পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম তিনটিতে টানা হেরে সিরিজ পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে আগেই। তাবে আজ (শুক্রবার) সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে জয় তুরে নিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই হোয়াইটওয়াশের হাত থেকে রেহাই পেল অস্ট্রেলিয়া।
বোলিং নৈপুণ্যে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচে বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যের পর ব্যাটসম্যান ট্রাভিস হেডের ৯৬ রানের কল্যাণে ইংল্যান্ডকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
অ্যাডিলেডে টস জিতে ইংল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় অস্ট্রেলিয়া। ব্যাটিংয়ে নেমে মহা বিপদে পড়ে ইংল্যান্ড। ৮ রানের মধ্যে উপরের সারির পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারায় ইংলিশরা। দলীয় ০, ৪, ৪, ৬ ও ৮ রানে পাঁচ উইকেটের পতন ঘটে ইংল্যান্ডের।
প্রথম ওয়ানডেতে ১৮০ রানের ইনিংস খেলা জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো ও উইকেটরক্ষক জশ বাটলার শূন্য হাতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন। এই তিন ব্যাটসম্যানই ডান-হাতি পেসার জশ হ্যাজেলউডের শিকারে পরিণত হন। ইংল্যান্ডের অন্য দু’টি উইকেট নিয়েছেন প্যাট কামিন্স। অ্যালেক্স হেলস ৩ ও জো রুট রানের খাতা খোলার আগেই কামিন্সের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
মাত্র ৮ রানে দলের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় ইংল্যান্ড। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক এউইন মরগান ও মঈন আলী। দু’জনের সতর্ক ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডের পালে রানের হাওয়া লাগে। কিন্তু দলীয় ৬১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এবার উইকেট পতনের তালিকায় নাম তুলেন মরগান। ৬১ বলে ৩৩ রান করে কামিন্সের তৃতীয় শিকার হন মরগান।
দলপতির মত নামের পাশে ৩৩ রান রেখে ফিরে যান মঈনও। এরপর দেড়শ নিচে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে ইংল্যান্ড। কিন্তু সেটি হতে দেননি অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে দলকে লড়াই করার পুঁজি এনে দেন ওকস। শেষ দিকে তাকে সঙ্গ দেন টম কারান। এই জুটির ৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও ১৯৬ রান পর্যন্ত যেতে পারে ইংল্যান্ড।
ওকস ৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৮২ বলে ৭৮ রান ও ৩৫ বলে ৩৫ রান করেন কারান। অস্ট্রেলিয়ার কামিন্স ৪টি এবং হ্যাজেলউড ও তাই ৩টি করে উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৯৭ রানের টার্গেটে পথচলা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ারও। অ্যারন ফিঞ্চের পরিবর্তে ওপেনার হিসেবে নামা ট্রাভিস হেড একপ্রান্ত আগলে রানের চাকা সচল রাখলেও দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা উইকেটে থিতু হতে পারেননি। নিয়মিত বিরতিতেই উইকেটের পতন ঘটেছে। এক পর্যায়ে ১৩৬ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। এতে ম্যাচে ফিরে ইংল্যান্ড। এসময় ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ১৩, ক্যামেরুন হোয়াইট ৩, অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ৪, মিচেল মার্শ ৩২ ও মাকর্স স্টোয়িনিস ১৪ রান করেন ফিরেন।
এর পর ষষ্ঠ উইকেটে টিম পাইনকে নিয়ে ৪৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন হেড। সেই সাথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দোঁড়গোড়ায়ও পৌছে যান তিনি। কিন্তু দুভার্গ্য তার। ৯৬ রানে থেমে যান তিনি। ইংল্যান্ডে পেসার মার্ক উডের শিকার হবার আগে ৯৬ বল মোকাবেলা করে ১৫টি চারে দায়িত্বশীল ইনিংসটি সাজান হেড।
হেডের বিদায়ের পর ক্রিজে গিয়ে মাত্র ৩ রান তুলে ফিরেন কামিন্স। এতে উত্তেজনা তৈরি হয় ম্যাচে। কিন্তু দলকে জয়ের স্বাদ দিতে নিজের কাঁধেই দায়িত্ব তুলে নেন পাইন। ৩১ বলে অপরাজিত ২৫ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন পাইন। ইংল্যান্ডের আদিল রশিদ ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কামিন্স।
আগামী ২৮ জানুয়ারি পার্থে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ১৯৬/১০, ৪৪.৫ ওভার (ওকস ৭৮, কারান ৩৫, কামিন্স ২/২৪)।
অস্ট্রেলিয়া : ১৯৭/৭, ৩৭ ওভার (হেড ৯৬, মিচেল মার্শ ৩২, রশিদ ৩/৪৯)।
ফল : ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : প্যাট কামিন্স (অস্ট্রেলিয়া)।
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে ইংল্যান্ড।