আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা, মাঠে গড়াচ্ছে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১০টি শীর্ষ দেশ। ৩০ মে কেনিংটনের ওভালে শুরু হবে ক্রিকেটের সর্ববৃহৎ এ টুর্নামেন্ট। উদ্বোধনী ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্বাগতিক ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে ২ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) থেকে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যার অংশ হিসেবে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর অধিনায়কদের নিয়ে আয়োজন করা হয় ফটো শেসনের। সেখানে বিশ্বকাপ জয় নিয়ে মন্তব্য করেছেন অংশগ্রহণকারী দলের অধিনায়করা।
অ্যারন ফিঞ্চ (অস্ট্রেলিয়া)
বিগত কয়েক বছের ধরে ইংল্যান্ড দারুণ ফর্ম দেখিয়ে আসছে। সঙ্গে রয়েছে ভারত। তারাই হয়তো আসরে সেরা পারফর্মেন্স দেখাবে। সব দিক বিবেচনায় নিলে ইংল্যান্ডই শিরোপার জন্য ফেভারিট।
তবে আমি মনে করি বেশ কিছু খেলোয়াড় বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ এবং আমার দলের ছয়জনের বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা আছে। তারা আরেকবার শিরোপার দিকে দলকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করবে। তবে এটি হচ্ছে ভিন্ন ধাচের টুর্নামেন্ট। একবার আপনি পিছিয়ে পড়লে প্রচন্ড চাপে পড়তে হবে। সুতরাং এটা হবে অসাধারণ একটা টুর্নামেন্ট।
ইয়ান মরগান (ইংল্যান্ড)
কারা শিরোপা জিতবে সে বিষয়ে আমার কোন ধারণা নেই। আমি এককভাবে কোন দলকেই শিরোপা জয়ের জন্য ফেভারিট বলতে চাই না। বিশ্ব সেরা দশটি দল বিশ্বকাপে ১০টি দল অংশ নিচ্ছে। সুতরাং এটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে। আশা করছি, মানসম্পন্ন কিছু খেলা দেখতে পাব। আমরাও এই টুর্নামেন্টে খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।
যে কোন টুর্নামেন্টে অবশ্যই স্বাগতিক দল একটি বিষয়। এর কারণ হিসেবে হোম সুবিধাকে দেখানো হয়ে তাকে। মাঠে আমরা আমাদের পরিবারের বিপুল সংখ্যক সদস্যকে দেখতে পাব। সে জন্য কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। ক্রিকেট খেলার জন্য ইংল্যান্ড হচ্ছে অসাধারণ একটি জায়গা। আপনি খেলোয়াড়দের জিজ্ঞেস করলে তাদের অধিকাংশই বলবে তারা এখানে এসে খেলাকে বেশি পছন্দ করেন।
বিরাট কোহলি (ভারত)
আমরা যেখানেই খেলি না কেন, সমর্থকদের প্রবল চাপ থাকে আমাদের উপর। তবে অ্যারনের সঙ্গে আমিও একমত। সম্ভবত ইংল্যান্ডই ফেভারিট। নিজ কন্ডিশনের কারণেও তারা টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দল। তবে এটিও বলব যে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া ১০টি দলই ভারসাম্যপূর্ণ ও শক্তিশালী।
একই সঙ্গে এটি এমন একটি টুর্নামেন্ট যেখানে সবাই চেষ্টা করে নিজের সেরাটা দিয়ে সফলতা অর্জনের। যে কারণে টুর্নামেন্টটি আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। আর দর্শকরাও সে কারণে বিশ্বকাপ দেখার জন্য মুখিয়ে তাকে।
সরফরাজ আহমেদ (পাকিস্তান)
মরগান ও কোহলির মত আমিও মনে করি সবগুলো দলই ভারসাম্যপূর্ণ। সবাই ভালো দল। তাই সবার জন্যই আমার শুভ কামনা। আশা করি মানুষ এখানে অসাধারণ কিছু খেলা উপভোগ করতে পারবে।
ইংল্যান্ডে পাকিস্তানের অতীত রের্ড খুবই ভালো। ১৯৯২ সালের টেস্ট সিরিজ, ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ই প্রমাণ করে ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তান খুব ভালো করে। তাই আমরা বেশ আত্মবিশ্বাসী। ইনশাল্লাহ আমরা ভালো করব।
দিমুথ করুনারত্নে (শ্রীলঙ্কা)
ইংল্যন্ডের মাটিতে আমরা খুবই ভালো ক্রিকেট খেলেছি। দলেরও ভালো অভিজ্ঞতা আছে। সুতরাং আমরা ভালো করার চেষ্টা করব। এখনকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে আমরা কিছুটা আগেই এখানে এসেছি। আমাদের অবস্থাও ভালো এবং আশা করি নিজেদের সেরাটা দিতে পারব।
কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড)
আমাদের দলে খুব কম সংখ্যক খেলোয়াড় আছে যারা আগের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিল। যেখান থেকে তারা অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করেছে। তবে চার বছরের ব্যবধানে বেশকিছু নতুন খেলোয়াড়ের আগমন ঘটেছে।
শিরোপার বিষয়ে বলতে গেলে র্যাংকিং, ফেভারিট, আন্ডারডগসহ অনেক কিছু নিয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে। আমার মনে হয় একটি দলের ভারসাম্যের উপর নির্ভর করছে তাদের সফলতা। সেই সঙ্গে দিনটি নিজেদের হতে হবে। নিজেদের দিনে সব দলই যে কোন কিছু ঘটাতে পারে।
ফাফ ডু-প্লেসিস (দক্ষিণ আফ্রিকা)
আপনি যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন সাম্প্রতিক সময়ে ম্যাচগুলো হয়েছে খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে। সেটি ঘরের মাঠে হোক কিংবা বাইরে। সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বাগতিক দলকে আধিপত্য বিস্তার করতে দেখা যায়নি। সতরাং অন্যদের মত আমিও বলব সবাই এই টুর্নামেন্টে নিজেদের উজার করে দিতে মুখিয়ে আছে। মনে হয় অসাধারণ একটি টুর্নামেন্ট অপেক্ষা করছে।
মাশরাফি বিন মর্তুজা (বাংলাদেশ)
আমাদের দলটি অভিজ্ঞ ও অনভিজ্ঞদের সমন্বয়ে গড়া। সম্ভবত অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় ভালো। দলে কিছু উদীয়মান তরুণ ভালো খেলোয়াড় যুক্ত হয়েছে। তাদেরকে নিয়ে আমরা আগামীর যাত্রায় খুবই রোমাঞ্চ অনুভব করছি।
জেসন হোল্ডার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
আমাদের কাছে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সবগুলো দলই অসাধারণ। এখানে অংশগ্রহণের জন্য কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে আমাদের লড়াই করতে হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দল খেলছে এ আসরে। আমরা তাদের মোকাবেলা করতে চাই। যে দলটি শিরোপা জিতবে, অবশ্যই যোগ্য হিসেবেই জিতবে।
গুলবাদিন নাইব (আফগানিস্তান)
আফিগানিস্তানে এখন শান্তি ফিরে এসেছে। যে কারণে সেখানকার বিপুলসংখ্যক জনসংখ্যা ক্রিকেটে যুক্ত হয়েছে। বিপুল দর্শক উপস্থিতিতে মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছি। বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দল এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে। এখানে আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমরা গর্বিত।