স্বাগতিকদের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জয়ে বিশ্বকাপ হঠাৎ জমে উঠল। ইংল্যান্ডকে ২০ রানে হারিয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিকদের হারে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আশা বেঁচে থাকল বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের।
শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যাওয়ায় ৬ ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট এখন ৮। টুর্নামেন্টের টপ ফেবারিট ইংল্যান্ড অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে গেছে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার কাছে। যাদেরকে এবারের টুর্নামেন্টের অন্যতম দুর্বল দল ভাবা হচ্ছে।
এই দুই ম্যাচ হেরে ইংল্যান্ড ৬ ম্যাচে মোট ৮ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে টেবিলের তিন নম্বর স্থানে। ৬ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কোনো ম্যাচ না হারা নিউজিল্যান্ডের ৫ ম্যাচে অর্জন ৯ পয়েন্ট। তারা দ্বিতীয় স্থানে।
ইংল্যান্ডের দুশ্চিন্তা বাড়াবে ইতিহাস। সেই কবে ১৯৯২ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে। এরপর কোনো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালও খেলেনি তারা। ১৯৯২ এর বিশ্বকাপের পর তারা কখনো নিউজিল্যান্ড, ভারত কিংবা অস্ট্রেলিয়াকেও হারায়নি। এবার সেমিফাইনালে যেতে হলে এ তিন দলের বিপক্ষে সে ইতিহাস বদলাতে হবে।
শ্রীলঙ্কা এ নিয়ে ৬টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। পয়েন্ট ৬। জিতেছে দুটি, বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত দুটি এবং বাকি দুটিতে হার। ৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশও খেলেছে ৬ পয়েন্ট, পয়েন্ট ৫। জিতেছে ২টি, হেরেছে ৩টি এবং বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয়েছে ১টিতে।
এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪ ম্যাচ খেলেছে ভারত। কোনো পরাজয় নেই। একটি বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। ৭ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়েছে চার নম্বরে। এরপরই রয়েছে শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ যথাক্রমে ৬ এবং ৫ পয়েন্ট নিয়ে।
ইংল্যান্ডের সামনের তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং নিউজিল্যান্ড। তিন ম্যাচেই হারের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে ইংলিশদের। যদি তেমনটাই হয়, তাহলে তো টুর্নামেন্ট থেকে ইংল্যান্ডেরই বাদ পড়ার সম্ভাবনা বেশি। আরও একবার সেমিতে ওঠা হবে তাদের জন্য সুদুরপরাহত।
শুক্রবার (২১ জুন) যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইংল্যান্ড জিততে পারত, তাহলে তাদের পয়েন্ট হতো ১০, শ্রীলঙ্কার থেকে যেতো ৪। তাতে, পয়েন্ট টেবিলে শেষ পর্যন্ত এতটা ওলট-পালট হওয়ার শঙ্কা তৈরি হতো না।
শ্রীলঙ্কার সামনের তিন প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ভারত। এই তিন ম্যাচের যে কোন একটিতেও যদি লঙ্কানরা জিতে যায়, তাহলে তাদের পয়েন্ট হয়ে যাবে ৮, দুটিতে জিতলে হবে ১০। ভারতের বিপক্ষে তাদের জয় ধরা যাবে না। আর যদি কোনোটাতেই না জিততে পারে, তাহলে থেকে যাবে ৬ পয়েন্টে।
৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা নিউজিল্যান্ডের আগামী তিন ম্যাচ পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। কোনো একটিতেও তারা যদি জিতে যায়, তাহলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত ধরে নেয়া যায় তাদের। যদি তিনটিতেই হেরে যায়, তাহলে কিউইদের জন্যও শেষ পর্যন্ত শঙ্কা রয়েছে সেমিতে ওঠার। অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের সেমিতে ওঠা হয়তো কেউ ঠেকাতে পারবে না শেষ পর্যন্ত। তবুও শেষ পর্যন্ত দেখা যাক, কি হয়!
সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়েই ইংল্যান্ড গেছে বাংলাদেশ দল। টাইগারদের হিসেবও ছিল, কাকে কাকে হারাবে, কার বিরুদ্ধে ভালো খেলার চেষ্টা করবে। সে হিসেবে শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দিয়ে লক্ষ্যের পথে ভালোই এগুতে শুরু করে তারা।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সামান্য হিসেবের ভুলে শেষ মুহূর্তে এসে জয় হাতছাড়া হয়ে যায়। কিন্তু যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় ধরে নিয়েছিল, সেই ম্যাচটি ভেসে গেলো বৃষ্টিতে। তাতেই মূলত বাংলাদেশ কিছুটা ব্যাকফুটে। তবুও ৩ ম্যাচ আছে হাতে। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং ভারত।
এর মধ্যে অন্তত ২টিতে জিততে হবে বাংলাদেশকে। তাহলে পয়েন্ট হয়ে যাবে ৯। যদি ৯ পয়েন্টই হয় টাইগারদের এবং রান রেট ভালো থাকে, তাহলে শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনাল ভাগ্যের সিকে ছিঁড়তেও পারে বাংলাদেশের।