দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে চট্টগ্রামের পর ঢাকাতেও ব্যর্থতার বেড়াজাল থেকে বের হতে পারলো না। চট্টগ্রাম টেস্টের ভুলগুলো ঢাকায় শুধরে নেওয়া কথা বলা হলেও সেই একই অবস্থা। চতুর্থ দিনে ৬১ দশমিক ৩ ওভারেই ২১৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ফলে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল ১৭ রানে জয় তুলে নিয়েছে।
এ জয়ে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিতসহ বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করার লজ্জাও দিল ক্যারিবীয়রা। এর আগে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।
ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিন সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১৭ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। যা টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানে অলআউটের রেকর্ড।
তবে প্রথম ইনিংস থেকে ১১৩ রানের লিড পাওয়ায় বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩১ রানের। প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪০৯ ও বাংলাদেশ ২৯৬ রান করেছিল।
২৩১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ওয়ানডে ম্যাচের ন্যায় মারমুখী মেজাজে খেলেন ওপেনার তামিম ইকবাল। দলীয় ৫৯ রানে সৌম্য সরকারকে (১৩) হারানোর পর ৪৪তম বলে ৬২ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৮তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তামিম। অর্ধশতক পেয়েই যেন ধৈর্যহারা হয়ে যান তামিম। সৌম্যকে আউট করা অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েটের স্পিনে হার মানেন তামিম। ৪৬ বলে ৯টি চারে ৫০ রান করে ‘বিশ্রামে’ যান তিনি।
দলীয় ৭০ রানে তামিমকে হারিয়ে চিন্তায় পড়া বাংলাদেশের সামনে আরও বিপদ বাড়িয়ে দেন কর্নওয়াল। তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে ১১ রানে থামান তিনি। শান্তর আউটের পরও জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৫৩, হাতে ছিল ৭টি উইকেট। তবে সেটি আর হয়নি।
অধিনায়ক মমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমের সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরেক স্পিনার জোমেল ওয়ারিকান। ১৪ রানেই মুশফিকের উইকেট তুলে নেন তিনি। এরপর প্রথম ইনিংসে ধৈর্য্যর পরীক্ষা দেওয়া মোহাম্মদ মিঠুনও ফিরেন ১০ রানে। তাকেও শিকার করেন কর্নওয়াল।
দলীয় ১১৫ রানে পঞ্চম উইকেট পতনে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে আশার আলো দেখান মমিনুল ও লিটন। উইকেট ধরে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন তারা। ফলে লড়াইয়ে ফেরার পথ পায় বাংলাদেশ। তবে পাঁচ রানের ব্যবধানে মমিনুল-লিটনের বিদায়ে আবারও ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ।
মমিনুলকে ২৬ রানে ওয়ারিকান ও ২২ রান করা লিটনকে বিদায় করেন কর্নওয়াল। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এমন আত্মহুতির মিছিলে ৯ নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি তাইজুল। তাকে ৮ রানে থামান কর্নওয়াল।
দলীয় ১৬৩ রানে অষ্টম উইকেট হারানোর ফলে জয় থেকে ৬৮ রান দূরে ছিল টাইগাররা। তখনো দিনের বাকি ছিল ৩৫ বল। ফলে ২ উইকেট রেখে দিন শেষ করার পথেই হাটচ্ছিলেন মিরাজ ও নাঈম। তবে দিনের শেষ ওভারটিতে দুই প্রান্তে ওয়ারিকান ও কর্নওয়ালের হাতে বল তুলে দেন ব্র্যাথওয়েট।
বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্বান্তে ওই ওভারের চতুর্থ বলে নাঈমকে ১৪ রানে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেন ব্র্যাথওয়েট। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে নাঈমের আউট হলে অতিরিক্ত আরও ৩০ মিনিট খেলার পরিধি বাড়ানো হয়। তখন ১ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৩ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের।
এরপর কর্নওয়ালকে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার মারেন মিরাজ। ফলে ১৮ রানের প্রয়োজন ছিল টাইগারদের। তবে ওয়ারিকানের করা ৬২তম ওভারের তৃতীয় বলে স্লিপে কর্নওয়ালের দুর্দান্ত ক্যাচে ইতি ঘটে মিরাজের ইনিংসের। স্বপ্ন ভঙ্গ হয় বাংলাদেশের। ২১৩ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। ৩১ রান করেন মিরাজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কর্নওয়াল ৪টি, ব্র্যাথওয়েট-ওয়ারিকান ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন রাকিম কর্নওয়াল।
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]