প্রথম সেশন বাংলাদেশের, বাকি দিন শ্রীলঙ্কার

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৫:৩৭ পিএম, ১৫ মে ২০২২
প্রথম সেশন বাংলাদেশের, বাকি দিন শ্রীলঙ্কার

সিরিজের প্রথম ও চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে এগিয়ে রয়েছে সফররত শ্রীলঙ্কা। প্রথম দিনের প্রথম সেশনে উইকেট নিয়ে লঙ্কান ব্যাটারদের চাপে রাখতে পারলেও বাকি দুই সেশনে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের বিপক্ষে লঙ্কান ব্যাটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের প্রথম সেঞ্চুরিতে দিন শেষে ২৫৪ রান সংগ্রহ করেছে সফরকারীরা, হারাতে হয়েছে ৪টি উইকেট।

রোববার (১৫ মে) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে শ্রীলঙ্কা। লঙ্কান ব্যাটারদের চাপে রেখে প্রথম সেশনটি নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। নাঈম হাসনের জোড়া শিকারে ৭৩ রান দিয়ে লাঞ্চে যায় টাইগাররা।

দিনের শুরুতে খুব সাবধানী ব্যাটিং করে শ্রীলঙ্কা। যার ফলে লঙ্কার ব্যাটারদের কাছ থেকে প্রথম বাউন্ডারি আসে ইনিংসের ১৪তম ওভারে। এর আগেই উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন নাঈম হাসান।

ইনিংসের অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে লঙ্কান অধিনায়ক অধিনায়ক দিমুথ করুনারাত্নে সাজঘরে ফেরান নাঈম। এলবিডব্লিউ আবেদনে আম্পায়ারের দেওয়া আউটের বিপরীতে রিভিড নিয়েও বাঁচতে পারেননি ৯ রান করা করুনারত্মে। ফলে দলীয় ২৩ রানেই প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর প্রথম সেশনেই আরও একটি উইকেট শিকার করেন নাঈম। ২২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আরেক ওপেনার শাদা ফার্নান্দোকে ফেরান তিনি। ফলে দলীয় ৬৬ রানের মাথায় শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। এরপর আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭৩ রানের দিনের প্রথম সেশন (২৪ ওভার) শেষ করের সফরকারীরা।

দিনের প্রথম সেশনে দুই ওপেনারকে ফেরাতে পারলেও বাকি দিন আর সুবিধা নিতে পারেনি বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরে দলের রানের চাকা ঘুড়ান কুশল মেন্ডিস ও অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ৩১তম ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ১শতে নিয়ে যায় এ জুটি।

উইকেটের সাথে মানিয়ে নিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন মেন্ডিস ও ম্যাথিউস। ৩৫তম ওভার পর্যন্ত চার বোলার ব্যবহার করেছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মমিনুল হক। তখনও আক্রমণে আনা হয়নি সাকিব। অবশেষে ৩৬তম ওভারে বল হাতে আক্রমণে আসেন সাকিব।

৪৩তম ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মেন্ডিস। এ জন্য তাকে খেলতে হয়েছে ৯৩ বল। মেন্ডিসের হাফ-সেঞ্চুরির পর স্পিনার তাইজুলের বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ম্যাথিউস। তখন ৩৮ রানে ছিলেন ডান-হাতি এ ব্যাটার। জীবন পেয়ে দ্বিতীয় সেশনের শেষ ওভারে ৯৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩৮তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন তিনি।

মেন্ডিস ও ম্যাথিউসের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৫৬ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৮ রান তুলে বিরতিতে যায় শ্রীলঙ্কা। প্রথম সেশনে দুই উইকেট শিকার করা বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেট পায়নি। তবে হতাশার সেশন কাটানোর পরও মুষড়ে পড়েনি বাংলাদেশ।

