অনূর্ধ্ব-১৯ দলের তরুণ ওপেনার ও ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের নবাগত দল উত্তরা স্পোটিং ক্লাবের তানজিদ হাসানের অনবদ্য সেঞ্চুরির কাছে লজ্জাজনক হার মানতে বাধ্য হলো ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব।
তানজিদের অপরাজিত ১০১ রানের সুবাদে আজ সপ্তম রাউন্ডে উত্তরা ৭ উইকেটে হারিয়েছে মোহামেডানকে। এবারের আসরে এটি দ্বিতীয় জয় উত্তরার। ফলে ৭ খেলায় ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের এগারতম স্থানে উঠে এলো উত্তরা। ২ পয়েন্ট নিয়ে উত্তরার পরই টেবিলের তলানিতে আছে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি।
অপরদিকে, উত্তরার কাছে হেরে ৭ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে থাকলো মোহামেডান।
সাভারের চার নম্বর মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় উত্তরা। ব্যাটিং-এ নেমে উপরের সারির প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের ছোট ছোট ইনিংসে দলীয় স্কোর হাফ-সেঞ্চুরি পেরিয়ে যায় মোহামেডানের। এ অবস্থায় ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থতা প্রদর্শন করেন ইনফর্ম ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক রকিবুল হাসান। মাত্র ৮ রানে আউট হন তিনি।
দলীয় ৬৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল ও নাদিফ চৌধুরি। বড় জুটির পথেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। জুটিতে অর্ধশতকও পূর্ণ করেন অ্যাশ ও নাদিফ। তবে জুটিতে ৬২ রানের বেশি করতে পারেননি তারা। আশরাফুলের বিদায়ে ভেঙ্গে যায় পঞ্চম জুটি। ২টি চারে ৫৮ বলে ২৮ রান করেন আশরাফুল।
আশরাফুলের মত ভালো শুরু করে বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন নাদিফও। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৫ বলে ৩৯ রান করেন নাদিফ। তাদের বিদায়ের সাথে শ্রীলংকার চতুরঙ্গা ডি সিলভা ও সোহাগ গাজী দ্রুত ফিরলে ১৬০-১৭০ রানের মধ্যে গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়ে মোহামেডান। কিন্তু সেটি হতে দেননি নবম ও দশম ব্যাটসম্যান।
শফিউল ইসলামের ২৯ ও কাজী অনিকের ১৪ রানের কল্যাণে ২শ রানের কোটা স্পর্শ করার স্বপ্ন দেখে মোহামেডান। কিন্তু ৪৫ ও ৪৬তম ওভারে শেষ দুই উইকেট হারিয়ে ২৯ বল বাকী রেখেই ১৯৩ রানে গুটিয়ে যায় মোহামেডান। উত্তরার আব্দুর রশিদ ও আসাদুজ্জামান পায়েল ৩টি করে উইকেট নেন।
এবারের লিগে দ্বিতীয় জয়ের জন্য ১৯৪ রানের লক্ষ্য পায় উত্তরা। লক্ষ্য পূরণের যাত্রাটা দারুণ করেন উত্তরার দুই ওপেনার তানজিদ ও আনিসুল ইসলাম ইমন। ৮০ বলে ৮৪ রানের জুটি গড়েন তারা। ৩৭ রান করে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ইমন। তার বিদায়ে উইকেটে গিয়ে ১ রানে আউট হন জনি তালুকদার।
এতে ভড়কে যাননি অন্যপ্রান্তে থাকা তানজিদ। অধিনায়ক মোহিমেনুল খানকে নিয়ে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে থাকেন হাফ-সেঞ্চুরিতে থাকা তানজিদ। অধিনায়কের সাথে ৫৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে রাখেন তানজিদ। এরপর উইকেটরক্ষক শাকির হোসেনকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৪৯ রানের জুটি গড়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তানজিদই।
তানজিদ ১০টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১২০ বলে অপরাজিত ১০১ রান করেন। শাকির ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। এবারের লিগ দিয়ে লিস্ট ‘এ’তে অভিষেক হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি করেই ম্যাচ সেরা হলেন তানজিদ।