বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের খেলার পথে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নামা পাকিস্তানকে ২২৮ রানের টার্গেট দিয়েছে বিদায়ের ঘণ্টার বাজা আফগানিস্তান।
শনিবার (২৯ জুন) দিনের প্রথম ও টুর্নামেন্টের ৩৬তম ম্যাচে প্রথমে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। ফলে বল হাতের মাঠে নামে পাকিস্তান।
প্রথমে ব্যাট করা আফগানিস্তান ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান সংগ্রহ করেছে। ফলে এ ম্যাচ জিতে মেসির আশা বাঁচিয়ে রাখতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এখন ২২৮ রান করতে হবে।
লিডসে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমত শাহ ও অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। প্রথম ২৭ বল থেকে সমান ২৭ রান তুলে ফেলেন তারা। তবে বিপত্তি ঘটে ২৮ ও ২৯তম বলে, অর্থাৎ পঞ্চম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম ডেলিভারিতে।
নিজের প্রথম ওভারের দুই ডেলিভারিতে পরপর দু’টি উইকেট তুলে নেন পাকিস্তানের বাঁ-হাতি পেসার শাহিন আফ্রিদি। নাইব ১৫ ও তিন নম্বরে নামা হাসমতউল্লাহ শাহিদি ডাক মারলে ২৭ রানে দুই উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
এরপর ৩০ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কাটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন রহমত ও চার নম্বরে নামা উইকেটরক্ষক ইকরাম আলি খিল। সামাল দেওয়ার কাজটা ভালোই করছিলেন তারা। তবে তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান পাকিস্তানের স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম। ৫টি চারে ৪৩ বলে ৩৫ রান করা রহমতকে আউট করেন ইমাদ। ৫৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আফগানরা।
এ অবস্থায় দলের হাল ধরেন আলি খিল ও সাবেক অধিনায়ক আসগর আফগান। পাকিস্তানের বোলাররা আরও চেপে ধরতে পারে জেনে ব্যাট হাতে নেমেই মারমুখী হয়ে ওঠেন আসগর। প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর ব্যাট হাতে চড়াও হন তিনি। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় পাকিস্তানের বোলারদের লাইন-লেন্থহীন করে দেন আসগর। ফলে দ্রুত গতিতেই আফগানিস্তানের স্কোর বোর্ডে জড়ো হতে থাকে রান।
আফগান মারমুখী মেজাজে থাকলেও অপরপ্রান্তে খুবই ধীর গতিতে ছিলেন আলি খিল। তবে ২৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আফগানকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে খেলায় ফেরার পথ দেখান পাকিস্তানের লেগ-স্পিনার শাদাব খান। পরের ওভারে আবারও উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এবার আলি খিলকে শিকার করেন ইমাদ। আসগর ৩৫ বলে ৪২ ও আলি খিল ১টি চারে ৬৬ বলে ২৪ রান করেন। চতুর্থ উইকেটে আলিখিল-আসগর ৮০ বলে ৬৪ রান যোগ করেন।
১২৫ রানে ৫ উইকেট হারানো আফগানিস্তান পরবর্তীতে খেলায় ফেরার পথ খুঁজতে শুরু করে। সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী ও নাজিবুল্লাহ জাদরানের ব্যাটে রানের চাকা সচল হয় আফগানিস্তানের। ৩৬ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৪ রানে পৌঁছে যায় আফগানিস্তানের রান। এ অবস্থায় লড়াকু সংগ্রহের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে আফগানিস্তান।
৩৭তম ওভারের চতুর্থ বলে এ জুটিতে ভাঙন ধরান পাকিস্তানের বাঁ-হাতি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। ৩৩ বলে ১৬ রান করে রিয়াজের প্রথম শিকর হন নবী। তবে আফগানিস্তানের আশার আলো হয়ে ছিলেন জাদরান। সাথে পেয়েছিলেন ৮ নম্বরে নামা সামিউল্লাহ শিনওয়ারিকে। বড় জুটির গড়ার চেষ্টা করেন জাদরান-শিনওয়ারি। তাতে আফগানিস্তানের স্কোর ২শ অতিক্রম করে।
দলীয় ২০২ রানে এ জুটিকে থামিয়ে দেন আফ্রিদি। ৬টি চারে ৫৪ বলে ৪২ রান করা জাদরানকে বোল্ড করেন আফ্রিদি। শিনওয়ারির সাথে সপ্তম উইকেটে ৩৫ রান দলকে উপহার দেন জাদরান।
৪৫তম ওভারে ২০২ রানে সপ্তম উইকেট হারানোর পর আফগানিস্তানের সম্মানজনক স্কোরের পথ কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু শেষ দিকে শিনওয়ারির ৩২ বলে অপরাজিত ১৯ রানের কল্যাণে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৭ রানের সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান। পাকিস্তানের আফ্রিদি ১০ ওভারে ৪৭ রানে ৪ উইকেট নেন।