কিংবদন্তী ক্লাইভ লয়েডের মতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে প্রচুর মেধাবী রয়েছে। তাদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনার জন্য প্রয়োজন কৌশলের পরিবর্তন।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে চলতি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে এখন পর্যন্ত ছয়টি ম্যাচ খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তার মধ্যে শুধুমাত্র একটি ম্যাচে জয়লাভ করেছে তারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছিল ক্যারিবীয় দলটি। ফলে ১০ জাতির এই টুর্নামেন্টের পয়েন্ট তালিকায় অস্টম অবস্থানে রয়েছে জেসন হোল্ডারের দল।
টুর্নামেন্টে অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থান নিশ্চিত করতে হলে পরের ম্যাচগুলোতে আর হারলে চলবে না। শুক্রবার ম্যানচেস্টারে ভারতের মোকাবেলা করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর তাদের লড়তে হবে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে (আইসিসি) লেখা নিজের কলামে লয়েড বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ হতে পারতো সেরা দলগুলোর একটি। তাদের দলে সে রকম মেধাবী ক্রিকেটার রয়েছে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে পার্থক্য হচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বড় স্কোর গড়তে পারছে না। ম্যাচ জয়ের জন্য যে ফিনিশিং দরকার তা করতে পারছে না।’
১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম দুটি বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দেওয়া গায়নায় জন্ম গ্রহণকারী এ অধিনায়ক বলেন, নিউজিল্যান্ডের কাছে মাত্র ৫ রানের পরাজয়টিই তার যুক্তির স্বপক্ষে উৎকৃষ্ট উদাহারণ।
ক্যারিবীয় দলটি দারুণ সূচনা করতে পারলেও টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় বেশি দূর এগুতে পারে না। তবে ব্যতিক্রম ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অল রাউন্ডার কার্লোস ব্রাথওয়াইটের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ওই কারণেই ম্যাচটি ক্লোজ করতে পেরেছিল তারা। ৮ উইকেটে করেছিল ২৯১ রান।
তাদের এমন আচরণের সমালোচনা করেছিলেন কিংবদন্তী ফাস্ট বোলার মাইকেল হোল্ডিংও। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচ চলাকালে ধারাভাষ্যকারের দায়িত্বপালনরত হোল্ডিং বলেন, ‘তাদের মধ্যে প্রতিরোধের ঘাটতি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘দলের কিছু কিছু টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের মানসিকতা হচ্ছে ৮০ রানের উপর পৌঁছাতে পারলেই তাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে গেছে মনে করেন। দলের অন্য সদস্যরা বাকি কাজ করবেন।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোল্ডিংয়ের জ্যামাইকান তারকা ক্রিস গেইল করেছিলেন ৮৭ রান। কিন্তু ২৪তম ওভারেই আউট হয়ে যান তিনি। ফলে ১৫২ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
লয়েডের মতে তার সাবেক দলটির যদি কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের মত একজন খেলোয়াড় থাকতো, তাহলে তারা ইংল্যান্ডের মাটিতে আরও কয়েকটি ম্যাচে জয়লাভ করতে পারতো। টুর্নামেন্টে ব্র্যাথওয়েট ছাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজের অন্তত ৬ জন ব্যাটসম্যান ৫০ এর বেশি রান করেছেন। বিষয়টিকে সামনে এনে লয়েড বলেন, ক্যারিবীয় যে সকল ব্যাটসম্যান ৫০, ৬০, ৭০ কিংবা ৮০ রান করেছিল, তারা যদি সেটিকে শতকে পরিণত করতে পারতো, তাহলে দল আরও ভালো অবস্থানে থাকতো।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে প্রয়োজনীয় রান রেট খুব একটা বেশি ছিল না। এটা চেজ করার মতই ছিল। এ জন্য বড় কোন শট খেলারও প্রয়োজন ছিল না। তিনি বলেন, আশা করি ভুলগুলো থেকে তারা শিক্ষা নেবে এবং সেগুলো সংশোধন করার চেষ্টা করবে। কারণ, তাদের প্রচুর মেধাবী ক্রিকেটার রয়েছে।