তিন টেল-এন্ডার ব্যাটসম্যান কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম-ইশ সোধি-নিল ওয়াগনারের দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুন্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট ড্র করলো স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। আর এ ড্রয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতলো কিউইরা।
শেষ দিকে তিন ব্যাটসম্যান ৩৬৮ বল মোকাবেলা করে দলকে হারের মুখ থেকে রক্ষা করে ড্র’র স্বাদ দেন নিউজিল্যান্ড। ড্র’তে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতে কিউইরা। কারণ, অকল্যান্ডে সিরিজের প্রথম টেস্ট ইনিংস ও ৪৯ রানে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড।
সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জিততে পঞ্চম ও শেষ দিনে আরও ৩৪০ রান করতে হতো নিউজিল্যান্ডকে। টেস্ট জিতে সিরিজ সমতায় শেষ করতে প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট শিকার করতে হতো ইংল্যান্ডের। কিন্তু ম্যাচের পঞ্চম ও শেষদিনে ১২৪ দশমিক ৪ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৫৬ রান করে টেস্ট ড্র করে নিউজিল্যান্ড।
৯ উইকেটে ৩৫২ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। ফলে ম্যাচ জয়ের জন্য চতুর্থ দিন ৩৮২ রানের টার্গেট পায় নিউজিল্যান্ড। সেই লক্ষ্যে চতুর্থ দিন শেষে বিনা উইকেটে ৪২ রান করেছিল কিউইরা। দুই ওপেনার টম লাথাম ২৫ ও জিত রাভাল ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। রাভাল কোন রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। এরপর মাত্র ১ বল মোকাবেলা করে শূন্য হাতে ফিরেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। পঞ্চম ও শেষ দিনের প্রথম দু’বলে দু’জনকেই ফিরিয়েছেন ইংল্যান্ডের পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড।
তাদের বিদায়ের পর মিডল-অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান রস টেইলর-হেনরি নিকোলস-উইকেটরক্ষক বিজে ওয়াটলিং দলের হাল ধরতে পারেননি। টেইলর ১৩, নিকোলস ১৩ ও ওয়াটলিং ১৯ রান করেন। ফলে ৫ উইকেটে ১৩৫ রানে পরিণত হয় নিউজিল্যান্ড। এক প্রান্ত দিয়ে দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা ফিরে গেলে, অন্যপ্রান্ত দিয়ে দলের রান সচল রেখেছিলেন ওপেনার লাথাম। ফলে সেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত ৮৩ রানে আউট হয়ে যান লাথাম। ১০টি চারের সহায়তায় নিজের ইনিংস সাজান এই বাঁ-হাতি ওপেনার।
দলীয় ১৬২ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। এ সময় প্রতিপক্ষের উপর নিজেদের আধিপত্য আরও বাড়িয়ে ম্যাচ জয়ের পরিকল্পনা কষে ইংল্যান্ড। কিন্তু সপ্তম উইকেটে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম-ইশ সোধি ইংল্যান্ডের বোলারদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান। এই জুটি ১৫৫ বল মোকাবেলা করে ৫৭ রান যোগ করেন। রান তোলার চেয়ে উইকেটে টিকে থাকাটাই মহাগুরুত্বপূর্ণ ছিলো। সেই কাজটিই করেছেন গ্র্যান্ডহোম-সোধি।
৪৫ রান করে গ্র্যান্ডহোম থামলেও নিল ওয়াগনারকে আবারও লড়াই শুরু করেন সোধি। টেল-এন্ডারের এই জুটি আরও বেশি বল মোকাবেলা করেন। দু’জনে ১৮৮ বল খেলেছেন। এরমধ্যে ১০৩ বল মোকাবেলা করে মাত্র ৭ রান করেন ওয়াগানার। ১৬৮ বল খেলে অপরাজিত ৫৬ রান করেন সোধি। মূলত শেষ দিকে শেষ তিন ব্যাটসম্যানের ৩৬৮ বল মোকাবেলাতেই নিশ্চিত হার থেকে ড্র’র স্বাদ নেয় নিউজিল্যান্ড।
ইংল্যান্ডের পক্ষে ব্রড-উড-লিচ ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি এবং সিরিজ সেরা হন ট্রেন্ট বোল্ট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ৩০৭ ও ৩৫২/৯ডি, ১০৬.৪ ওভার (ভিন্স ৭৬, স্টোনম্যান ৬০, গ্র্যান্ডহোম ৪/৯৪)
নিউজিল্যান্ড : ২৭৮ ও ২৫৬/৮, ১২৪.৪ ওভার (লাথাম ৮৩, সোধি ৫৬*, উড ২/৪৫)
ফল : ড্র
সিরিজ : দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতল নিউজিল্যান্ড
ম্যাচ সেরা : টিম সাউদি (নিউজিল্যান্ড)
সিরিজ সেরা : ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)।