দ্বাদশ বিশ্বকাপে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে সাউদাম্পটনে আফগানিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের জয়ে প্রধান ভূমিকা রাখেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে ৬৯ বলে ৫১ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ২৯ রানে ৫ উইকেট নেন সাকিব।
ম্যাচ সেরা সাকিবের নৈপুণ্যে এই জয়ে সেমিফাইনালে যাবার লড়াইয়ে ভালোভাবে টিকে আছে বাংলাদেশ। তারপরও শেষ দু’ম্যাচে তো জিততেই হবে বাংলাদেশকে। সেই সাথে অনেক সমীকরণের হিসাবেও বসতে হবে টাইগারদের। এমনটা বেশ ভালো জানেন সাকিব নিজেও।
ম্যাচ জয়ের পর সংবাদ সম্মেলন শেষে সাকিব বলেন, ‘ইংল্যান্ডের আরও তিনটি ম্যাচ আছে। তাদের দরকার মাত্র ১ জয়। আমাদের দুটি ম্যাচ আছে। আমাদেরকে দু’টিই জিততে হবে। সমীকরণটা বেশে কঠিন। কিন্তু ক্রিকেটে যে কোনো কিছু হতে পারে। তবে এই মুহূর্তে আমরা নিজেদের নিয়েই বেশি চিন্তা করতে চাই।’
লিগ পর্বে বাংলাদেশের শেষ দু’টি ম্যাচ ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। দু’টি ম্যাচেই কঠিন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের বলে মনে করেন সাকিব, ‘সামনে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আমাদের। ভারত আমাদের পরবর্তী প্রতিপক্ষ। দল হিসেবে অনেক শক্তিশালী ভারত। পাকিস্তানও ভালো দল। আশা করছি, আমরা সেরা ক্রিকেকটা খেলতে পারব।’
চলমান বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন সাকিব। ব্যাট হাতে রান ও বল হাতে উইকেট শিকার করেছেন তিনি। তার অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে ভালো খেলতে সহায়তা করছে বলে জানান তিনি, ‘আমার অভিজ্ঞতা আমাকে সহায়তা করছে। তারপরও সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে যদি আমরা ভারত ও পাকিস্তানকে হারাতে চাই। তাদের এমন কিছু খেলোয়াড় আছে যারা একাই ম্যাচ শেষ করতে পারে। আমাদেরকে সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে এবং আমি বিশ্বাস করি আমরা সেই সামর্থ্য রাখি।’
বাংলাদেশের তিন জয়েই প্রধান ভূমিকা ছিলো সাকিবের। দলকে একাই জয় এনে দেন তিনি। তাই ওয়ানম্যান শো, সাকিব শো-ই কি চলছে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচে এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘মুশফিকের ইনিংসটা, রিয়াদ ভাইয়ের অবদান, তামিম ও মোসাদ্দেকের অবদান ব্যাটিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে এমন উইকেটে। এখন আমার সময়টা বেশিই ভালো যাচ্ছে। কিন্তু ওই অবদানগুলো না হলে দল কখনোই এমন ফল সম্ভব হতো না।’
নিজের পারফরম্যান্সে তৃপ্ত সাকিব। এটিও বলেছেন তিনি, ‘অনেক সন্তুষ্ট। আমার জন্য এমন পারফরমেন্স দরকার ছিল। দলের জন্যও। ভাগ্য আমাকে সহায়তা করছে। আমি প্রতিনিয়ত রান করছি। খুব খুশি যেভাবে টুর্নামেন্ট যাচ্ছে।’
আফগানিস্তানের টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেয়াতে বিস্মিত হন সাকিব। সেই সাথে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪০ হলেই ম্যাচ জয় সম্ভব বলে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন সাকিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম টস জিতবে তারা ব্যাটিং নিবে। কিন্তু তাদের পরিকল্পনা ভিন্ন ছিল। সত্যি বলতে, আমরা জানতাম আমাদের প্রয়োজনীয় রান বোর্ডে আছে। এটা এমন উইকেট নয় যেখানে ৩০০-৩৫০ রান করা সম্ভব। আবার তাদের বোলিং অ্যাটাক ভালো। তিনজন ভালো মানের স্পিনার আছে। আমরা ওদেরকে ভালোভাবে সামলে নিতে পারায় ২৬০ রান করতে পেরেছি। আমাদের টার্গেট ছিল পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করে ২৪০ রান করা। এই রানের থেকে যদি বেশি রান করি তাহলে সেটা হবে বোনাস। আমরা প্রত্যাশার চেয়ে ২৫ রান বেশি করেছি। সেটা আমাদেরকে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।’
যেভাবে একের পর এক রেকর্ড করছেন সাকিব। এখনই কি নিজেকে কিংবদন্তি ভাবছেন সাকিব? তিনি বলেন, ‘আমি কি করে বলতে পারব? এটা তো আপনারা বলতে পারবেন। এগুলো নিয়ে কখনো চিন্তা করি না আমি।’