২০১৭ সালের জুনে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার একবছর পর প্রথম টেস্ট খেলতে নামে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। এরপর এখন পর্যন্ত ৬টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে তারা। অর্থাৎ পাঁচ বছরে মাত্র ৬টি টেস্ট খেলেছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান। ফলে এতো কম টেস্ট খেলায় খুশি নন আফগানদের সেরা স্পিনার রশিদ খান। রশিদের দাবি, আরও বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলতে চান তারা।
স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট আঙ্গিনায় পথচলা শুরু হয় আফগানিস্তানের। এরপর বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলে আফগানরা। রশিদ জানিয়েছেন, বড় দলগুলোর বিপক্ষে টেস্ট খেলার জন্য তারা মুখিয়ে আছেন। দল হিসেবে আরও টেস্ট খেলতে ইচ্ছুক আফগানিস্তান।
টেস্টে নবাগত হলেও বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১টি করে জয় রয়েছে আফগানিস্তানের। তবে পাঁচ বছরে মাত্র ছয়টি টেস্ট খেলতে পেরে হতাশ রশিদ। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলার স্বপ্ন ঝুলে আছে আফগানদের।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার সাথে টেস্ট খেলার কথা ছিল আফগানিস্তানের। তবে করোনার কারণে সেটি স্থগিত হয়। পরে দু’দেশের ক্রিকেট বোর্ড ঠিক করেছিল, ২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর হোবার্টে হবে একমাত্র টেস্টটি। কিন্তু দেশটিতে তালেবান শাসন শুরু হলে নারী ক্রিকেটের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সেই টেস্টটি স্থগিত করে দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
শুক্রবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রশিদ খান বলেন, “একজন খেলোয়াড় হিসেবে এটি (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট স্থগিত এখনও) আপনাকে হতাশ করবেই। কারণ আপনি সবসময় বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলতে মুখিয়ে থাকেন। এখানে বিষয়টি হলো নিজের স্কিল বাড়ানো এবং নতুন জিনিস আয়ত্ব করা।”
বর্তমানে গুজরাট টাইটান্সের হয়ে আইপিএল খেলছেন রশিদ খান। তিনি বলেন, “অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই ম্যাচটির জন্য আমরা সবাই অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু মাঝেমাঝে সবকিছু আপনার পক্ষে থাকে না। আশা করি তাদের বিপক্ষে খুব দ্রুতই খেলার সুযোগ আসবে।”
বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগে জনপ্রিয় ক্রিকেটার রশিদ। তবে রশিদ মনে করেন, বড় মাপের ক্রিকেটার হতে টেস্ট ক্রিকেট খেলা অপরিহার্য। তিনি বলেন, “আপনার বোলিং সম্পর্কে আরও জানতে আপনি দীর্ঘ স্পেল বল করতে চান। আমি আশা করি, আগামী কয়েক বছরে আমরা আরও টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবো।”
ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং পাকিস্তানের মাটিতে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা আছে রশিদের। রশিদ মনে করেন, এমন অভিজ্ঞতা টেস্টে ভালো করতে সহায়তা করবে। রশিদ খান বলেন, “বিভিন্ন দেশের উইকেট এবং কন্ডিশন ভিন্ন। আপনাকে ভিন্নভাবে চিন্তা করতে হবে এবং এটি আপনার খেলায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। এ অভিজ্ঞতা মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী করে তুলবে আপনাকে। এটি আমাকেও অনেক সাহায্য করেছে।”
বোলিংয়ের মতো নিজের ব্যাটিংয়ে আরও বেশি ভালো করার ইচ্ছা রশিদের। ফলে ব্যাটিংয়ের প্রতি আরও বেশি নজর দেওয়ার কথা জানালেন রশিদ। বলেন, “আমার মনে হয়, এখনকার চেয়ে আরও অনেক ভালো ব্যাটার হয়ে উঠতে পারি আমি। এ জায়গাটায় আরও দায়িত্ব নেওয়া উচিত আমার।”
তিনি আরও বলেন, “ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছি। গত কয়ের বছর ব্যাটিংয়ে আমার প্রতি প্রত্যাশা বেড়েই যাচ্ছে। যাতে গুরুত্বপূর্ণ ২০-২৫ রান করতে পারি। আমি জানি, আমার সেই প্রতিভা ও স্কিল আছে। এখন আসল ব্যাপার হলো- নিয়মিত ভালো করার আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলা।”
দেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৫টি টেস্ট, ৮০টি ওয়ানডে ও ৫৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ২৩ বছর বয়সী রশিদ খান। টেস্টে ৩৪টি, ওয়ানডেতে ১৫১টি ও টি-টোয়েন্টিতে ১০৫টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
স্পোর্টসমেইল২৪/আরএস