বিশ্বকাপের ৩৮তম ও নিজেদের সপ্তম ম্যাচে হারের স্বাদ পেল কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল। দিনের একমাত্র খেলায় ভারতকে ৩১ রানে হারিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
অপরাজিত থাকা ভারতের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে ৮ ম্যাচে ৫ জয় ও ৩ হারে মোট ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে ওঠে এসেছে ইংল্যান্ড। যার ফলে ৮ ম্যাচ খেলে ৯ পয়েন্টে থাকা পাকিস্তান এবং ৭ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে থাকা বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ালো ইংল্যান্ড।
টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩৩৭ রানের স্কোর দাঁড় করায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের বোলিং তোপে পড়ে ভারত। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রান সংগ্রহ করেন কোহলিরা। ফলে ৩১ রানে জয়ে স্বাদ পায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
৩৩৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার রাহুল শূন্য রানে আউট হলেও সেঞ্চুরি তুলে নেন আরেক ওপেনার রোহিত শর্মা। ১০৯ বল মোকাবেলা করে ১০২ রান করে আউচট হন তিনি। তার এ সেঞ্চুরি ১৫টি চারের মার রয়েছে।
রোহিত শর্মা ছাতা ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করে অধিনায়ক বিরাট কোহলি, তিনি করেন ৭৭ বলে ৬৬ রান। তার এ ৬৬ রানে কোন ছক্কার মার না থাকলে ছিল ৭টি চারের মার। কোলহির ইংল্যান্ডের বোলার শাসন করে হার্দিক পান্ডে।
৪৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ভারতীয় এ ব্যাটসম্যান। ৩৩ বলে ৪৫ রানের আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪টি দর্শর্ণীয় মার।
শেষ দিকে সাবেক অধিনায়ক এমএস ধোনী ও যাযেদা ব্যাট হাতে অপরাজিত থাকলেও জয়ের বন্দরে পৌঁচেত পারেনি ভারত। ধোনী ৩১ বলে ৪২ রানের অপরাজিত থাকেন। ভারতের ইনিংসে একমাত্র ছক্কার মারটি আসে ধোনীর ব্যাট থেকেই।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রানে থামে ভারতের ইনিংস।
এর আগে ভারতের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করে ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো ১৬০ রানের জুটি গড়ে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। জেসন রয় ফিফটি করে আউট হলেও সেঞ্চুরি করেই মাঠ ছেড়েছেন বেয়ারস্টো।
দলীয় ১৬০ রানে জেসন রয়ের বিধায়ে ইংল্যান্ড হারায় প্রথম উইকেট। কুলদীপ যাদবের বলে আউট হওয়ার আগে জেসন করেন ৬৬ রান। ৫৭ বলে ৭ চার আর ২ ছক্কায় ১৬তম হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসটি সাজান রয়। তার বিদায়ের পরও রানের চাকা ঠিকই সচল রাখেন বেয়ারস্টো। জো রুটকে রুটকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেই দলকে নিয়ে যায় দু’শত রানের কোটায়।
দলীয় ২০৫ রানে বেয়ারস্টোর বিদায়ে ভাঙে এ জুটি। মোহাম্মদ সামির বলে ঋষভ পন্থের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হলে ভাঙে ৪৫ রানের জুটি। তবে আউট হওয়ার আগেই বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন বেয়ারস্টো। হওয়ার আগে ১০৯ বলে ১০ বাউন্ডারি ও চার ওভার বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরিসহ করেন ১১১ রান।
এরপর ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক ইয়ান মরগান মাত্র ১ রান করে শামির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। ফলে ২০৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে বেন স্টেকস ও রুট মিলে ৭০ রানের পার্টনারশীপ গড়ে দলকে বড় স্কোরের পথে নিয়ে যায়। দলীয় ২৭৭ রানে রুট এর বিদায়ে ভাংগে এই জুটি। রুটকে হার্ডিক পান্ডিয়ার হাতে ক্যাচ বানিয়ে নিজের তৃতীয় শিকার বানান সামি। আউট হওয়ার আগে ৫২ বলে ২ চারে ৪৪ রান করেন রুট।
রুটের বিদায়ে ব্যাট হাতে নামা জস বাটলার ২০ রান করা কট এন্ড বোল্ড হয়ে সামির চতুর্থ শিকারে পরিণত হন। তবে এর আগেই ইংল্যান্ড পৌঁছে যায় তিনশ’ রানের কোটায়। ক্রিস ওকসকে ১ রানে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেটের কোটা পূরণ করেন শামি। নিজের প্রথম দুই ম্যাচে টানা ৪ উইকেট নেওয়া শামি এবার ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকে। ক্যারিয়ারে প্রথমবার নেন এক ইনিংসে ৫ উইকেট। তবে দলকে এগিয়ে নিতে টিকে থেকে স্টোকস ব্যাট চালিয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন।
দলীয় ৩৩৬ রানে নিয়ে আউট হন স্টোকস। জসপ্রিত বুমরাহ’র বলে আউট হওয়ার আগে ৫৪ বলে ৭৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। মারেন ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা। স্টোকের বিদায়ে শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে করে ৩৩৭ রান। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সামির ৫টি ছাড়া যাদব ও বুমরাহ ১টি করে উইকেট নেন।