সিরিজ বাঁচাতে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না শ্রীলঙ্কার সামনে। শুধু জয়ই পায়নি, একেবারে অস্ট্রেলিয়াকে বিধ্বস্ত করে ছেড়েছে। অভিষিক্ত প্রভিন জয়াসুরিয়ার স্পিনে অস্ট্রেলিয়াকে এক ইনিংস ও ৩৯ রানে হারিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।
দুই ইনিংসেই স্পিনার জয়াসুরিয়ার স্পিন বিষে নাকাল হয়েছে অজিরা। প্রথম ইনিংসে স্টিভেন স্মিথের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে লড়াকু সংগ্রহ পেয়েছিল সফরকারীরা, কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে সেই স্মিথকেও খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন জয়াসুরিয়া।
তৃতীয় দিন যেখান থেকে শেষ করেছিলেন চতুর্থ দিনে সেখান থেকেই শুরু করেছেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটার। আগের দিনে করা ১৩তম টেস্ট সেঞ্চুরিকে পরিণত করেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিতে।
টেলএন্ডার ব্যাটারদের নিয়ে যেভাবে ব্যাটিং করেছেন সেটা এককথায় দুর্দান্ত। চতুর্থ দিনে ২১ রান যোগ হতেই আগের দিনের শেষ বেলার সঙ্গী রমেশ মেন্ডিসকে হারান চান্দিমাল।
শ্রীলঙ্কায় মাঠের অনুশীলনে ফিরেছে পাকিস্তান
এরপর উইকেটে আসা জয়াসুরিয়া দ্রুত ফিরে গেলে চাপে পড়ে যান চান্দিমাল। কিন্তু শেষ উইকেট জুটিতে অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ৫৪ রানের জুটি গড়ে শ্রীলঙ্কার লিড বাড়িয়ে নেন অনেকখানি!
শেষ ব্যাটার হিসেবে রাজিতা আউট হলে ১৯১ রানের এগিয়ে থেকে শেষ হয় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। ক্যারিয়ার সেরা ২০৬ রানে অপরাজিত থাকেন চান্দিমাল।
১৯১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ ভালো শুরু পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন স্পিনার রমেশ মেন্ডিস। দলীয় ৪৯ রানে অজি ব্যাটার ডেভিড ওয়ার্নারকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন তিনি।
এরপরই দৃশ্যপটে আগমন স্বাগতিক স্পিনার প্রভীন জয়াসুরিয়ার। উসমান খাজাকে ফিরিয়ে শুরু, এরপর আরও পাঁচ অজি ব্যাটারকে ফিরিয়ে রীতিমতো বল হাতে তান্ডব চালান এই অভিষিক্ত স্পিনার।
প্রথম ইনিংসেও একমাত্র স্টিভেন স্মিথ ছাড়া আর কোনো অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারই শ্রীলঙ্কান বোলি আক্রমণ সামাল দিতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই স্মিথকে শূন্য রানে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠান জয়াসুরিয়া।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারদের রীতিমতো অসহায় বানিয়ে ছেড়েছেন জয়াসুরিয়া। এই অভিষিক্ত স্পিনারের স্পিনের বিপক্ষে কোন উত্তরই ছিল না অজি ব্যাটারদের কাছে!
একের পর এক অজি ব্যাটার উইকেটে এসেছে আর জয়াসুরিয়ার কাছে নাকাল হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেছেন। ৭৪ রানে ট্রাভিস হেড আউট হওয়ার পর ৩৭ রানের জুটি গড়েন মার্নাস লাবুশানে ও ক্যামেরুন গ্রিন!
এরপর আর জুটি বলতে কিছুই ছিল না অজি ইনিংসে! অজি ব্যাটিং লাইনআপে রীতিমতো ধ্বস নামিয়ে ছেড়েছেন জয়াসুরিয়া। ১১২ রানে মার্নাস লাবুশানে, ১১৭ রানে ক্যামেরুন গ্রিন ও মিচেল স্টার্ক আউট হলে হার প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় অজিদের!
১৪৪ রানে অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ফিরে গেলে অলআউট হতে আর বেশিক্ষণ লাগেনি সফরকারীদের। শেষ পর্যন্ত ১৫১ রানে গুটিয়ে এক ইনিংস ও ৩৯ রানে হারের লজ্জ্বা সঙ্গী হয় অস্ট্রেলিয়ার।
আইসিসির জুন মাসের সেরা খেলোয়াড় জনি বেয়ারস্টো
প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জেতায় দুই ম্যাচের সিরিজ শেষ হয় ১-১ সমতায়। দুই ইনিংসে মিলিয়ে ১২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন অভিষিক্ত প্রভীন জয়াসুরিয়া। দুই ম্যাচে এক ডাবল সেঞ্চুরিতে ২১৯ রান করা চান্দিমাল হয়েছেন সিরিজ সেরা।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি