শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চতুর্থ দিন শেষে গল-এ সিরিজের প্রথম টেস্টে ইতিহাস গড়ার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাকিস্তান। ম্যাচ জিততে শেষ ও পঞ্চম দিনে পাকিস্তানের দরকার ১২০ রান, হাতে রয়েছে ৭টি উইকেট। এ রান তাড়া করে জয়ের বন্দরে পৌঁছতে পারলেই দুটি দুটি রেকর্ড ভাঙবে বাবর আজমরা।
পাকিস্তান জিতলে গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয় পাওয়ার রেকর্ড নিজেদের দখলে নিবে। এছাড়া গলে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডও গড়বে তারা। ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিন পাকিস্তানের দরকার ১২০ রান। আর শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৭ উইকেট। অবশ্য চতুর্থ দিন শেষে ম্যাচ জয়ের পাল্লা পাকিস্তানের দিকেই ঝুঁকে রয়েছে।
শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া ৩৪২ রানের জবাবে চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেটে ২২২ রান করেছে পাকিস্তান। ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ১১২ রানে অপরাজিত আছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৭ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে লঙ্কানদের ২২২ রানের জবাবে ২১৮ রান করে পাকিস্তান।
গল-এ তৃতীয় দিন শেষে ১ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৩৩ রানে এগিয়ে ছিল স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংস থেকে পাওয়া ৪ রানের লিডকে সাথে নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ৩২৯ রান করেছিল লঙ্কানরা। দিনেশ চান্ডিমাল ৮৬ ও শেষ ব্যাটার প্রবাথ জয়সুরিয়া ৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) চতুর্থ দিনের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে শ্রীলঙ্কার শেষ উইকেটটি তুলে নেন পাকিস্তানের পেসার নাসিম শাহ। ৪ রানেই থামেন জয়সুরিয়া। তবে অন্যপ্রান্তে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন চান্ডিমাল। শ্রীলঙ্কা থামে ৩৩৭ রানে।
পাকিস্তানের সফল বোলার ছিলেন বাঁ-হাতি স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ। আগের দিনই ৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট নেন তিনি। ৮৮ রানে ৫ উইকেট নেন নওয়াজ। এছাড়া আরেক স্পিনার ইয়াসির শাহ ৩ উইকেট নেন।
৩৪২ রানের বড় টার্গেটে খেলতে নেমে দারুণ সূচনা করে পাকিস্তান। ২৯ ওভার খেলে ৮৭ রানের জুটি গড়েন দুই ওপেনার শফিক ও ইমাম উল হক। পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শ্রীলঙ্কার স্পিনার রমেশ মেন্ডিস। ৩৫ রানে রমেশের শিকার হন ইমাম।
ইমামের আউটের পর ক্রিজে এসে সুবিধা করতে পারেননি আজহার আলি। স্পিনার জয়সুরিয়ার শিকার হয়ে ৬ রানে বিদায় নেন আজহার। ১০৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনে শফিকের সাথে জুটি বাধেন অধিনায়ক বাবর আজম। শ্রীলঙ্কার বোলারদের সাবধানে সামলে নিয়ে চা-বিরতি পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন থাকেন তারা। এ সময় পাকিস্তানের রান ছিল ২ উইকেটে ১৪৭।
বিরতি শেষে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা বোলারদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছেন শফিক ও বাবর। ইনিংসের ৭২তম ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২২তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান বাবর। একই ওভারে ১ বল পর ষষ্ঠ টেস্টে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন শফিক। এ জন্য ২৩৮ বল খেলেন তিনি।
হাফ-সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি বাবর। জয়সুরিয়ার বলে বোল্ড হয়ে ৫৫ রানে থামেন প্রথম ইনিংসে ১১৯ রান করা বাবর। তৃতীয় উইকেটে শফিকের সাথে ২৩৮ বলে ১০১ রান যোগ করেন তিনি।
বাবর যখন আউট হন তখন দিনের খেলার ৩৭ বল বাকি ছিল। ফলে দিনের বাকি সময়ে আর কোনো বিপদ হতে দেননি শফিক ও পাঁচ নম্বরে নামা মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৮৯ বলে ১১২ রানে অপরাজিত আছেন শফিক এবং ১২ বলে ৭ রান করে অপরাজিত আছেন রিজওয়ান।
শ্রীলঙ্কার জয়সুরিয়া ২টি ও রমেশ ১টি উইকেট শিকার করেছেন।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস