দারুণ খেলছে বাংলাদেশ। সাকিবতো ফাটিয়ে দিচ্ছে। এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে আলোচিত পারফরমার তিনি। এতকাল জানা ছিল সাকিবের বোলিংয়ের ধার বেশি। এখন তো দেখা যাচ্ছে সাকিবের ব্যাট যেন খোলা তরবারি। সব নামি-দামি আর বাঘা বাঘা বোলাররাও সাকিবের উইলোর দাপটে চুপসে গেছে। মারের তোড়ে লাইন লেন্থ হারিয়ে ফেলছে। সাথে মাশরাফির ‘সেই বোলিংটা’ যদি যোগ হতো, তাহলে নির্ঘাত এতক্ষণে তোমাদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যেত। আর শেষ দুই ম্যাচের দিকে এভাবে চাতক পাখির মত তাকিয়ে থাকতে হতো না।
ওপরের কথাগুলো ভারতের অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেট লেখক, পশ্চিমবঙ্গের নামি ও ঐতিহ্যবাহী পত্রিকা আজকালের বিশেষ সংবাদদাতা দেবাশীষ দত্তের।
শুধু দেবাশীষ দত্তই নন। ভারতের অন্যতম নামী ক্রিকেট লেখক, দ্য টেলিগ্রাফের রিপোর্টার লোকেন্দ্র প্রতাপ শাহী আর দুই বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট লেখক গৌতম ভট্টাচার্য্যসহ ভারতীয় ক্রিকেট লেখক এবং রিপোর্টারদের মধ্যে যারা বিশ্বকাপ কাভার করতে এখন বার্মিংহ্যামে, তাদের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগের মুখে টিম বাংলাদেশের অকুণ্ঠ প্রশংসা।
পাশাপাশি টাইগারদের সম্পর্কে ভারতীয় মিডিয়ার ধারণাও পাল্টে গেছে। অনেকের সাথেই কথা বলে জানা হলো, তারা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের চেয়েও বরং বাংলাদেশ আর ভারত ম্যাচ উপভোগ করেন এবং বাংলাদেশকে এ মুহূর্তে পাকিস্তানের চেয়ে বেশি সমীহও করেন।
দ্য টেলিগ্রাফের হয়ে দীর্ঘ তিন যুগের বেশী ক্রিকেট কাভার করা লোকেন্দ্র প্রতাপ শাহীর কথা, ‘হ্যাঁ, এটা সত্যি নানা কারণেই ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ আর মর্যাদার লড়াই হয়ে গেছে। আছে, হয়তো থাকবেও।’ শাহী আরও যোগ করেন, ‘সেটা শুধু খেলার কারণেই নয়। রাজনৈতিক বৈরিতা, পূর্ব শত্রুতা, কাশ্মির ইস্যুসহ নানা ঐতিহাসিক কারণে সেই দেশ বিভাগের পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের শত্রু ভাবাপন্ন মানসিকতাই সেখানে প্রাধান্য পায়।’
সে কারণেই দু’দেশের ক্রিকেট লড়াই মাঠ ছাপিয়ে অন্য মাত্রা পায়। তবে ক্রিকেট লড়াই আর অন্যরকম প্রতিদ্বন্দ্বীতার আমেজের কথা চিন্তা করলে এখন বাংলাদেশ আর ভারত ক্রিকেট ম্যাচও পেয়েছে নতুন মাত্রা। এই ম্যাচকে ঘিরে একটা বাড়তি উত্তেজনার বাতাবরণও তৈরি হয়েছে।
গৌতম ভট্টাচার্য আর দেবাশীষ দত্ত অবশ্য এ মুহূর্তে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের চেয়ে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচকেই বেশি আকর্ষণীয়, প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন।