১৮৭৭ সালের মার্চে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হয়। ম্যাচে টস ভাগ্যে জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় অস্ট্রেলিয়া। কয়েন দিয়ে টস হবার কারণ ছিল- কোন দল আগে ব্যাট করবে বা কোন দল আগে বল করবে। ঐ সময় থেকেই স্বাগতিক দল কয়েন বাতাসে ছুঁড়ে মারেন এবং সফরকারী দল হেডস বা টেইলস ডাকেন। এভাবেই ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে আজ অবধি হয়ে আসছে টস।
তবে বর্তমানে টস দিয়ে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছে স্বাগতিকরা। টস জিতে অনেকাংশেই ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিকরা। কারণ স্বাগতিক দল তাদের নিজেদের মতো করে পিচ তৈরি করে টস ভাগ্যে জিতে নিজেদের মত সিদ্বান্ত নেয়। এতে অনেকাংশেই সিরিজের ম্যাচগুলো একপেশে হয়ে যায়।
স্বাগতিক দলের এমন সুবিধা বন্ধ করতেই টস বাতিলের চিন্তা-ভাবনা করছে আইসিসি ক্রিকেট কমিটি। যাতে টেস্ট ক্রিকেটের ম্যাচ বা সিরিজগুলো আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিত পূর্ণ হবে বলে আশাবাদী কমিটি। চলতি মাসের শেষের দিকে মুম্বাইয়ে বৈঠকে বসবে আইসিসি ক্রিকেট কমিটি।
আগামী বছর থেকে শুরু হওয়া আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে টস বাতিলের প্রস্তাব করা হবে। এমনকি আগামী অ্যাশেজেও টস বাতিল করে সিরিজ সম্পন্ন করার করার কথা ভাবচ্ছে। অবশ্য টস বাতিল করে ম্যাচ সম্পন্ন করার পরীক্ষাটি ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। ২০১৬ সাল থেকে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে টস করা হয় না। অতিথি দলই প্রথমে সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে তারা বল করবে নাকি ব্যাট করবে।
টস থাকা এবং না থাকা নিয়ে কাউন্টি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ইসিবি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে- ২০১৫ সালে যেখানে ৭৪ শতাংশ ম্যাচ চার দিনে গেছে, সেখানে ২০১৬ সালে ম্যাচ গিয়েছে ৮৫ শতাংশ। ২০০৯ সালের পর যা সর্বোচ্চ। দু’টি ডিভিশনের মধ্যে ১৪২ ম্যাচের মধ্যে ৭১টি ড্র হয়েছে, দু’টি পরিত্যক্ত। অর্থাৎ, বাকি ৭১টি ম্যাচের ফল হয়েছে। যেখানে ২০১৫ সালে ৯৩টি ম্যাচে ফল হয়েছে এবং ৫১টি ড্র হয়েছে।
টস নিয়ে সাবেক খেলোয়াড়রাও এক মতে হতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং, ইয়ান বোথাম, শেন ওয়ার্ন, স্টিভ ওয়াহ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাইকেল হোল্ডিং টস নিয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। পন্টিং বলেন, ‘আর টস না।’
২০১৫ সালে হোল্ডিং বলেছিলেন, ‘আমার মতে, টেলিভিশনের জন্য টস হলো অনেক বড় ফ্যাক্টর। এটি খুবই বড় চিন্তা, সকলেই টসের দিকে মনোযোগী থাকে। টস কে জিতলো এবং সিদ্বান্ত কী হলো।’
মুম্বাইয়ে আইসিসির এ কমিটিতে থাকবেন ভারতের অনিল কুম্বলে-রাহুল দ্রাবিড়, ইংল্যান্ডের এন্ড্রু স্ট্রাস, শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনে, দক্ষিণ আফ্রিকার শন পোলক, নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রধান নির্বাহী ডেভিড হোয়াইট, আম্পায়ার রিচার্ড ক্যাটেলবোরো, আইসিসি ম্যাচ রেফারিদের প্রধান রঞ্জন মাদুগালে এবং ক্লার কনর।