তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর এবার ওয়ানডে সিরেজেও ওয়েন্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিল ভারত। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ৬ উইকেটে জয় পেয়েছে ভারত।
দ্বিতীয় ওয়ানডের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচেও সেঞ্চুরি করেছেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তার অনবদ্য সেঞ্চুরিতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে জয় পেয়েছে ভারত। এর ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টিতে পরিত্যক্তের পর দ্বিতীয় ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ৫৯ রানে জিতেছিল ভারত। তৃতীয় ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মারকুটে ওপেনার ক্রিস গেইলের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে আকাশ ছোয়া সূচনা পায় ক্যারিবীয়রা।
টি-২০ মেজাজে খেলে প্রথম ১০ ওভারেই দলকে ১১৪ রানের সূচনা এনে দেন গেইল ও এভিন লুইস। এর মধ্যে গেইল ৫টি ছক্কা ও ৪টি চারে ৩৩ বলে ৬৫ রান করেন। লুইস ২৮ বলে ৪৩ রান করেন। এ দশ ওভারে ৮টি ছক্কা মারেন গেইল-লুইস। ওয়ানডেতে প্রথমে ব্যাট করে প্রথম ১০ ওভারে সর্র্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড এটি। এছাড়া ২০১৫ সালের পর ওয়ানডেতে প্রথম দশ ওভারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এটি।
প্রথম দশ ওভারে গেইল-লুইস ঝড় দেখে ক্রিকেট বিশ্ব। ক্রিকেট প্রেমিদের এ ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং থেকে বঞ্চিত করেন ভারতের লেগ-স্পিনার যুজবেন্দ্রা চাহাল। ৪৩ রানেই লুইসকে ফিরিয়ে দেন তিনি। লুইসকে হারানোর পর খেই হারিয়ে ফেলেন গেইলও। পরের ওভারে ভারতের বাঁ-হাতি পেসার খলিল আহমেদের বলে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে সরঘরে ফেরেন গেইল। ৮টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৪১ বলে ৭২ রান করেন গেইল।
১২১ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানের চাকা মন্থর হয়ে যায়। পরের দিকের দুই ব্যাটসম্যান শাই হোপ ও শিমরোন হেটমায়ার উইকেট ধরে খেলতে মনোযোগী হন। এ অবস্থায় ২২ ওভার শেষে বৃষ্টি নামলে এক ঘণ্টার বেশি খেলা বন্ধ থাকে। ফলে ম্যাচটি ৩৫ ওভারে নির্র্ধারণ হয়।
পুনরায় মাঠে নেমে মারমুখী মেজাজে ব্যাট চালান ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউই। তারপরও ৩৫ ওভারে ৭ উইকেটে ২৪০ রানের সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হোপ ২৪, হেটমায়ার ২৫, পুরান ৩০ রান করেন। ভারতের খলিল ৭ ওভারে ৬৮ রানে ৩ উইকেট নেন।
৩৫ ওভারে ২৫৫ রানের জয়ের লক্ষ্য পায় ভারত। সেই লক্ষ্যে দলীয় ২৫ রানেই ওপেনার রোহিত শর্মাকে হারায় ভারত। এরপর কোহলিকে নিয়ে জুটি গড়েন আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান। কিন্তু এবারও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। ৩৬ বলে ৩৬ রান করে ফিরেন ধাওয়ান। কোহলির সাথে ৬৬ রানের জুটি গড়েন।
ধাওয়ানের বিদায়ের উইকেটে আসেন উইকেটরক্ষক ঋসভ পান্থ। ১ বলের বেশি খেলতে পারেননি তিনি। শূন্য হাতে পান্থ ফিরলে ৯২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় ভারত।
১ রানে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা বেশ ভালোভাবেই সামলে উঠেন কোহলি ও পাঁচ নম্বরে নামা শ্রেয়াস আইয়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে প্রতিরোধ করেন তারা। কোহলি-আইয়ারের ব্যাটিং নৈপুুণ্যে ২৭তম ওভারেই ২শ রান স্পর্শ করে ভারত।
জয়ের জন্য ৪৮ বলে ৫১ রান প্রয়োজন পড়ে ভারতের। কাজটি বেশ সহজই ছিল তাদের। কিন্তু দলের জয় নিশ্চিত না করেই মাঠ ছাড়তে হয় দারুন খেলতে থাকা আইয়ারকে। ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৪১ বলে ৬৫ রান করে আউট হন তিনি।
এরপর কেদার যাদবকে নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৩তম সেঞ্চুরির দেখা পান কোহলি। সেই সাথে ১৫ বল বাকি রেখে ভারতের ম্যাচ ও সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলেন কোহলি। ১৪টি চারে ৯৯ বলে অপরাজিত ১১৪ রান করেন কোহলি। ১২ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন কেদার। ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হয়েছেন ভারতের কোহলি।
টি-২০ ও ওয়ানডে লড়াই শেষে এবার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগামী ২২ আগস্ট থেকে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে ৩০ আগস্ট।