“পূজারার (চেতেশ্বর পূজারা) মতো খেলছিল, স্লেজিং করে কোহলি পান্থ (রিষভ পান্থ) বানিয়ে দিয়েছে” ইংলিশ ব্যাটার জনি বেয়ারস্টোর দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর টুইটারে লিখেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার বীরেন্দ্র শেবাগ।
যদি আপনি এজবাস্টনে চলমান ভারত-ইংল্যান্ড টেস্টের অন্তত তৃতীয় দিন দেখে থাকেন তাহলে শেভাগের এই টুইট বার্তা বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়। ৬১ বলে ১৩ রানে ব্যাট করছিলেন বেয়ারস্টো, আগের তিন টেস্টে যে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন, ভারতের বিপক্ষে ‘তখন’ পর্যন্ত তেমন কিছু দেখা যাচ্ছিল না।
‘তখন’ বলতে ভারতের সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় পর্যন্ত! তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে বেয়ারস্টোকে নিজের ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন কোহলি।
কোহলি পরামর্শ এতটাই শুনলেন, যে আচমকাই যেন খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আগের তিন টেস্ট টেস্টের চেহারায় ফিরে গেলেন। ৬১ বলে ১৩ থেকে পরের ২০ বলে পৌছালেন পঞ্চাশে। এরপর সেঞ্চুরি করতে নিলেন আরও ৩৮ বল। টানা তিন টেস্টে জনির এটা তৃতীয় সেঞ্চুরি। এই সেঞ্চুরিতে ১৪টা চার ২টা ছয় মেরেছেন ডানহাতি এই ইংলিশ ব্যাটার।
বোলিং-ব্যাটিংয়ের দৈন্যদশায় বাংলাদেশের বড় হার
এ সময়টাতে হয়তো ভারতীয় বোলাররা ভাবছিল, কোহলি স্লেজিংটা না করলেও পারতো! পুরোনো বলে শার্দুল, শামীদের একের পর এক বাউন্ডারী মারতে একটুও সমস্যা হয়নি তার। যেটুকু ভুগেছেন সেটা সতীর্থদের কল্যাণে! সঙ্গীর অভাব এই ইনিংসে বড্ড বোধ করেছেন ২০২২ সালে সর্বোচ্চ টেস্ট রানের মালিক।
শেষ পর্যন্ত সেই কোহলির হাতে বন্দী হয়েই ১০৪ রানে আউট হন জনি। এরপর ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ আর দাঁড়াতেই পারেনি। বেয়ারস্টো আউট হওয়ার পর ৪৩ রানে শেষ তিন উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ব্রড এক, স্যাম বিলিংস ৩৬ ও ম্যাটি পটস ১৮ রান করে ফিরে গেলে ২৮৪ রানে শেষ হয় ইংলিশদের প্রথম ইনিংস।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ মোহাম্মদ সিরাজ চারটি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া অধিনায়ক জাসপ্রিত বুমরাহ তিনটি, মোহাম্মদ শামী দুইটি ও শার্দুল ঠাকুর একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
১৩২ রানে এগিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ভারত। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও শুরুতেই ফিরে যান শুভমন গিল। এরপর চেতেশ্বর পূজারা ও হনুমা বিহারি মিলে সাবধানী শুরু করেন।
দুজনেই দারুণ ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে ইংলিশ বোলারদের মোকাবেলা করেছেন। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি দু’জনের জুটি। দলীয় ৪৩ রানে ব্যক্তিগত ১১ রানে ব্রডের শিকার হয়ে ফেরেন বিহারি।
চারে নেমে এদিন দারুণ শুরু করেছিলেন ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকা কোহলি। শুরু থেকেই দারুণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যাট করছিলেন তিনি।
তবে তিনিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকসের লাফিয়ে ওঠা এক ডেলিভারিতে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। যদিও ওই বলে একজন ব্যাটারের কিছু করার সুযোগ কমই ছিল।
এরপর প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ঋষভ পান্থকে সঙ্গে নিয়ে দিনের বাকি সময় নির্বিঘ্নে পার করে দেন পূজারা। এই টেস্টেই দলে ফেরা পূজারা প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন দ্বিতীয় ইনিংসে।
দারুণ ব্যাট করে তুলে নিয়েছেন ৩৩তম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি। অন্যপ্রান্তে সাবলিল ব্যাট করে ইংলিশ বোলারেদের কোনো সুযোগ দেননি পান্থ। তৃতীয় দিন শেষে ৫০ রানে পূজারা ও ৩০ রানে অপরাজিত আছেন পান্থ।
চতুর্থ দিনে ২৫৭ রানে এগিয়ে থেকেই ব্যাটিংয়ে নামবে ভারত। তাই জনি বেয়ারস্টোর অমন দাপুটে সেঞ্চুরির পর চলমান টেস্টে জাসপ্রিত বুমরাহর দলই চালকের আসনে!
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি