ভারতের মাটিতে সিরিজ জয়ের ‘বিরল প্রত্যাশা’ নিয়ে নিজের শততম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট। সিরিজের চার টেস্টের সবকটিতেই ইংলিশ দলকে নেতৃত্ব দিবেন ৩০ বছর বয়সি রুট। তিনি বেশ ভালো করেই জানেন, জুনে প্রথমবারের মতো আয়োজিত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলতে হলে ভারতে তাদের জয়ের বিকল্প নেই।
২০১২ সালে নাগপুরে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে টেস্ট অভিষেক ঘটেছিল রুটের। অ্যালিস্টার কুকের নেতৃত্বে ওই সময় ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল সফরকারীরা। যেটি ছিল ভারতের মাটিতে ইংলিশদের প্রথম সিরিজ জয়। তবে ইতিমধ্যে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে নিজেকে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন রুট।
শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) চেন্নাইয়ে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের উদ্বোধনী টেস্টকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন রুট। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমার মতে ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে হেটে চলাটা হচ্ছে সবচেয়ে গৌরবের মুহূর্ত। হাঁটতে হাঁটতে আমি যখন পেছনে ফিরে তাকাই তখন দেখি অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে কেভিন পিটারসেন। যাকে আমি কিশোর বয়স থেকে দেখছি এবং হেসেছি। আমি আমার শৈশবের স্বপ্ন নিয়ে বাস করছিলাম।’
রুট বলেন, ‘যখন আমি যখন খারাপ সময় পার করি অথবা পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকে, তখন আমি অতীতের সেই মুহূর্তগুলোকে ফিরে দেখার চেষ্টা করি। আর মনে করার চেষ্টা করি, ওই সময়কার অনুভূতিগুলো কেমন ছিল।’
অভিষেকের পরপরই ২০১৩ সালে বার্মিংহ্যামে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন রুট। ওই সময় অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে ঘুষি খান তিনি। তবে এখন পরিণত বয়সে তিনি একজন ব্যাটিং স্তম্ভ এবং দারুণ এক দলনেতা। ২০২০ সালে কোন সেঞ্চুরির দেখা পাননি রুট। তবে গত মাসে শ্রীলঙ্কা সফরে ২২৮ ও ১৮৬ রানের ইনিংস দিয়ে সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
রুটকে ‘লাখে একজন’ বলে মন্তব্য করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেন। তিনি বলেছেন, রুটকে নিয়ে ইংল্যান্ড গর্ব করতে পারে। ইংল্যান্ড দলের শ্রীলঙ্কা সফরকালে হুসেন ডেইলি মেইলে লিখেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে মাঠের ভেতর ও বাইরে ইংলিশ ক্রিকেটের জন্য সে অনেক কিছু করছে। গল দূর্গের দেয়ালে বসে একাকী ইংল্যান্ডের খেলা দেখা এক ভক্তকে তিনি যখন ফোন করেছিলেন, তখন আমি কেবল ভেবেছিলাম, সে একজন চিত্তাকর্ষক লোক।’
রুট বলেন, ওয়ার্নার ঘটনাটি তাকে ‘নতুন পর্যালোচনায়’ উদ্বুদ্ধ করেছে এবং তিনি দলের জোকার থেকে নিজেকে মনোযোগী গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এবং রান সংগ্রাহকে পরিণত করেছেন।
শ্রীলঙ্কায় রুটের ম্যাচজয়ী ইনিংসে সিরিজ নিশ্চিত হয় ইংল্যান্ডের। যা রুটকে ৮ হাজার ২৪৯ রানের মালিক বানিয়ে দেয়। যার মধ্যে রয়েছে ১৯টি সেঞ্চুরি। এর ফলে তিনি টপকে যান ইংল্যান্ড কিংবদন্তী জেফ বয়কট (৮,১১৪), পিটারসেন (৮,১৮১) এবং ডেভিড গাওয়ারকে (৮,২৩১)।
রুটের সতীর্থ জস বাটলার বলেন, ‘স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে সবসময় তিনি অসাধারণ ম্যাচ খেলেন। তিনি হচ্ছেন সুইং শটের অন্যতম ব্যাটসম্যান এবং স্পিানারদের বিপক্ষে তিনি দুর্দান্ত খেলে থাকেন। তিনি দারুণ ফর্মে রয়েছেন এবং নতুন বছরের সূচনার জন্য এটি হচ্ছে তার অসাধারণ জায়গা। আর দল তাকে দেখে এবং তার কাছ থেকে শিক্ষা নেয়।’
বাটলার আরও বলেন, ‘বর্তমানে বিদেশের মাটিতে টানা ৫টি টেস্টে জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। যেটি ১০০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে দলটির সেরা সফলতা। তারপরও স্বাগতিক ভারতকে মোকাবেলা করতে হলে রুটকে তার সব কলাকৌশল প্রয়োগ করতে হবে।’
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]