বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাওয়ার পর থেকেই দেশের টেস্ট সংস্কৃতি নিয়ে বেশ কথা উঠছে। এর আগে হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দেশের টেস্ট সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলেছিলেন। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে নতুন টেস্ট অধিনায়ক সাকিবও বললেন, বাংলাদেশে টেস্ট সংস্কৃতি কখনোই ছিল না।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের হার নিশ্চিত হয়েছিল তৃতীয় দিনেই। চতুর্থ দিনে বৃষ্টি বাঁধায় সেটা কেবল দীর্ঘায়িতই হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সোহানের লড়াইয়ে ইনিংস ব্যবধান এড়ালেও সাদা পোশাকে শততম হার দেখেছে বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়ে অধিনায়কত্বের তৃতীয় মেয়াদ শুরু হলো সাকিব আল হাসানের। দিন শেষে কোচ, বিসিবি সভাপতির মতো অধিনায়কের কাছেও নানা প্রশ্ন গেলো। এরকম হারের দিনে সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হিমশিম খাওয়ার কথা।
কিন্তু তিনি তো সাকিব আল হাসান। তিনি নিজেই প্রশ্ন করে বসলেন, "খেলোয়াড়দের এখানে খুব বেশি দোষ দেওয়াটা ঠিক হবে না। শুধু খেলোয়াড়দেরই দোষ দিলে হবে না। আমাদের দেশের সিস্টেমটাই কিন্তু এমন। আপনি কবে দেখছেন বাংলাদেশে ৩০ হাজার দর্শক টেস্ট ম্যাচ দেখছে বা ২৫ হাজার দর্শক মাঠে এসেছে টেস্ট দেখতে?"
ইনিংস পরাজয় এড়িয়ে শততম হারে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ
ইংল্যান্ডকে উদাহরণ হিসেবে টেনে সাকিব বলেন, "ইংল্যান্ডে তো প্রতি ম্যাচে (টেস্ট) এরকম দর্শক থাকে। টেস্টের সংস্কৃতিটাই আমাদের দেশে ছিল না কখনো, এখনো নেই।”
একই সাথে সাকিব মনে করিয়ে দিলেন টেস্ট সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনা বাধ্যতামূলক। সেটা না হলে সাদা পোশাকে খুব বেশি আগাতে পারবে না বাংলাদেশ বলে মত তার।
“টেস্ট সংস্কৃতি নেই বলে যে হবেও না, সেটাও কিন্তু নয়। এই জিনিসটা পরিবর্তন করাই আমাদের বড় দায়িত্ব। সবাই মিলে যদি একসঙ্গে পরিকল্পনা করে আগানো যায় তাহলেই হয়তো কিছু সম্ভব হবে। নইলে আসলে খুব বেশি দূর আগানো সম্ভব হবে না। কারণ আমাদের টেস্টের সংস্কৃতিই নেই” যোগ করেন সাকিব।
টেস্টে উন্নতি করতে পরিবর্তন আনতে হবে বলে মনে করেন সাকিব। তবে পরিকল্পনা করার সময় সবার অংশগ্রহন চান সাকিব। কাউকে বাদ দিয়ে পরিকল্পনা করলে সফল হওয়া সম্ভব নয় বলে মত তার।
বলেন, “আমাদের নিজেদের চিন্তার পরিবর্তনাটা জরুরি। এই জায়গায় কাজ করার আছে। সবাই মিলে পরিকল্পনা করতে হবে। একজনকে ছাড়া আরেকজনকে নিয়ে পরিকল্পনা করে আসলে সফল হওয়া সম্ভব নয়। সবাই মিলে বসে যদি আমরা একটা পরিকল্পনা ধরে আগাই তাহলে অন্তত এক–দেড় বছর পর ধারাবাহিক পারফর্ম করা সম্ভব হবে।”
বিদেশের কথা চিন্তা না করে আগে দেশের মাটিতে জেতা নিশ্চিত করা জরুরী বলে মনে করেন সাকিব। উদাহরণ হিসেবে নিউজিল্যান্ডকেও টানেন টাইগারদের টেস্ট অধিনায়ক।
সাকিব বলেন, “অন্য দেশে গেলে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত সব দলই হারে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে আমরা যেন ঘরের মাঠে না হারি। হয় ড্র করব, অথবা জিতব।”
দেশে ধারাবাহিকভাবে সিরিজ জিততে বিদেশে খারাপ করলে তখন সেটা নিয়ে আলোচনা কম হবে বলে মনে করেন সাকিব। “দেশের সিরিজগুলোতে খুব ভালো পরিকল্পনা করে খেলাটা তাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যেন জিতি, না জিতলেও যেন ড্র ছাড়া অন্য কোনো ফল না হয়। হোম সিরিজে যেন আমরা না হারি, এটা নিশ্চিত করা জরুরি। তখন দেশের বাইরে খারাপ খেললেও সেটা অত বেশি চোখে পড়বে না” যোগ করেন সাকিব।
সাদাপোশাকে খুব কাছাকাছি সময়ে কোনো সিরিজ নেই বাংলাদেশের। পরবর্তী সিরিজ চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে। ঘরের মাঠে ভারতকে আতিথেয়তা দিবে বাংলাদেশ।
স্পোর্টসমেইল২৪/এসকেডি