জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য ৩১৫

স্পোর্টসমেইল২৪ স্পোর্টসমেইল২৪ প্রকাশিত: ০৮:১৭ পিএম, ২৬ জুলাই ২০১৯
জয়ের জন্য বাংলাদেশের লক্ষ্য ৩১৫

বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান কুশল পেরেরার সেঞ্চুরিতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩১৪ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। ৯৯ বলে ১১১ রান করেন পেরেরা। ফলে জয় পেতে বাংলাদেশের টার্গেট এখন ৩১৫ রান।

বিশ্বকাপের ব্যর্থতা ভুলে নতুনভাবে পথচলার যাত্রা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করে বাংলাদেশ। তবে এ ম্যাচে বেশি রোমাঞ্চিত ছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ইনজুরির কারণে ও সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বিশ্রামে থাকাতে সফরে আসার আগ মূর্হুতে অধিনায়কত্ব পান তামিম।

বাংলাদেশের ১৪তম অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয় তামিমের। তবে অধিনায়কের শুরুটা ভালো হয়নি তামিমের। টস ভাগ্যে হারেন তিনি। তাই প্রথমে ফিল্ডিংয়ে নামতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

ফিল্ডিং পাওয়ায় বাংলাদেশের বোলিং ওপেন করেন শেষ মূর্হুতে দলে সুযোগ পাওয়া ডান-হাতি পেসার শফিউল ইসলাম। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ পান তিনি। দু’টি স্লিপ রেখে নিজের প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান দেন শফিউল। নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে শ্রীলংকার ওপেনার আবিস্কা ফার্নান্দোকে পরাস্ত করেন তিনি। এতে লেগ বিফোরের আবেদন করে বাংলাদেশ।

আম্পায়ার সাড়া না দিলে, রিভিউ নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম। কিন্তু রিভিউতে ফার্নান্দোকে নট আউট ঘোষনা করেন অন-ফিল্ড আম্পায়ার। ফলে রিভিউ নষ্ট হয় বাংলাদেশের। এতে কিছুটা হলেও হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে।

তবে দ্রুতই বাংলাদেশের হতাশা মুছে দেন শফিউল। একই ওভারের পঞ্চম বলে ঐ ফার্নান্দোকে বিদায় দেন শফিউল। প্রথম স্লিপে থাকা সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিয়ে ৭ রানে আউট হন ফার্নান্দো। ফলে প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ওয়ানডেতে উইকেট শিকারের স্বাদ নেন শফিউল। ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন তিনি। নিয়েছিলেন ৬১ রানে ২ উইকেট।

দলীয় ১০ রানে প্রথম ব্যাটসম্যান আউটের পর উইকেটে আরেক ওপেনার ও শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিমুথ করুনাত্নের সঙ্গী হন উইকেটরক্ষক পেরেরা। জুটি বেঁধে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন এ দু’ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ বোলারদের বিপক্ষে মারমুখী মেজাজ দেখান করুনারত্নে-পেরেরা। তাই ১০ ওভারেই ৭৭ রান পেয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। করুনারত্নে ২৩ বলে ২৯ ও পেরেরা ২৪ বলে ৩৫ রান করেন।

পরবর্তীতে এ জুটির কল্যাণে ১৪তম ওভারেই শতরানের কোটা স্পর্শ করে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু শতরানের কিছুক্ষণ পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যান করুনারত্নে-পেরেরা। এই জুটিতে ভাঙ্গন ধরান বাংলাদেশের অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ৩৭ বলে ৩৬ রান করে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন করুনারত্নে। তার ইনিংসে ৪টি চার ছিল। দ্বিতীয় উইকেটে ৭৩ বলে ৯৭ রান যোগ করেন করুনারত্নে-পেরেরা।

করুনারত্নে ফিরলে উইকেটে পেরেরার সঙ্গী হন কুশল মেন্ডিস। দ্রুতই উইকেটে সেট হয়ে এই জুটি দলের রানের সচল রাখেন। এতে বড় সংগ্রহের পথে হাটতে থাকে শ্রীলঙ্কা। এ অবস্থায় ২৮তম ওভারের চতুর্থ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন পেরেরা। বাংলাদেশে অফ-স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেনকে বাউন্ডারি মেরে ৮২তম বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।

বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তোলার পর নিজের ইনিংসকে বড় করতে পারেননি পেরেরা। সৌম্য সরকারের বলে মোস্তাফিজুর রহমানকে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১১১ রানে থামেন পেরেরা। তার ইনিংসে ১৭টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল। তৃতীয় উইকেটে মেন্ডিসের সাথে ১০৬ বলে ১০০ রান দলকে উপহার দেন পেরেরা।

৩৩তম ওভারে চতুর্থ বলে দলীয় ২০৭ রানে আউট হন পেরেরা। পরের ওভারে বিদায় ঘটে মেন্ডিসেরও। বাংলাদেশের পেসার রুবেল হোসেনের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মেন্ডিস। ৪টি চারে ৪৯ বলে ৪৩ রান করেন তিনি।

পেরেরার সেঞ্চুরির সাথে করুনারত্নে-মেন্ডিসের ছোট ছোট ইনিংসে বড় সংগ্রহের পথ পায় শ্রীলঙ্কা। তাই উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের দেখানো পথে হাটতে থাকেন দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও লাহিরু থিরিমান্নে। দু’জনে দলকে তিনশ’র রানের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

দলীয় ২৭২ রানে থিরিমান্নেকে বিদায় দিয়ে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন মোস্তাফিজ। ৩০ বলে ২৫ রান করেন থিরিমান্নে। পরের ওভারে হার্ড-হিটার থিসারা পেরেরা আউট করে শ্রীলঙ্কার রানের লাগাম টেনে ধরার পথ তৈরি করেন শফিউল। ২ রান করেন পেরেরা।

৬ বলের ব্যবধানে মোস্তাফিজ-শফিউলের জোড়া আঘাতের পরও শ্রীলঙ্কার রানের লাগাম টেনে ধরতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। সাবেক অধিনায়ক ম্যাথুজের সাথে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ব্যাটিং শ্রীলঙ্কাকে তিনশ রানের কোটা স্পর্শ করায়। দলীয় ৩০২ রানে আউট হন ম্যাথুজ।

মোস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকার হবার আগে ৩টি চারে ৫২ বলে ৪৮ রান করেন ম্যাথুজ। ডি সিলভা-ম্যাথুজ সপ্তম উইকেটে ২৬ রান যোগ করেন লংকানদের স্কোর বোর্ডে। শেষ ওভারে ডি সিলভাকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান শফিউল। তারপরও শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩১৪ রানের বড় সংগ্রহ পায় শ্রীলঙ্কা।

বাংলাদেশের শফিউল ৬২ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া মোস্তাফিজ ২টি, মিরাজ-রুবেল-সৌম্য ১টি করে উইকেট নেন।



শেয়ার করুন :