প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২৪৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। তবে সহজ টার্গেট পেয়েও জয় তুলে নিতে পারেনি গতবারের রানার্সআপরা। উল্টো ৮৬ রানে হারের স্বাদ পেয়েছে তারা।
শনিবার (২৯ জুন) দিনের দ্বিতীয় ও বিশ্বকাপের ৩৭তম ম্যাচে লর্ডসে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ব্যাট হাতে নেমে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৩ রান করে অস্ট্রেলিয়া।
জবাবে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্কের ৫ উইকেট শিকারে ১৫৭ রানেই গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। এ জয়ে শীর্ষ স্থান আরও পোক্ত করলো সবার আগে সেমি নিশ্চিত করা অসিরা। অন্যদিকে এ পরাজয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলাটা কিউইদের জন্য আরও কঠিন হয়ে গেল।
২৪৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আজও নিউজিল্যান্ড দুই ওপেনার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। জটিল পিচে দেখেশুনে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে খেলতে থাকলেও ওপেনার হেনরি নিকোলস ব্যক্তিগত ৮ রানে বেহরেনডর্ফের বলে আউট হলে দশম ওভারে দলীয় ২৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।
কিছুক্ষণ পর আবারও কিউই শিবিরে আঘাত হানেন বেহরেনডর্ফ। এবার ৪৩ বলে ২০ রান করা আরেক ওপেনার মার্টিন গাপটিল আউট হলে দলের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪২। তবে তিন এবং চার নম্বরে নামা উইলয়ামসন এবং রস টেইলর শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন। জুটিবদ্ধভাবে তারা ৫৫ রান যোগ করার পর শুরু হয় স্টার্কের তান্ডব।
৫১ রানে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ রান করা উইলিয়ামসনকে প্রথম শিকার বানান টুর্নামেন্টে দ্বিতীয়বারের মত ৫ উইকেট শিকার করা স্টার্ক। অধিনায়ক উইলিয়ামসনের বিদায়ে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৯৭/৩। এরপরই চতুর্থ উইকেট হিসেবে আউট হন অভিজ্ঞ টেইলর।
প্যাট কামিন্সের শিকার হওয়ার আগে ৫৪ বলে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন অভিজ্ঞ টেইলর। এরপর টম লাথাম (১৪), নিশাম (৯), স্যান্টনার (১২), সোধি (৫) এবং ফার্গুসন (০) সকলেই স্টার্কের শিকার হলে ৪৩.৪ ওভারে ১৫৭ রানে থেমে যায় নিউজিল্যান্ড ইংনিস।
ICC World Cup 2019 point table after 37 matches #CWC19 pic.twitter.com/zS6oYiKMhV
— Sportsmail24.com (@sportsmail24) June 30, 2019
২৬ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন এ পেসার। ২৪ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ শিকারী স্টার্ক। এ ছাড়া বেহরেনডর্ফ ৩১ রানে নেন ২ উইকেট।
এর আগে উসমান খাজা ও ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া এ্যলেক্স ক্যারির জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪৩ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট শিকার করেছেন হ্যাট্রিকসহ ৪ উইকেট।
ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো করতে পারেননি ফর্মে থাকা দুই ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই দলীয় ১৫ ও ব্যক্তিগত ৮ রানে বোল্টের এলবিডব্লুর শিকার হন অ্যারন ফিঞ্চ। এরপর তিন নম্বরে নামা খাজার সঙ্গে জুটি বাঁধেন আরেক ওপেনার গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড ওয়ার্নার। কিন্তু বেশি সময় টিকতে পারেননি ওয়ার্নার।
দশম ওভারে দলীয় ৩৮ রানেই বিদায় নেয় ওয়ার্নার। লোকি ফার্গুসনের প্রথম শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ২৩ বলে ১৬ রান করেন ওয়ার্নার। এরপর খাজার সঙ্গে জুটি বাঁধেন সাবেক অধিনায়ক। কিন্তু ব্যক্তিগত ৫ রানে ফার্গুসনের দ্বিতীয় শিকার হলে ৪৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা অসিরা।
এরপর মার্কাস স্টয়নিস ২১ রান করে শিকার হন জেমস নিশামের। একপ্রান্ত দিয়ে সতীর্থরা আসা-যাওয়ার মিছিলেন সামিল হলেও আরেক প্রান্তে অবিচল ছিলেন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে নামা খাজা। স্টয়নিসের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটি গড়েন তিনি। স্টয়নিস বিদায় নিলে গ্লেন ম্যাক্সয়েল রানের খাতা খেলার আগেই নিশামের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হলে ২১তম ওভারে দলীয় ৯২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় অসিরা।
এমন অবস্থায় স্বল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সামনে। তবে সেটা হদে দেননি খাজা-ক্যারি। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১০৭ বলে ১০৭ রান যোগ করে দলকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যান তারা। ৭২ বল মোকাবেলায় ৭১ রান করে অকেশনাল বোলার কেন উইলিয়ামসনের শিকার হয়ে ক্যারি আউট হলে ১৯৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
তখনো এক প্রান্ত আগলে রাখেন খাজা। ৪৩ তম ওভারের শেষ বলে বোল্টের শিকার হয়ে ৮৮ রান করা খাজা বিদায় নিলে ২৪৩ রানে সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে। অপর প্রান্তে ১৯ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন প্যাট কামিন্স। খাজার পর মিচেল স্টার্ক ওজেসন বেহরেনডর্ফকে শূন্য রানে আউট করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বোল্ট। ১০ ওভারে ৪১ রানে ৪ উইকেট নেন বোল্ট। নিশাম ও ফার্গুসন নেন ২টি করে উইকেট।