ভারতের বিপক্ষে জিতলেই দ্বাদশ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার আশা বেঁচে থাকবে বাংলাদেশের। তবে হেরে গেলে আজই বিশ্বকাপ পর্ব শেষ করতে হবে টাইগারদের। সেক্ষেত্রে লিগ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি হবে বাংলাদেশের জন্য নিয়মরক্ষার। তবে ভারতের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না বাংলাদেশ। তাই ভারতের বিপক্ষের জয়টি হবে অনেক বেশি আনন্দের বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ভারতের বিপক্ষের ম্যাচে জিততে হলে ভাল খেলে জিততে হবে। ম্যাচ হারলে হয়তো আমাদের বিশ্বকাপ শেষ। এটা একটা ভাল চ্যালেঞ্জ, যদি আমরা ভাল খেলে জিততে পারি তবে সেটা হবে আরো আনন্দের।
৭ ম্যাচে ৩টিতে জয়, ৩টিতে হার ও ১টিতে বৃষ্টির কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে বাংলাদেশ। যে ৩টি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। তিনটি ছিলো দাপুটে। ঐ তিন জয় থেকে অনুপ্রেরণা খুজঁছেন মাশরাফি।
তাই অন্য দলগুলোর ম্যাচের ফলাফলের চেয়ে নিজেদের খেলায় বেশি মনোযোগি হতে চান মাশরাফি, অন্যদের দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। এই ধরণের টুর্নামেন্টে অন্যদের দিকে তাকিয়ে থেকে মনে করি না কোন লাভ আছে। এই পর্যন্ত এসেছি তিনটা ম্যাচ জিতে, আর একটা বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়েছে। যে কয়টা জিতেছি ভাল করে জিতেছি।
ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচে দু’দলই তিন শর বেশি রান করেছে। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩৩৭ রান করে ইংলিশরা। পরে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩০৬ রান করে ম্যাচ হারে ভারত। আজকের ম্যাচেও টস কোন ফ্যাক্টর হবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে মাশরাফি বলেন, আমরা যে দলের সঙ্গে খেলছি তারা রান তাড়া করতে পছন্দ করে। রান তাড়ায় ভাল দল। যদিও ইংল্যান্ডের সাথে তারা পারেনি। কারণ ইংল্যান্ডের বোলিং ভাল। টস জিতে ব্যাটিং করলে আপনাকে অনেক বড় স্কোরও করতে পারে। তো দিন শেষে দল যেটা চায় সেটাতেই থাকতে হবে। যেহেতু ব্যবহৃত উইকেট সবাই এখানে আগে ব্যাটিং করতে চায়। এটাই আসলে সাধারণ প্রক্রিয়া। তবে আমি নিশ্চত না টস কতটুকু সাহায্য করবে।
একরকম ডু-অর-ডাই ম্যাচ বাংলাদেশের। তাই চাপ আকাশ ছোয়া। তবে এই চাপের মধ্যেও ভালো খেলে জয়ের স্বাদ নিতে চান মাশরাফি, আমরা তো ভারতের বিপক্ষে অনেকবারই খেলেছি। বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, সব জায়গাই খেলেছি। চাপ থাকবেই। দেশের হয়ে যখন নামছেন প্রতিটি ম্যাচেই চাপ থাকবে। হয়তবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক কথা চলে, এইগুলা হয়। তো এইগুলো মনে হয় না আমাদের কোন সাহায্য করবে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে থাকাই ভাল। আমরা যদি ভাল খেলি, জিতি সেটাই হবে বড় অর্জন। সেদিকেই ফোকাস করা উচিত।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচ। তাই এমন ম্যাচে মানসিকভাবে শক্ত থাকাটা জরুরি বলে মনে করেন মাশরাফি, ‘যত ঠান্ডা থাকা যায় সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ উত্তাপটা এভাবে তৈরি হয়, খেলোয়াড়দের ধরে রাখাও কঠিন হয়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ হল নার্ভ ধরে রাখা এবং প্রতিনিয়ত মাঠে গিয়ে আমরা যে জিনিসগুলো করছি, সেগুলো ঠিকমত করা। ম্যাচের শুরুতে স্নায়ু উতত্তেজনা কাজ করে। তারপর আস্তে আস্তে ঠিক হয়। তাই গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মাঠে নেমে স্বাভাবিক থাকা।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের জয় চেয়েছিলো বাংলাদেশ-পাকিস্তান-শ্রীলংকা। একসাথে একদিনে এর আগে কখনো এক কাতারে শামিল হয়নি এশিয়ার দলগুলো। তাই এটিকে বড় ইতিবাচক বলে মনে করেন মাশরাফি, ক্রিকেটে এই প্রথম দেখলাম পুরো এশিয়া এক হয়েছে! অনুশীলনের কারণে ম্যাচের পুরোটা অবশ্য দেখতে পারিনি। ভারতের জন্য ম্যাচটা খুব কঠিন ছিল। কোহলি আর রোহিত যখন ব্যাট করছিল, মনে হচ্ছিল ওরা শুরুর ঘাটতি পুষিয়ে ফেলতে পারবে। ইংল্যান্ড দারুণ পরিকল্পনা নিয়ে বল করেছে। তবু ৪০ ওভার পর্যন্ত ভারত ম্যাচে ছিল। কিন্তু এরপরই তারা ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়।