বিরতি থেকে ফিরে প্রথম ডেলিভারিতেউ কুশল মেন্ডিসের বিদায় নিশ্চিত করেন তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের শর্ট ডেলিভারিটি লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাট-বলের মিলটা ঠিক-ঠাক করতে পারেননি মেন্ডিস। মিড উইকেটে কুশলের ক্যাচ নেন নাঈম। ১৩১ বল খেলে ৩টি চারে ৫৪ রান করে সাজঘরে ফিরেন কুশল। তৃতীয় উইকেটে ম্যাথিউসের সাথে ২০৯ বলে ৯২ রানের জুটি গড়েন তিনি।

মেন্ডিসের বিদায়ের পরের ওভারে আবারও উইকেট শিকারে মেতে উঠতে পারতো বাংলাদেশ। তবে পেসার খালেদের বলে ম্যাথিউসের লেগ সাইডের কঠিন ক্যাচ নিতে পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন দাস। এরপর লিটনের জন্য কঠিন হলেও মাহমুদুল হাসান জয়কে সহজ ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান ম্যাথিউস।

৬৫তম ওভারে তাইজুলের তৃতীয় ডেলিভারিটি বুঝতে পারেননি ম্যাথিউস। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে স্লিপে চলে গেলে ঝাঁপিয়ে পড়েও ক্যাচ নিতে পারেননি জয়। ফলে ৬৯ রানে আবারও জীবন পান ম্যাথিউস। তবে পরের ওভারে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন সাকিব।

সাকিবের ডেলিভারি ডিফেন্স করতে গিয়েছিলেন নতুন ব্যাটার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। বল ব্যাটে লেগে প্যাড ছুঁয়ে ক্যাচ উঠে। প্রথম স্লিপ থেকে সামান্য সামনের দিকে দৌঁড়ে ড্রাইভ দিয়ে ক্যাচ নেন জয়। ক্যাচ আউটের আবেদনে প্রথমে আম্পায়ার সারা না দিলেও সাকিবের চাওয়ায় মমিনুল রিভিউ নিলে ফল আসে বাংলাদেশের পক্ষে। সিলভাকে (৬) ফিরিয়ে দিয়ে নিজের ১১তম ওভারে প্রথম উইকেট পান সাকিব।

ডি সিলভার আউটের পর ক্রিজে ম্যাথিউসের সঙ্গী হন দিনেশ চান্ডিমাল। ব্যাট হাতে সতর্ক থাকলেও বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি ঠিকই আদায় করে নেন দুই সাবেক অধিনায়ক। সাকিব-তাইজুলকে ১টি করে ছক্কা মারেন চান্ডিমাল। নাঈম-তাইজুলকে তিনটি চার মারেন ম্যাথিউস।

৮১তম ওভারে শরিফুলকে মিড উইকেট দিয়ে চার মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ম্যাথিউস। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিতে পেতে ম্যাথিউস খেলেন ১৮৩ বল। টাইগারদের বিপক্ষে ম্যাথুজের এটি সপ্তম টেস্ট।

সেঞ্চুরির পর দিন শেষে ১১৪ রানে অপরাজিত রয়েছেন ম্যাথিউস। ১৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১৩ বলে অপরাজিত ১১৪ রান করেন তিনি। অন্যদিকে, ২টি ছক্কায় ৭৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত আছেন চান্ডিমাল। বাংলাদেশের নাঈম ৭১ রানে ২টি, তাইজুল এবং সাকিব ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।

স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস



শেয়ার করুন :


আরও পড়ুন

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দিয়ে মাঠে ফিরলো ‘নিরপেক্ষ’ আম্পায়ার

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দিয়ে মাঠে ফিরলো ‘নিরপেক্ষ’ আম্পায়ার

শ্রীলঙ্কা সিরিজে নতুন মাইলফলকের সামনে মুশফিক-তামিম

শ্রীলঙ্কা সিরিজে নতুন মাইলফলকের সামনে মুশফিক-তামিম

পুরো পাঁচদিন ভালো খেলার প্রতি গুরুত্বারোপ ডোমিঙ্গোর

পুরো পাঁচদিন ভালো খেলার প্রতি গুরুত্বারোপ ডোমিঙ্গোর

নীরব ‘যোদ্ধা’ হয়েও আড়ালে তাইজুল

নীরব ‘যোদ্ধা’ হয়েও আড়ালে তাইজুল