিরিয়ে দেন রাবাদা। ৩৭.৪ ওভারে আফ্রিকান পেসার মার্কো জনসনের বলে ইংলিশ ব্যাটার জেমস অ্যান্ডারসনের উইকেট উপড়ে গেলে ১৪৯ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। ফলে ইনিংস ও ১২ রানে ইংলিশদের হারায় আফ্রিকা।
এর আগে আগের দিনের সাত উইকেটে ২৮৯ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল আফ্রিকা। দিনের শুরুতেই ফিরে যান রাবাদা। মাত্র দুই রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া হয় মার্কোর। দলীয় ৩১৮ রানে ব্যক্তিগত ৪৮ রানে ব্রডের বলে আউট হন। শেষ ব্যাটার হিসেবে ব্রডের বলে লুঙ্গি এনগিডি আউট হলে ৩২৬ রানে শেষ হয় আফ্রিকার ইনিংস।
তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ২৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ওল্ড ট্রাফোর্ডে মুখোমুখি হবে দুই দল। সিরিজ বাঁচাতে ওই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই স্বাগতিক ইংলিশদের সামনে।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি