২০১১ সালের বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ অলআউট হয়ে গেছিলো বাংলাদেশ। এটিই বিশ্বকাপে বাংলাদেশে সর্বনিম্ন স্কোর। এখন আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের তো দল যে বাংলাদেশের কাছে কিছুই না, সেটাই ফের আসন্ন বিশ্বকাপেরর আগের প্রমাণ করলো বাংলাদেশ।
ডাবলিনে সোমবার আগে ব্যাট করে ২৪৮ রানের লক্ষ্য দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৪৮ রানে যে এই বাংলাদেশের জন্য কিছুই না, সেটা আগে থেকেই আচঁ করা যাচ্ছিলো।
বাংলাদেশের দুই ওপেনার শুরুটাও করে দুর্দান্ত। তামিম-সৌম্যের দুর্দান্ত এ জুটি থামে ৫৪ রানে। নার্সের বলে আউট হয়ে ২১ রানে ফিরেন তামিম।
সৌম্যকে সাথে নিয়ে বড় জুটির দিকে এগোতে থাকেন সাকিব। তবে সেই জুটি ৫২ রানে আটকে দেয় নার্স। এ সময় বাংলাদেশ শিবিরে যেন নার্স ভীতি ডুকে পড়ে। নার্সের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাকিব ফিরেন ২৯ রানে।
সাকিব যখন ফেরার পর পরই নার্সের একই ওভারে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন সৌম্য। তবে তিনি তুলে নেন অর্ধশতক। তিনি ৬৭ বলে ৫৪ রান তোলেন।
এরপর উইকেটে নামেন দুই নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিথুন। হয়তো ম্যাচটির মোড় ঘুরে যেতে পারতো। কিন্তু ২৪ তম ওভারে নতুন জীব পান মিথুন। ফলে মুশফিক ও মিথুন লম্বা এক জুটি গড়েন।
এ জুটিই হয়তো ম্যাচ শেষ করে ফেলতো। কিন্তু কেমার রোচের বলে ক্যাচ দিয়ে ৬৩ রান করে ফিরেন মুশফিক। ভেঙে যায় ৮৩ রানে জুটি।
মুশফিক ফিরে গেলে মাহমুদুল্লাহকে সাথে নিয়ে মিথুন ফের জুটি। তবে ৪৩ রানে সাজঘরে ফিরেন মিথুন। পরে মাহমুদুল্লাহ-সাব্বিরের জুটিই বাংলাদেশকে জয় উপহার দেয়।
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় স্কোর তিন অঙ্কের ঘরে যাওয়ার আগেই ৪ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ওভারে উইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মাশরাফি মুর্তজা। তার তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে সুনীল অ্যামব্রিসকে স্লিপে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানান। ১৯ বলে চারটি চারে ২৩ রান করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার। হোপের সঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছে ৩৭ রানে।
এরপর দশম ওভারে মাশরাফির তৃতীয় বলে ড্যারেন ব্রাভোর দুর্বল শট পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ধরতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। পরের ওভারে বল হাতে নেন এই স্পিনার এবং তৃতীয় বলে ব্রাভোকে ৬ রানে এলবিডাব্লিউ করেন।
মোস্তাফিজ তার দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে রোস্টন চেজকে ১৯ রানে ফেরান। মাহমুদউল্লাহ মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ ধরেন। জোনাথান কার্টারকে নিজের চতুর্থ ওভারে দ্বিতীয় শিকার বানান মোস্তাফিজ। ৩ রানে এলবিডাব্লিউ হন উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান।
৯৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকেন হোপ। হাফসেঞ্চুরি করার পথে হোল্ডারের সঙ্গে শক্ত জুটি গড়েন এই ওপেনার। কিন্তু তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি তিনি।
অধিনায়কের সঙ্গে ১০০ রানের জুটি গড়ে মাশরাফির শিকার হন হোপ।
১০৮ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৮৭ রান করেন তিনি। পরের ওভারে মাশরাফি একইভাবে আউট করেন হোল্ডারকে। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ৬২ রানে ফিরে যান।
পরের ওভারে আরও একটি উইকেট হারায় উইন্ডিজ। সাকিব আল হাসান তার শেষ ওভারে পান প্রথম উইকেট। ৭ রানে ফ্যাবিয়ান অ্যালেনকে এলবিডাব্লিউ করেন বাঁহাতি স্পিনার।
মোস্তাফিজ ৪৯তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন। অ্যাশলে নার্স ১৪ রানে সাব্বির রহমানের ক্যাচ হন দ্বিতীয় বলে। তিন বল পর তার চতুর্থ শিকার হন রেমন রেইফার। ৭ রানে এলবিডাব্লিউ হন তিনি।
৯ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিং করেন। তিন উইকেট নেন মাশরাফি। অভিষেক ওয়ানডেতে ৯ ওভার বল করে ৫৬ রান দিয়ে খালি হাতে ফিরেছেন আবু জায়েদ রাহী।