দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজ মাঠে ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখলো পাকিস্তান ক্রিকেট দল। ফাওয়াদ আলমের ব্যাটিং ও অভিষিক্ত বাঁ-হাতি স্পিনার নুমান আলির ঘূর্ণিতে করাচি টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। এ জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজের ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে দলের বিপদের সময়ে ব্যাট হাতে ১০৯ রানের মহামূল্যবান ইনিংস খেলেছিলেন ফাওয়াদ। আর দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৪৫ রানে গুটিয়ে বড় ভূমিকা রাখেন দুই স্পিনার নুমান ও ইয়াসির শাহ। নুমান ৩৫ রানে ৫টি ও শাহ ৭৯ রানে নেন ৪ উইকেট। ফলে সিরিজের প্রথম টেস্ট জিততে মাত্র ৮৮ রানের টার্গেট পায় পাকিস্তান। ২২ দশমিক ৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান।
প্রথম ইনিংসে ১৫৮ রানের পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে তৃতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে ১৮৭ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ২৯ রানে এগিয়েছিল প্রোটিয়ারা। শেষ বিকেলে ১৭৫ থেকে ১৮৭ রানে পৌঁছাতে ৩ উইকেট হারিয় চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ম্যাচ বাঁচাতে চতুর্থ দিন অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। তবে দিনের প্রথম বলেই ধাক্কা খায় সফরকারীরা। ২ রান নিয়ে শুরু করা নাইটওয়াচম্যান কেশব মহারাজকে বোল্ড করেন পাকিস্তানের পেসার হাসান আলি।
১৯ বল পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় ধাক্কা দেন স্পিনার ইয়াসির শাহ। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক কুইন্টন ডি কককে ২ রানের বেশি করতে দেননি তিনি।
দিনের শুরুতে ৫ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এখান থেকে দলকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন তেম্বা বাভুমা ও জির্ওজি লিন্ডে। সাবধানতা অবলম্বন করে এগোতে থাকেন তারা। কিন্তু তাদের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান স্পিনার নোমান। ২৯ বলে ১১ রান করা লিন্ডেকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন নোমান। ৮৮ বলে ৪২ রান যোগ করেন বাভুমা ও লিন্ডে।
এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার টেল-এন্ডারের দুই ব্যাটসম্যান কাগিসো রাবাদা ও এনরিচ নর্টিকে দ্রুত ফিরিয়ে প্রতিপক্ষকে বড় টার্গেট ছুঁড়ে দেওয়ার পথ বন্ধ করে ফেলেন নোমান। আর শেষ ব্যাটসম্যান বাভুমাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস ২৪৫ রানেই শেষ করেন নোমান। এর মাধ্যমে অভিষেক টেস্টে পাঁচ উইকেট শিকার করে রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান ৩৪ বছর বয়সী নুমান। পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নেমেই পাঁচ উইকেট শিকারের ১২তম ও বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেকেই পাঁচ উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে নবম স্থানে তিনি।
আইডেন মার্করাম ৭৪ ও ভ্যান ডার ডুসেনের ৬৪ রানের পর দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন বাভুমা।
৮৮ রানের সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে ২৩ রানেই ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। দুই ওপেনার ইমরান বাট ১২ ও আবিদ আলি ১০ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকার এনরিচ নর্টির বলে আউট হন। এরপর তৃতীয় উইকেটে ৮৫ বলে ৬৩ রান করে পাকিস্তানের জয়ের পথ সহজ করে ফেলেন আজহার আলি ও অধিনায়ক বাবর আজম।
বাবর ৩৯ বলে ৩০ রানে থামলেও ফাওয়াদকে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন আজহার। ফাওয়াদ ৪ ও আজহার ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা : ২২০ ও ২৪৫, ১০০.৩ ওভার (মার্করাম ৭৪, ডুসেন ৬৪, নোমান ৫/৩৫)
পাকিস্তান : ৩৭৮ ও ৯০/৩, ২২.৫ ওভার (আজহার ৩১*, বাবর ৩০, নর্টি ২/২৪)।
ফল : পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা : ফাওয়াদ আলম (পাকিস্তান)।
[sportsmail24.com এর ওয়েবসাইট এখন sportsmail.com.bd ঠিকানাতেও ব্রাউজ করে পড়তে পারবেন। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস থেকেও খেলাধুলার সকল নিউজ পড়তে পারবেন। ইনস্ট্রল করুন স্পোর্টসমেইল২৪.কমের অ্যাপস ]