ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের ফাইনালে শনিবার মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। শুরু থেকেই দাপট খেললেও শ্রীলঙ্কার সাথে দ্বিতীয় ম্যাচে বিশাল ব্যবধানে হেরে যায় মাশরাফিরা। অন্যদিকে সিরিজের ধুকতে থাকা হাথুরু শ্রীলঙ্কা শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে দারুণভাবে ফাইনালে ওঠেছে।
ফাইনালে মুখোমুখি হওয়ার আগে শুক্রবার দুই দলের ক্যাপটনই মুখোমুখি হয়েছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। জানালেন সিরিজের শিরোপা জয়ে নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা।
ফাইনালের আগে লিগ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই লজ্জাজনক ব্যাটিংয়ে হারের পর চাপ থাকলেও আত্মবিশ্বাসে কোন চিড় ধরেনি বলে জানান অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
বলেন, ‘ফাইনাল ম্যাচে জেতার জন্য আমরা সবাই উদগ্রীব হয়ে আছি। এটা সত্যি কথা। যদি হতে পারি, তবে এমন শিরোপা প্রথমবারের মতো হবে। আসলে হওয়ার আগ পর্যন্ত এটা নিয়ে বেশি চিন্তা করতে থাকলে আমার কাছে মনে হয় বেশি চাপ এসে দাঁড়াবে। বিশেষ করে ফাইনাল ম্যাচে একটা চাপ থাকেই। যদি বৃহস্পতিবার শ্রীলংকার বিপক্ষেও ম্যাচটি জিততাম তাও থাকতো। আমার কাছে মনে হয় গতকাল হারাতে চাপটা আরও কমে গেছে। চাপ সব সময়ই থাকে এবং জয়টা আমরা অবশ্যই চাই।’
নিজেদের ওয়ানডে ক্রিকেটে এ প্রথম ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জয়ের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলে আনন্দের মাত্রা অনেক বেশিই হবে বলে জানান মাশরাফি।
তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আমরা যদি জিততে পারি, এটা অনেক আনন্দের হবে। সব কিছু নির্ভর করছে আসলে কালকে (শনিবার) আমরা কেমন খেলব, কেমন শুরু করব ম্যাচটা। আমাদের নিজেদের পরিকল্পনাগুলোর প্রতি ফোকাস রাখতে হবে।’
লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ৮২ রানে অলআউট নিয়ে আবারও কথা বলতে হয়েছে মাশরাফিকে। তবে ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে জবাব দিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত বলে মনে করেন ম্যাশ।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এ সফল ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, ‘তারা (শ্রীলঙ্কা) যেভাবে আক্রমনাত্মক ক্রিকেট খেলেছে ও বোলিং করেছে, আমরা ঠিক পাল্টা জবাব দিতে পারিনি। আমরা হয়তোবা কোন কারণে পিছিয়ে ছিলাম। হয়তোবা কাউন্টার অ্যাটাক করতে পারলে বুঝতে পারতাম আসলে কী হয়েছে। ফাইনালেও তারা বেশ শক্তভাবে আক্রমণ করবে এবং শক্তভাবে তাদের জবাব দেয়ার আশা করছি।’
মাশরাফি বলেন, ‘ওয়ানডে ম্যাচে যেটা হয়, আপনাকে কম্ফোর্টেবল জোনে রান নিয়ে যেতে হয়। বোলিং করলে সেটাও কম্ফোর্টেবল জোনে রাখতে হয়। কালকে (বৃহস্পতিবার) যেটা হইছে সেটা অপ্রত্যাশিত। ৮০ রান আপনি প্রত্যাশাই করতে পারেন না। আমরা চাই একটি স্বস্তির জায়গায় থাকতে। অন্তত যে ফাইট করা যায়। সেই জায়গায় থাকলে আমরা ভাল খেলতে পারব। সব নির্ভর করছে আমরা শুরুটা কেমন করি। যেহেতু ওরা কাল শুরুতে আর্লি উইকেট পেয়েছে, রান আউট হয়েছে। রান আউট অনেক বড় ফ্যাক্টর ছিল। আমরা চাই না যে কাল এই জিনিসগুলা হোক।’
এদিকে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস অনেকখানি বেড়ে গেছে শ্রীলঙ্কার। তবে ফাইনালের লড়াইয়ে বাংলাদেশকেই ফেভারিট বলছেন চান্ডিমাল।
বলেন, ‘ঘরের মাঠে বাংলাদেশ খুবই ভালো দল। তাদের কিছু ভালো ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রয়েছে। ফাইনালে তারাই ফেভারিট। তবে আমাদের যেটা করতে হবে ম্যাচের পরিকল্পনা কাজে লাগিয়ে সঠিক বাস্তবায়ন করে জিততে হবে।’
উল্লেখ্য, নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে দেশের মাটিতে তিনটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল ছিল বাংলাদেশের প্রথম কোন শিরোপা লড়াই। এরপর ২০১২ সালে এশিয়া কাপের ফাইনাল এবং ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপের ফাইনাল। তবে দুভার্গ্য, তিনটি ফাইনালেই রানার-আপ হয়ে সন্তুষ্ঠ থাকে বাংলাদেশ।