ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্যাট হাতে আট নম্বরে মাঠে নেমে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মেহেদীর সেঞ্চুরি এবং সাদমান ইসলাম ও সাকিব আল হাসানের অর্ধশত রানে প্রথম ইনিংসে ৪৩০ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ।
টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে ১০৩ রানে আউট হয়েছেন মিরাজ। এছাড়া সাকিব আল হাসান ৬৮, ওপেনার সাদমান ইসলাম ৫৯ ও মুশফিকুর রহিম-লিটন দাস ৩৮ রান করে করেছেন।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) টস জিতে প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ২৪২ রান। সাকিব ৩৯ ও লিটন দাস ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় দিনের ১৪তম বলেই বিদায় নেন লিটন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফল বাঁ-হাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিকানের ঘূর্ণি সামলাতে না পেরে বোল্ড হন লিটন। ৬৭ বলে ৬টি চারে ৩৮ রান করে ওয়ারিকানের চতুর্থ শিকার হন লিটন।
লিটন দ্রুত চলে যাওয়ায় দিনের শুরুতেই ব্যাট হাতে মাঠে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ। জুটি গড়েন সাকিব আল হাসানের সাথে। পঞ্চম উইকেটে সাকিব-মুশফিকুর রহিমের ১০৮ বলে ৫৯ রান ছিল ইনিংসের সেরা জুটি। ওই জুটিকে ছাপিয়ে যায় সাকিব-মিরাজের জুটি। সপ্তম উইকেটে ১৩০ বলে ৬৭ রান যোগ করেন তারা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে ১১০তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৩শ স্পর্শ করেন সাকিব-মিরাজ। তার আগে ওয়ারিকানের করা ৯৭তম ওভারের পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৫তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাকিব। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে প্রথম টেস্টেই হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান সাকিব।
হাফ-সেঞ্চুরির পর উইন্ডিজ স্পিনার রাকিম কর্নওয়ালের বলে বিদায় নেন সাকিব। হাল্কা লাফিয়ে ওঠা বলে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে প্রতিপক্ষের অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের হাতে ক্যাচ দেন সাকিব। ২৩১ মিনিট ক্রিজে থেকে ৫টি চারে ১৫০ বলে নিজের নান্দনিক ইনিংসটি সাজান সাকিব। নিজের ২৫তম ওভারে এসে প্রথম উইকেট পান কর্নওয়াল।
বিরতি থেকে ফিরে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মিরাজ। তার হাফ-সেঞ্চুরি পর ব্যক্তিগত ১৮ রানে (৭২ বল) বিদায় নেন তাইজুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার শ্যানন গাব্রিয়েলের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন তিনি। তাইজুল-মিরাজ জুটি ১১৭ বলে ৪৪ রান স্কোর বোর্ডে জমা করেন।
তাইজুলের আউটের পর দশ নম্বর ব্যাটসম্যান নাঈম হাসানকে নিয়ে দলের স্কোর বাড়াতে থাকেন মিরাজ। ব্যক্তিগত ৭১ রানে জীবনও পান মিরাজ। স্টাম্পিংএর হাত থেকে বাঁচেন তিনি। অন্যপ্রান্তে বেশ সাবলীল ব্যাট করতে থাকেন নাঈম। ১৪০তম ওভারে ওয়ানিকানকে তিনটি চার মারেন তিনি। আর ১৪৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর চারশতে পৌঁছায়। ২২তমবারের মতো নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে ইনিংসে চারশত রান করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
মিরাজ নার্ভাস-নাইন্টিতে পা দেওয়ার পর আউট হন নাঈম। ৪৬ বলে ৪টি চারে ২৪ রান করে এনক্রুমার বোনারের শিকার হন তিনি। তখন ৯২ রানে দাঁড়িয়ে মিরাজ। দলের স্কোর ৯ উইকেটে ৪১৬। এতে মিরাজের সেঞ্চুরি নিয়ে শঙ্কা জাগে। কারণ, বাংলাদেশের হাতে শেষ উইকেট। মিরাজের প্রয়োজন ছিল ৮ রান।
তবে শেষ পর্যন্ত ১৪৭তম ওভারের চতুর্থ বলে ওয়ারিকানের ডেলিভারিতে প্যাডেল সুইপে ২ রান তুলে ১৬০তম বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৩তম ম্যাচে প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মিরাজ। আট নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করা চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলেন মিরাজ।
এর আগে ২০০৪ সালে খালেদ মাসুদ, ২০১০ সালে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ২০১৩ সালে সোহাগ গাজী আট নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে সেঞ্চুরি করেছিলেন।
সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসকে বেশি দূর টানতে পারেননি মিরাজ। দলীয় ৪৩০ রান শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে লং-অনে ক্যাচ দিয়ে কর্নওয়ালের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ২২৪ মিনিট ক্রিজে থেকে ১৬৮ বল খেলে ১৩টি চার মারেন মিরাজ। ১১ বলে ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ারিকান ১৩৩ রানে ৪টি উইকেট এবং কর্নওয়াল ২টি, রোচ-গ্যাব্রিয়েল-বোনার ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
[sportsmail24.com এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও। খেলাধুলার ভিডিও-ছবি এবং সর্বশেষ সংবাদ পড়তে ব্রাউজ করুন যেকোন ঠিকানায়। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্ট্রল করে নিতে আমাদের অ্যাপস ]