ঢাকা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম চারজনের ব্যাট থেকে এসেছে ১৮০ রান। বাংলাদেশের সমান সংখ্যক উপরের সারির ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে এসেছে ৬৯ রান! বাংলাদেশের ধসে পড়া এমন ব্যাটিং লাইন আপ ঠেকিয়ে রেখেছেন পাঁচ ও ছয় নম্বরে নামা মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাট।
দ্বিতীয় দিন শেষে ৬০ বলে ২৭ রানে মুশফিক ও ৬১ বলে ৬ রান করে অপরাজিত রয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। মিঠুনের ব্যাটিং গড় দেখলেই সহজেই বোঝা যায় উইকেট বাঁচাতে কতটা ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়েছে তাকে।
মুশফিক-মিঠুনের ঠিকে থাকা ব্যাটিংয়ে দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৪ উইকেটে ১০৫ রান। প্রথম ১৬ ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়া বাংলাদেশের লাইন আপকে ঠেকিয়ে রাখলেও শঙ্কা এখনো কমেনি।
ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ফলোঅন এড়াতে বাংলাদেশ এখনো আরও ১০৫ রান করতে হবে। প্রথম ইনিংসে ৪০৯ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অর্থাৎ, প্রথম ইনিংস থেকে সব মিলিয়ে এখনো ৩০৪ রানে পিছিয়ে মমিনুল হকের দল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৪০৯ রান যে বড় চাপ ছিল সেটি ব্যাট হাতে নেমে দেখিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। প্রায় দেড় বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম ওভারের শেষ বলে খালি হাতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন সৌম্য সরকার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার গাব্রিয়েলের শিকার হন তিনি।
এরপর উইকেটে তামিম সঙ্গী হওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খুলেন। তবে পরের বলেই বিদায়! শান্তকে বিদায় দেন গাব্রিয়েল। তার বোলিং তোপে ১১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
২ উইকেট হারিয়ে অধিনায়ক মমিনুল হককে নিয়ে ওয়ানডে মেজাজে দ্রুত রান তুলে পাল্টা আক্রমণ চালান ওপেনার তামিম ইকবাল। পেসার জোসেফকে টানা তিন ওভারে তামিম চারটি ও মমিনুল দু’টি চার মারেন। তামিম-মমিনুল ব্যাটে চড়ে ঘুড়ে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে পায় বাংলাদেশ।
তবে উইকেটে সেট হওয়া দুই ব্যাটসম্যানকে দ্রুত তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে আবারও চাপে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪টি চারে ২১ রান করা মমিনুলকে আউট করে ব্রেক-থ্রু দেন কর্নওয়াল। আর ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫২ বলে ৪৪ রান করে জোসেফের প্রথম শিকার হন তামিম।
৭১ রানে চতুর্থ উইকেট পতনের পর দিনের বাকি সময় অবশ্য আর উইকেট হারাতে হয়নি বাংলাদেশের। বাকি সময়ে রান তোলার গড় কমে গেলেও উইকেট বাঁচিয়ে দিন শেষ শেষ করেছেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। মুশফিক ২৭ ও মিঠুন ৬ রানে অপরাজিত আছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের গাব্রিয়েল ২টি, কর্নওয়াল-জোসেফ ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে প্রথম দিনের ৫ উইকেটে ২২৩ রান নিয়ে শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় দিন নাভার্স নাইন্টিতে থামেন বোনার। অফ-স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের ডেলিভারি ফ্লিক করে লেগ স্লিপে মোহাম্মদ মিঠুনকে ক্যাচ দেন তিনি।
টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৯০ রানে আউট হন বোরান। মিরাজের ৯৯তম টেস্ট শিকার হওয়ার আগে ২০৯ বলের ইনিংসে ৭টি চার মারেন বোনার। বোনার-সিলভা ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ডোগ হয় ৮৮ রান।
বোনারের মতো নব্বইয়ের ঘরে পৌঁছে হতাশা হন সিলভাও। তাইজুলের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ৯২ রানে থাকা সিলভা বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন। সিলভাকে শিকারে মাধ্যমে দেশের মাটিতে শততম টেস্ট উইকেট নেন তাইজুল।
দলীয় ৩৮৪ রানে সিলভার আউটের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪০৯ রানে গুটিয়ে যায় তারা। তবে বোনার-সিলভার মতো দলের সংগ্রহে অবদান রাখেন জোসেফ, করেন ৮২ রান। ২ রানের ব্যবধানে জোসেফ-জোমেল ওয়ারিকানকে আউট করেন আবু জায়েদ রাহী। আর শেষ ব্যাটসম্যান শ্যানন গাব্রিয়েলকে থামান তাইজুল।
বল হাতে বাংলাদেশের আবু জায়েদ ৯৮ রানে ও তাইজুল ১০৮ রানে ৪টি করে উইকেট নেন। এছাড়া মিরাজ-সৌম্য সরকার ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]